ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী সংলাপে বসতে যাচ্ছেন ॥ আইনমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ৩১ অক্টোবর ২০১৮

গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী সংলাপে বসতে যাচ্ছেন ॥ আইনমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিদেশী কোন চাপে নয়, গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে বসতে যাচ্ছেন। সংলাপের জন্য ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছেন, তার জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন অনেক ত্যাগের বিনিময়ে গণতন্ত্র অর্জিত হয়েছে। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতার জন্য সংবিধান সম্মত যে কোন আলোচনার ব্যাপারে তার দ্বার সর্বদা খোলা আছে। এতেই বোঝা যায় কোন বৈদেশিক চাপে সংলাপ হচ্ছে না। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে পারবেন কি পারবেন না, তা আদালতই সিদ্ধান্ত দেবে। মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার চাঁদমারী এলাকায় জেলা রেজিস্ট্রার নব নির্মিত ভবনের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ নিবন্ধনের মহাপরিদর্শক ড. খান মোঃ আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের নজরুল ইসলাম বাবু, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য হোসনে আরা বাবলী, জেলা প্রশাসক রাব্বি মিয়া ও জেলা রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার প্রমুখ। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আত্মমর্যাদাশীল একজন ব্যক্তিত্ব, বাংলাদেশকে তিনি একটি মর্যাদার আসনে বসিয়েছেন। তিনি কোন বিদেশী চাপে নত হওয়ার মতো মানুষ না। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে কোন রাজনৈতিক সমস্যা নেই। সংবিধান মতো দেশ চলছে। সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষায় যে কাজ করা দরকার সরকার তা করে যাবে। খালেদা জিয়ার সাজা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, সংবিধানে বলা আছে কোন ব্যক্তির যদি নৈতিক স্খলনের জন্য দুই বছরের বেশি সাজা হয় তবে তিনি সাজা খাটার পর আরও পাঁচ বছর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। কিন্তু এই ব্যাপারে সুপ্রীমকোর্ট অব বাংলাদেশে দুটি রায় আছে। একটি রায়ে বলা আছে যদি আপীল বিভাগের আবেদনের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত সাজা স্থগিত করে তবে তিনি নির্বাচন করতে পারবেন। আরেকটি বিভক্ত রায় আছে, একজন বিচারক বলেছেন নির্বাচন করতে পারবেন, আরেকজন বলেছেন পারবেন না। তিনি বলেন, সকল আইনের উর্ধে হচ্ছে সংবিধান। আমার মনে হয় আদালতই সিদ্ধান্ত দেবেন তিনি নির্বাচন করতে পারবেন কি পারবেন না। আইমন্ত্রী বলেন, ঐক্যজোট (ঐক্যফ্রন্ট) বলে একটি জোট হয়েছে। খুব ভালো কথা। গণতান্ত্রিক দেশে রাজনৈতিক অধিকার সকলের আছে, রাজনীতি করার সকলের অধিকার আছে। এই ঐক্যফ্রট যারা করেছেন তাদের ইতিহাসও জনগণের কাছে আছে, তারা কিসে বিশ্বাস করে, তারা কোন নীতিতে বিশ্বাস করে। তারা দিনের বেলা এক কথা বলে, রাতের বেলা আরেক কথা বলে। তাদের অতীত সেই সব সাক্ষী দেয়। তারপরেও তারা যখন বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার কাছে পত্র দিয়েছিলেন তারা সংলাপ চান। প্রধানমন্ত্রী সেই সংলাপের যে চাওয়া সেই চাওয়ার উত্তর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, অনেক রক্তের বিনিময়ে, অনেক ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতায় যে সংবিধান সম্মত রেখে আলোচনার ডাক আমার সর্বদা উন্মুক্ত। মন্ত্রী বলেন, রাজস্ব খাতে রেজিস্ট্রি অফিস প্রতিবছর কমপক্ষে ১৫ হাজার কোটি টাকা অর্জন করে সরকারের কোষাগারে জমা দিয়ে আসছে। কিন্তু এই রেজিস্ট্রিখাতকে অন্যান্য সরকার অবহেলা করেছে, এমনকি প্রাপ্ত মর্যাদাটুকু দেয়নি। তিনি বলেন, দলিল লেখকরা টিনের বেড়ার ঘরে মাটিতে পাটি বিছিয়ে অনেক কষ্টে দলিল লিখে সম্মাদন করেছেন। রেজিস্ট্রি ভবন তো দূরের কথা নিজস্ব কোন জমি ছিল না। নারায়ণগঞ্জও এর ব্যতিক্রম ছিল না। রেজিস্ট্রি অফিসের নিয়োজিত কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে ছিল হতাশা। কিন্তু বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এসব প্রতিকূল অবস্থা থেকে দেশের রেজিস্ট্রি অফিস অনেক দূর এগিয়েছে। দেশের প্রতিটি জেলায় সাবরেজিস্ট্রার বাংলাদেশ নিবন্ধন মহাপরিদর্শক অফিসের মাধ্যমে সরকার এই খাতে বৈপ্লবিক উন্নয়ন সাধন করেছে বলে মন্ত্রী মন্তব্য করেন।
×