ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

নবেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণা

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ৩১ অক্টোবর ২০১৮

নবেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণা

শাহীন রহমান ॥ একাদশ জাতীয় নির্বাচনের কাউন্ট ডাউন বা ক্ষণগণনা শুরু হচ্ছে আজ থেকে। এখন থেকে দিন যত যাবে, দেশ ততই নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাবে। সংবিধান অনুযায়ী সরকারের মেয়াদ পূর্তির শেষ ৯০ দিনের মধ্যে যে কোন দিন নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যার ক্ষণগণনা শুরু হচ্ছে আজ থেকে। এ অনুযায়ী আগামী বছরের ২৮ জানুয়ারি মধ্যে একাদশ জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা করতে হবে। এদিকে কমিশনেও নির্বাচনের ক্ষণগণনা অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সেই অনুযায়ী নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইতোমধ্যে কমিশন থেকে জানানো হয়েছে নবেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই একাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। তবে ভোটের দিনক্ষণ নিয়ে এখনও স্পষ্ট করে কিছু বলা না হলে ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহেই নির্বাচনের প্রস্তুতি রয়েছে তাদের। কমিশন সচিব এর আগে জানান তফসিল ঘোষণার আগে তারা ১ নবেম্বর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাত করবেন। রাষ্ট্রপতি সঙ্গে সাক্ষাতের পরই কমিশনের বৈঠকে তফসিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। জানা গেছে, তফসিল নিয়ে নবেম্বরের তিন তারিখে ইসির বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই বৈঠকে তফসিলের বিষয়ে চূড়ান্ত করা হবে। এদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে শেষ সময়ে এসে রাজনৈতিক অঙ্গনে নাটকীয় পরিবর্তন ঘটতে চলেছে। এতদিন বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনে থাকা দলগুলোর সঙ্গে সরকারে এক ধরনের দূরত্ব থাকলেও অবশেষে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছে আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলোচনায় বসতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনকে চিঠিও দিয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। ঐক্যফ্রন্ট ৭ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। আলোচনায় তারা এ বিষয়গুলোই তুলে ধরবেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক এই পটপরিবর্তনকে অনেকেই ইতিবাচক হিসেবে মনে করছে। সংলাপের কারণে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক বাতিল করা হয়েছে। এদিকে সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে এই তিন মাস সরকার তার রুটিন কাজ পরিচালনা করবে। এছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে তারা নির্বাচন কমিশনের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করবে। নির্বাচন কমিশন আইন অনুযায়ী আগামী নির্বাচন পরিচালনার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা এর আগে সাংবাদিকদের বলেন আইন অনুযায়ী তারা নির্বাচন করবে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো আলোচনায় বসে যে সিদ্ধান্ত দেবেন তারা সেই অনুযায়ী নির্বাচন করবেন বলে উল্লেখ করেন। ইসি সূত্রে জানা গেছে নির্বাচনে কাউন্ট ডাউন ধরেই আজ বুধবার ইসির সম্মেলন কক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভা ডাকা হয়েছে। কর্মকর্তারা জানান তফসিলের আগে নেয়া সব প্রস্তুতির বাস্তবায়নের সুবিধার্থে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়-বিভাগের সহযোগিতার জন্যই এ আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় ভোট কেন্দ্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার, মালামাল পরিবহন, পরীক্ষার সময়সূচী পর্যালোচনা, ঋণখেলাপীর তথ্য, আগাম প্রচার সামগ্রী অপসারণ, নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ সার্বিক বিষয় তুলে ধরে আলোচনা করা হবে। আজ আন্তঃমন্ত্রণালয়ে সভা শেষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাষ্ট্রপতি সঙ্গে সাক্ষাতে যাবেন নির্বাচন কমিশন। সেখানে নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাত শেষে নবেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। যদিও ইসির পক্ষ থেকে ডিসেম্বরের শেষে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। তবে জানা গেছে প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করা হরেল ডিসেম্বরে তৃতীয় সপ্তাহে ভোট নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। অতীতে নির্বাচন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে নির্বাচনে ৪২ থেকে ৪৭ দিন সময় হাতে রেখে তফসিল ঘোষণা করেছে ইসি। এই অনুযায়ী নবেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল দিলে ডিসেম্বরের ৩ সপ্তাহে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে কমিশন থেকে এখন পর্যন্ত নির্বাচনের দিনক্ষণ সম্পর্কে কিছুই জানানো হয়নি। নবেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করার কথা বলা হলেও কবে নাগাদ তফসিল দেয়া হবে সে সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় সংশ্লিষ্টদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হবে। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পরই কমিশন সভা ডাকা হতে পারে। ওই সভায় তফসিল অনুমোদন হবে। এরপর বিটিভি ও বেতারে জাতির উদ্দেশে ভাষণের মধ্য দিয়ে তফসিল ঘোষণার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×