ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মুহিতকে দিয়ে সিলেট ১ আসন নিশ্চিত করতে চায় আওয়ামী লীগ

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ৩১ অক্টোবর ২০১৮

মুহিতকে দিয়ে সিলেট ১ আসন নিশ্চিত করতে চায় আওয়ামী লীগ

সালাম মশরুর, সিলেট অফিস ॥ সিলেটে নির্বাচনী মাঠে আবারও মুহিত। সিলেট সদর আসন-১ থেকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত প্রার্থী হচ্ছেন এটা শনিবার থেকে আবারও আলোচনার টেবিলে চলে এসেছে। কিছুদিন ধরে তিনি নির্বাচন করতে অনিচ্ছা পোষণ করলেও শেষ পর্যন্ত তাকেই সিলেট-১ আসনে নির্বাচন করাবে আওয়ামী লীগ। শুক্রবার সিলেটের শাহী ঈদগাহ মাঠে বাণিজ্যমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন দলটির জ্যেষ্ঠ নেতা ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। বক্তব্যে তোফায়েল আহমেদ বলেন, সিলেট-১ আসন দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসন। এই আসনে যে দল জয়লাভ করে সে দলই সরকার গঠন করে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যাকে এ আসনে প্রার্থী করবেন আমার অনুরোধ তাকে আপনারা বিজয়ী করবেন। আর যেহেতু আওয়ামী লীগের একজন বড় নেতা, সিলেটের কৃতী সন্তান আবুল মাল আবদুল মুহিত এখানে আছেন আমার বিশ্বাস আপনারা তাকে কাছে টেনে নেবেন এবং তার সঙ্গে থাকবেন। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের মানুষ আর এদেশে জন্মাবে বলে আমার মনে হয় না। মেলার উদ্বোধন শেষে সভাস্থল ত্যাগ করার সময় সাংবাদিকরা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে সিলেট-১ আসনের ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা যা চাইবেন তাই হবে। এ সময় তোফায়েল আহমেদও একই উত্তর দেন। নির্বাচনের এই মুহূর্তে দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের এমন বক্তব্য আবুল মাল আবদুল মুহিতের নির্বাচনের দিকে যাত্রার লক্ষণ হিসেবেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। দেশের সংসদীয় নির্বাচনে সিলেটের আলাদা একটি অবস্থান রয়েছে। নির্বাচন বোদ্ধারা সিলেট-১ আসনকে মর্যাদার আসন হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন। স্বাধীনতা পরবর্তী কাল থেকে একটি প্রথা চালু রয়েছে। সিলেট-১ আসনে যে দল বিজয়ী হয়ে থাকে সে দলই সরকার গঠন করে থাকে। দীর্ঘ সময়ে এর ব্যত্যয় ঘটেনি। সে কারণে রাজনৈতিক দলগুলো এ আসনের গুরুত্ব বিবেচনা করে হেভিওয়েট প্রার্থীদের মনোনয়ন দিয়ে থাকে। সংসদ নির্বাচনসহ গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নেতারা হযরত শাহজালালের (র.) মাজার জিয়ারত করেই নির্বাচনী প্রচার কাজ শুরু করে থাকেন। বিভিন্ন সময়ে সিলেট-১ আসন থেকে নির্বাচিত প্রার্থীরা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্ব পেয়েছেন। বর্তমানে সিলেটের ৬টি আসনের মধ্যে ৪টিতে আওয়ামী লীগ ও ২টিতে জাতীয় পাটির সাংসদ রয়েছেন। এর পূর্বে ৬টি আসনেই ছিলেন আওয়ামী লীগের দখলে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টির মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে দুটি আসন ছেড়ে দেয়া হয়। নির্বাচনকে সামনে রেখে নড়েচড়ে বসেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং বর্তমান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও সাবেক বিরোধীদল বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতারা। সংসদীয় আসনগুলোতে প্রার্থিতা নির্ধারণ নিয়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীদের মধ্যে শুরু হয়েছে তোড়জোড়। সিলেট-১ আসনের প্রার্থী নিয়ে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলছে সরব আলোচনা। আওয়ামী লীগ থেকে এই আসনটির জন্য একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ সিলেট-১ আসনের প্রার্থী বাছাইয়ে প্রত্যেক দলই তাদের গুরুত্বপূর্ণ, জনপ্রিয় নেতাকে মনোনয়ন দিয়ে থাকে। কেননা গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে পরাজয়ের গ্লানি বয়ে নিলে সরকার গঠনে বিরূপ প্রভাব পড়বে, এমন বিশ্বাস সকল দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের। বর্তমানে আওয়ামী লীগ থেকে এই আসনে নির্বাচন করে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। বিগত দিনে এই আসন থেকে বিএনপির হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম. সাইফুর রহমান। এবারের নির্বাচনে সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী কয়েকজনের নাম আলোচনায় আসছে। সিনিয়ার প্রার্থীদের মধ্যে বর্তমান সংসদ সদস্য ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, তার অনুজ চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. একে আবদুল মোমেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। নতুনভাবে আওয়ামী লীগ থেকে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশা করতে পারেন এমন আলোচনায় আসছে আরও দুজনের নাম। এরা হলেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সপ্তম গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন। নির্বাচনের বিষয়ে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না বললেও দলীয় নেতাকর্মীদের আলোচনায় শোনা যাচ্ছে তারা আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী হতে পারেন। বিগত দিনে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আগামী নির্বাচনে অংশ না নেয়ার কথা বললেও এই মুহূর্তে ভিন্ন সুর বইতে শুরু করেছে। তিনি আবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন এমন ধারণা করছেন অনেকেই। অন্যদিকে ড. এ কে আবদুল মোমেনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে সমানতালে পাল্লা দিচ্ছেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। প্রথম দিকে এই আসনে বিএনপি প্রার্থী সঙ্কটে ভোগছিল। মর্যাদার এই আসনে অনেক হিসাব-নিকাশ করেই দলগুলো তাদের প্রার্থী মনোনয়ন দিয়ে থাকে। রাজনীতির তারকা ব্যক্তিত্ব, সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম. সাইফুর রহমানের উত্তরসূরি হতে সিলেট-১ থেকে বিএনপির মনোনয়ন তালিকায় একমাত্র প্রার্থী খন্দকার আবদুল মুক্তাদির। তিনি সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেতা খন্দকার আবদুল মালিকের ছেলে এবং দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা। কয়েক বছর ধরে খন্দকার মালিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে মুক্তাদির চালিয়ে যাচ্ছেন সমাজসেবামূলক কর্মকা-। প্রথমদিকে এই আসন থেকে দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পতœী ডাঃ জোবাইদা রহমানের নাম শোনা গেলেও তারা কেউ এ আসন থেকে নির্বাচন করার সম্ভাবনা নেই। দলীয় সূত্রগুলো বিষয়টি নিশ্চিত করেছে, এখানে খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরই হচ্ছেন বিএনপির একমাত্র প্রার্থী। এদিকে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা করা হচ্ছে, দেশের বর্তমান বিরোধী দলে থাকা জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী হিসেবে সিলেট-১ আসনে প্রার্থী হতে পারেন দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। গত বছরে সিলেট সফরে নগরীর রেজিস্ট্রারি মাঠের জনসভায় এরশাদ নিজে এখান থেকে নির্বাচনের কথা জানিয়েছিলেন। তিনি সিলেটকে নিজের দ্বিতীয় বাড়ি হিসেবে অভিহিত করেন। বিএনপি থেকে এ আসনে বিজয়ী এম সাইফুর রহমান সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণের পর এখনও অন্য কোন প্রার্থী এই আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেননি। নবম সংসদ নির্বাচনে মুহিত ১ লাখ ৭২ হাজার ৮১৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। আর সাইফুর রহমান পেয়েছিলেন ১ লাখ ৩৫ হাজার ২১৩ ভোট। এটিই ছিল সাইফুর রহমানের জীবনের শেষ নির্বাচন। গ্রাম বাংলায় এখন শীতের পরশ লেগেছে। এই মৌসুমে জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচন উৎসবের আবহ তৈরি করে। এমনটাই এখন চলছে সর্বত্র। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে বড় দলগুলোর সম্ভাব্য প্রার্থীরা অধিকাংশ সময় এখন নিজের এলাকায় কাটাচ্ছেন। একাধিক প্রার্থী রয়েছেন এক আসনে। বিশেষ করে সিলেটের ৬টি আসনের মধ্যে ৫টি আসনেই আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী রয়েছেন। বড় দল বিএনপির নেতাকর্মীরাও এখন নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। নির্বাচনকে সামনে রখে ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে সিলেটে জনসভার পর বিএনপির নেতাকর্মীরা নির্বাচন সংক্রান্ত ধারণা পেয়ে গেছেন। তারা এখন নিজেদের প্রস্তুত করছেন। সিলেটের ২টি আসনে বিএনপির প্রার্থীরা মাঠে প্রচার কাজ চালচ্ছেন। বাকি ৪টি আসনের প্রার্থীরা এখনও ঘটা করে জনতার সামনে আসেননি। ৪টির মধ্যে সিলেট আসন-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) ও সিলেট আসনÑ৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) থেকে এখনও প্রার্থীর নাম প্রকাশ্যে বেরিয়ে আসেনি। ৬টি আসনে বিএনপি প্রার্থীদের মধ্যে প্রচার কাজে এগিয়ে রয়েছেন কোম্পানীগঞ্জ-গোয়াইনঘাট আসন-৪ থেকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী বর্তমান গোয়াইনঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম চৌধুরী। তার গণসংযোগ ও উঠান বৈঠক চলছে প্রতিদিন। ৬টি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা মাঠে রয়েছেন। একটি আসনে একাধিক প্রার্থী থাকায় সকলেই গুরুত্ব দিয়ে গণসংযোগ চালাচ্ছেন। মাঠে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে কেন্দ্রের সঙ্গে মনোনয়ন আদায়ের জন্য দরকষাকষি করবেন এমন বিষয়টি মাথায় রেখেই প্রার্থীরা ঘরে বসে নেই। সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন আসনে বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা নাম ঘোষণা করে জনসমক্ষে বেরিয়ে আসছেন। প্রতিদিন প্রচারপত্র নিয়ে তারা ভোটারদের কাছেও ছুটছেন। সিলেট-২ ॥ গুরুত্বের বিবেচনায় সিলেট-১ আসনের পরই রাজনৈতিক অঙ্গনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়ে থাকে ‘সিলেট-২’ আসন। নানাকারণে প্রবাসী অধ্যুষিত আসনটি চলে এসেছে আলোচনার শীর্ষে। এই জনপদের অনেক কিছুই নিয়ন্ত্রিত হয় ইংল্যান্ড, আমেরিকাতে থাকা প্রবাসীদের কলকাটি নাড়ানোয়। তাই দেশের নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের প্রচার চালাতে হয় প্রবাসেও। ভোটব্যাংক বাড়াতে বিদেশে থাকা স্বজনদের মাধ্যমে দেশের স্বজনদের কাছে ভোট চাওয়া হয়। বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর এই দুই উপজেলা নিয়েই বিস্তৃত সিলেট-২ আসন। এই আসনে প্রধান তিন রাজনৈতিক দলেরই একজন করে প্রার্থীর নাম রয়েছে সর্বশেষ আলোচনাতে। শেষমেশ তিন দলেই আলোচনার শীর্ষে থাকা ওই তিন প্রার্থী ঠিকে থাকবেন অনেকটা নিশ্চিত। এরা হচ্ছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী, নিখোঁজ বিএনপি নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এম. ইলিয়াস আলীর সহধর্মিণী দলটির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা এবং জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান সংসদ সদস্য ইয়াহইয়া চৌধুরী। এই আসনে আওয়ামী লীগের আরেক প্রার্থী হচ্ছেন প্রবাসী নেতা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। তিনিও মনোনয়ন লাভের আশায় জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। রাজনৈতিক সমঝোতায় বিগত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৪ দলীয় মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়াকে সমর্থন করে আওয়ামী লীগ। ১৪ দলের সমর্থন নিয়ে লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করে তিনি প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ৪৮ হাজার ১৫৭ ভোট পেয়েছিলেন ইয়াহইয়া। তার বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী নেতা মুহিবুর রহমান আনারস প্রতীক নিয়ে পান ১৭ হাজার ৩৮৯ ভোট। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ছেড়ে দেন নিজের আসন। মহাজোটের স্বার্থেই জাতীয় পার্টির প্রার্থীর জন্য ছেড়ে দিয়েছিলেন আসনটি। তার আগে নবম সংসদ নির্বাচনে এই শফিকুর রহমান চৌধুরী চমকের জন্ম দিয়েছিলেন বিএনপির তৎকালীন জনপ্রিয় ও হেভিওয়েট প্রার্থী এম. ইলিয়াস আলীকে হারিয়ে দিয়ে। সেই নির্বাচনে ইলিয়াসের চেয়ে ৩ হাজার ১৭৪ ভোট বেশি পেয়ে জয়ের মালা পরেছিলেন শফিক। নবম সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে নিয়ে শফিকুর রহমান চৌধুরী পান ১ লাখ ৮ হাজার ২৮০ ভোট। আর ধানের শীষ প্রতীকে এম. ইলিয়াস আলী পান ১ লাখ ৫ হাজার ১০৬ ভোট। আসছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন তালিকার শীর্ষে থাকা শফিক চৌধুরীকে টেক্কা দিতে মাঠে নেমেছেন নিখোঁজ ইলিয়াসপতœী তাহসিনা লুনা। এই পর্যায়ে শফিকুর রহমান চৌধুরী দলের অবস্থান ধরে রাখতে সার্বক্ষণিক এলাকায় কাজ করে যাচ্ছেন। প্রতিনিয়ত এলাকার সামাজিক আচার অনুষ্ঠান ও দলীয় কর্মসূচিতে শফিকুর রহমানের উপস্থিতি লক্ষণীয়। দলের নেতাকর্মীরা এই আসনে শফিকুর রহমান চৌধুরীকে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে বিজয় নিশ্চিত করার পক্ষে দাবি জানাচ্ছেন। সিলেট-৩ ॥ দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জের একাংশ নিয়ে গঠিত সিলেট-৩ আসন। সিলেট-৩ আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জাতীয় পার্টির ১৩ প্রার্থী মনোনয়ন পেতে মরিয়া হয়ে ওঠেছেন। বিশেষ করে টানা ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সাংসদ অনেকটাই নিশ্চিত। কারো জন্য কোন ছাড় দিতে রাজি নন। দলের ভেতর থেকে কে প্রার্র্থী হবেন তা নিয়ে এরই মধ্যে উপর মহলের সঙ্গে লবিং করতে শুরু হয়েছে দৌড়ঝাঁপ। আওয়ামী লীগের শীর্ষ চার নেতা এই আসনে মনোনয়ন পেতে আগ্রহী। ধারণা করা হচ্ছে, মাঠের বিরোধী দল বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাইতে পারেন আরও ৪ জন। সেক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টিও। এ আসন থেকে জাপার ৫ প্রার্থী মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ভূরি ভূরি এসব প্রার্থীর মধ্যে সিলেট-৩ আসনের শক্তিশালী প্রার্থী হচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বর্তমান এমপি মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরী। তার সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেন এমন প্রার্থী হচ্ছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী সদস্য সাবেক এমপি শফি আহমদ চৌধুরী। আওয়ামী লীগের ভেতরে ভঙ্গুর অবস্থা বিরাজ করায় সেই সুযোগ কাজে লাগাতে চাচ্ছেন বিএনপি, জাপার প্রার্থীরা। আওয়ামী লীগ থেকে বিজয়ী হওয়া বর্তমান এমপি মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরী কয়েস এমপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে দলীয় নেতাকর্মীদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। দলেরই এ ভাঙ্গনকে কাজে লাগাতে চাইবেন তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা। বলা যায়, সামাদ চৌধুরীকেই ঠেকাতে নিজ দল আওয়ামী লীগসহ, বিএনপি ও জাপার প্রার্থীরা এখন মরিয়া। তবে এ আসন থেকে টানা দুবার নির্বাচিত হয়েছেন মাহমুদুস সামাদ। ধারণা করা হচ্ছে আওয়ামী লীগ থেকে অন্য যেসব প্রার্থী সামাদের বিদ্রোহী হতে পারেন, তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন। এছাড়া যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক হাবীবুর রহমান হাবীবের নামও আসছে। শোনা যাচ্ছে, শফি আহমদ চৌধুরী ছাড়াও সিলেট-৩ আসন থেকে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পেতে আগ্রহী অন্য তিনজন হলেন, সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট আবদুল গফ্ফার, বিএনপি নেতা আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী ও যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার এমএ সালাম। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আতিকুর রহমান আতিক এ আসন থেকে আগে একবার নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিলেন। তিনি এবারও এ আসন থেকে মনোনয়ন চাইতে পারেন। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মনোনয়ন প্রাপ্তির দৌড়ে আছেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও জেলা জাপার সদস্য সচিব উছমান আলী, কেন্দ্রীয় সদস্য ও যুক্তরাজ্য জাপার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা এবং যুক্তরাজ্য প্রবাসী জাপা নেতা ব্যারিস্টার ইম্মানুল হামিদ এনাম ও মুহিদুর রহমান। সিলেট-৪ ॥ খনিজসম্পদ পাথরের সা¤্রাজ্য বলে খ্যাত সিলেট-৪ আসন। সীমান্তবর্তী জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য হিসেবে আছেন আওয়ামী লীগের ইমরান আহমদ। বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য দিলদার হোসেন সেলিমকে পরাজিত করে দুই মেয়াদ ক্ষমতায় রয়েছেন তিনি। এখানে আওয়ামী লীগের পক্ষে অন্য প্রার্থীর সম্ভাবনা নেই, এটা প্রায় নিশ্চিত। বর্তমান সাংসদ ইমরান আহমদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের রয়েছে সুসম্পর্ক। এলাকায় তার ভাল ইমেজ রয়েছে। এই আসনটিও একবার জাতীয় পাটির দখলে ছিল। মরহুম অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান, সিলেট ১ ও ৪ আসন থেকে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়ে, সিলেট-৪ আসনটি ছেড়ে দেন। পরবর্তীতে এই আসনে উপনির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী দিলদার হোসেন সেলিম বিজয়ী হন। পরবর্তী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আসনটি নিজেদের দখলে নিয়ে আসে। আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এই দুই প্রার্থী ছাড়াও আলোচনায় আসছে বিএনপির আরও দুই নেতার নাম। এরা হলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান ও বর্তমান গোয়াইনঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুল হাকিম চৌধুরী। সিলেট-৫ ॥ আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সিলেট-৫ আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা নির্বাচনী মাঠে কাজ শুরু করেছেন। গত নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা সেলিম উদ্দিন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও এবার মহাজোট না থাকলে পাল্টে যাবে সব হিসাব-নিকাশ। জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-৫ আসনে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী একাধিক প্রার্থী মাঠে কাজ করছেন। দশম নির্বাচনে প্রথমে মনোনয়ন পেলেও দলের হাইকমান্ডের নির্দেশে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে মহাজোটের প্রার্থীকে আসন ছেড়ে দেন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন। দলীয় সূত্রমতে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাসুক উদ্দিন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তবে এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে চেষ্টা চালাচ্ছেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আহমদ আল কবির। এই আসন থেকে জামায়াতের মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী ২০০১ সালে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। নবম নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তিনি। এবারও ফরিদ প্রার্থী হবেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। জোটের প্রার্থীকে ছেড়ে দেয়ায় গত দুটি নির্বাচনে এ আসনে প্রার্থী দেয়নি বিএনপি। জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল কাহির চৌধুরী, কানাইঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আশিক চৌধুরী মনোনয়ন পেতে জোর চেষ্টা করছেন। এছাড়া কানাইঘাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি মামুনুর রশীদও বিএনপির মনোনয়ন পেতে মাঠে কাজ করছেন। জাতীয় পার্টি থেকে পার্টি চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা বর্তমান সাংসদ ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ সেলিম উদ্দিন আবারও নির্বাচনে অংশ নেবেন। এছাড়া জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচন করতে তৎপর রয়েছেন পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক ও জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাব্বীর আহমদ ও জাপার কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল মতিন চৌধুরী। এই আসনে আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন দীর্ঘদিন থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। এলাকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে মাসুক উদ্দিনের ভাল সম্পর্ক রয়েছে। এলাকার সামাজিক পারিবারিক অনুষ্ঠানাদিতে মাসুক উদ্দিনের সম্পৃক্ততা সবার কাছে আলোচিত। সৎ মানুষ হিসাবে সাবেক জকিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান, মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিনের গ্রহণযোগ্যতা সর্বজন স্বীকৃত। এই আসনে বিগত নির্বাচনে দলের নেতাকর্মীরা মাসুক উদ্দিনকে নিয়ে নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোয় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা দেখা দেয়। দলের নেতাকর্মীরা এই মুহূর্তে মাসুক উদ্দিনকে নিয়ে নির্বাচন করতে প্রস্তুত। এই আসনে বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের সাংসদ ছিলেন হাফিজ মজুমদার। দলের নেতাকর্মীরা তার ওপর অসন্তুষ্ট ছিলেন। দলীয় সভা সমাবেশ থেকে শুরু করে কোন কাজেই নেতাকর্মীরা তাকে পাননি। এমনকি তার কাছে যাওয়ার সুযোগও পাননি। এনিয়ে অসন্তুষ ছিল সবার মাঝে। এ নিয়ে নির্বাচনের সময়ে নেতাকর্মীরা অনেকেই ছিল নিষ্ক্রীয়। সিলেট-৬ ॥ বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-৬ আসন। এ আসনে আগামী নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। বিএনপিও আসন পুনরুদ্ধারে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এ আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে একাধিকবার নির্বাচিত এমপি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। আগামী নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পাবেন তিনি এটা প্রায় নিশ্চিত। মনোনয়নের ব্যাপারে নাহিদ এবং তার অনুসারী নেতাকর্মীরা যথেষ্ট নির্ভর। নাহিদ দীর্ঘদিন মন্ত্রী থাকায় এলাকায় যে উন্নয়ন করেছেন, তার মূল্যায়ন করবেন জনগণ- এমন বিশ্বাস দলীয় নেতাকর্মীদের। তাছাড়া তিনি ১৯৯৬, ২০০৮ এবং ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেছেন। তার ওপর দলের হাইকমান্ডের যথেষ্ট আস্থা রয়েছে। এছাড়া পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক হিসাবে এলাকায় তার রয়েছে আলাদা ইমেজ। তবে এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ার জন্য লবিং করছেন কানাডা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোঃ সারওয়ার হোসেন ও লন্ডন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আফছার খান সাদেক। গত বন্যায় তাদের পক্ষ থেকে দুর্গত মানুষকে ব্যাপক ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়েছে। মানুষ আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরিবর্তন চায়, এমন দাবি এই দুই মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতার অনুসারীদের। মনোনয়নপ্রত্যাশী এসব নেতা বিভিন্নভাবে তাদের নির্বাচনী আসনে পৃথক বলয় তৈরি করে কাজ করছেন। গত নির্বাচনেও আফছার খান মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তখন দল তাকে মনোনয়ন দেয়নি। রাজনৈতিক বোদ্ধারা বলছেন, আসন হাতছাড়া হওয়ার মতো কাউকে মনোনয়ন দেবে না আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। তাই এবারও আফছার খান দলের মনোনয়ন নাও পেতে পারেন। এদিকে পিছিয়ে নেই সাবেক বিরোধী দল বিএনপিও। সিলেট-৬ আসনে বিএনপি একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত। তাদের নেতৃত্বাধীন জোটের প্রধান মিত্র জামায়াতে ইসলামীও সাংগঠনিকভাবে এ আসনে মজবুত অবস্থানে। বিএনপি-জামায়াত ভোটের হিসাব যোগ করলে জাতীয় নির্বাচনের ফল অন্য ঘরে যাবে না বলে জোট নেতাদের অভিমত। ২০০৮ সালে তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকারের মহাবিপর্যয়ের সময়ও বিএনপি-জামায়াতের ভোট ভাগাভাগি না হলে ফলাফল অন্য কিছু হতে পারতো বলে মনে করেন জোটের নেতাকর্মীরা। এছাড়াও বিএনপির হয়ে নির্বাচন করতে আগ্রহী জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী। এমরান আহমদ চৌধুরী জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি, ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি। তৃণমূলের একজন কর্মী হিসেবে এলাকার মাটি ও মানুষের সঙ্গে তার হৃদয়ের সম্পর্ক রয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন এলাকার সমস্যাগুলো সম্পর্কে আমি অবগত। উন্নয়নের জন্য আমার নিজস্ব পরিকল্পনা আছে। আন্দোলন, সংগ্রামে রাজপথের একজন কর্মী হিসেবে দেশের গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছি। আন্দোলন করতে গিয়ে মিথ্যা মামলা, পুলিশি হয়রানি ও নির্যাতনের সম্মুখীন হয়েছি। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির মাধ্যমে দেশে যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তবে আমি গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাই। এছাড়াও জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক হেলাল খান, জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট রশীদ আহমদ, জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ফয়ছল আহমদ চৌধুরী, জাতীয় পার্টি থেকে যোগদানকারী আলহাজ কুনু মিয়া। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী থেকে মাওলানা হাবীবুর রহমান, ঢাকা মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর নেতা মাওলানা সেলিম উদ্দিন ও ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট মাওলানা আব্দুর রকিবের নাম প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আসছে। সিলেট ৬ আসনটি এক সময়ে জাতীয় পাটির দখলে ছিল। এখান থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মকবুল হোসেন লিচু মিয়াও আগে ২বার সাংসদ নির্বাচিত হন। বর্তমান সাংসদ শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এলাকায় তার একটি অবস্থান তৈরি হয়েছে। আওয়ামী লীগ থেকে একাধিক প্রার্থী প্রতিদ্বনন্দ্বিতায় না এলে এবং দলীয় ভাবে ঐক্য অবস্থান ধরে রাখলে এই আসনে আওয়ামী লীগের বিজয় কঠিন হবে না। এই আসনটিও এক সময়ে জাতীয় পাটির দখলে ছিল। ইসলামী ঐক্যজোট থেকে নেজামে ইসলামী বাংলাদেশের সভাপতি মাওলানা এডভোকেট আব্দুর রকিব এই আসনে ঐক্যজোট থেকে প্রার্থী হওয়ার জন্য জোটের কাছে দাবী জানিয়েছেন। তিনি এই আসনে অতীতে দলের প্রার্থী হয়ে এককভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করেছেন। বর্তমানে জোটের হয়ে বিএনপিকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে নেজামে ইসলামী বাংলাদেশ। সারা দেশে অন্তত এই একটি আসন তাদের জন্য বরাদ্দ দেয়া হবে এমন প্রত্যশা দলের সকলের।
×