ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার আপীল বিভাগের রায়;###;নিম্ন আদালতে দেয়া ৫ বছর কারাদ-ের মেয়াদ বাড়ল আরও ৫ বছর ;###;মূল আসামি খালেদা জিয়ার সাজা কম হয়েছিল নিম্ন আদালতে;###;দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ায় নির্বাচনে অযোগ্য হবেন

সাজা বেড়ে দশ বছর

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ৩১ অক্টোবর ২০১৮

সাজা বেড়ে দশ বছর

বিকাশ দত্ত ॥ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে কারাবন্দী দুই আসামি কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের ১০ বছরের কারাদ- বহাল রাখা হয়েছে। এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান পলাতক থাকায় নিম্ন আদালতের দেয়া ১০ বছর করে সশ্রম কারাদ- বহাল রয়েছে। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ মঙ্গলবার এ রায় প্রদান করেন। এদিকে রায় ঘোষণার আগে সংশ্লিষ্ট মামলায় আপীল শুনানি হওয়া হাইকোর্ট বেঞ্চের ওপর অনাস্থা জানিয়ে খালেদা জিয়ার আবেদন গ্রহণ করেনি আপীল বিভাগ। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ছয় আসামির মধ্যে বিচারিক আদালতে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এবং দশ বছরের কারাদ-প্রাপ্ত মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ হাইকোর্টে আপীল করে খালাস চেয়েছিলেন। অন্যদিকে দুদক খালেদা জিয়ার সাজার মেয়াদ বাড়াতে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিশন আবেদন করেছিল, যার ওপর রুল দিয়েছিল হাইকোর্টে। মঙ্গলবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম সকাল সাড়ে ১০টা এজলাসে এসে বলেন, আপনারা কি ডিফেন্সের ল’ ইয়ার। ডিফেন্স ল’ ইয়ারদের সামনে বসতে দিন। তখন সিনিয়র আইনজীবী শ ম রেজাউর করিম বলেন, উনারা (আসামিপক্ষের আইনজীবী) আসেননি। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এরপর এ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশে বলেন, মি: এ্যাটর্নি জেনারেল আমরা শুধু মূল অংশটুকু পড়ব। এরপর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, তিনটি আপীল খারিজ করে দেয়া হলো। খালেদা জিয়ার সাজা বাড়াতে যে রিভিশন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত রুল জারি করেছিল, তা যথাযথ (এ্যাবসলিউট) ঘোষণা করা হলো। এবং খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর কারাদ- দেয়া হলো। হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পর মঙ্গলবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে দুটি দুর্নীতির মামলার রায় পড়ে শোনানো হয়েছে বলে জানা গেছে। এর আগে ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দী খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদ- দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে অন্য তিন আসামিকেও সাত বছরের সশ্রম কারাদ- প্রদান করেছে আদালত। এ নিয়ে দুটি দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ১৭ বছরের কারাদ- প্রদান করা হয়েছে। আরও তিনটি দুর্নীতি মামলাসহ ৩৪টি মামলা বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। অন্যদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর সশ্রম কারাদ- বহাল রয়েছে। এর পাশাপাশি গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদ-, অর্থপাচারের মামলায় নিম্ন আদালতের খালাসের রায় বাতিল করে তারেক রহমানকে সাত বছরের কারাদ- ও ২০ কোটি জরিমানা বহাল রেখেছে হাইকোর্ট। বর্তমানে তারেক রহমান তিনটি মামলায় দ-িত । জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার সময় আদালতে এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলমসহ অন্যান্য আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার পক্ষে কোন আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। রায়কে ঘিরে আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। মূল গেটের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এ ছাড়া আদালত কক্ষের বাইরেও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। রায় ঘোষণার পরপরই এজলাসের বাইরে বিএনপির আইনজীবীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকে। রায়ের পর এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আসামিপক্ষের আইনজীবী আদালতে না থাকলেও তারা এ রায়ের প্রতিবাদে বুধবার আদালত বর্জনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন এ রায়ের ফলে খালেদা জিয়া আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। তিনি আরও বলেন, এ রায় রাজনীতিবিদদের জন্য একটি মেসেজ। খালেদা জিয়া ছিলেন এ মামলার মুখ্য আসামি। অন্য আসামিদের যেখানে ১০ বছরের সাজা হয়েছে, মুখ্য আসামি তার চেয়ে কম সাজা পেতে পারেন না। এ কারণে হাইকোর্টের রায়ে সব আসামির সাজা সমান করা হয়েছে বলে তিনি অনুমান করছেন। নির্বাচনে অংশ নিতে হলে এ দ- বাতিল হতে হবে। দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম বলেন, বেগম জিয়া ছিলেন এই মামলার মুখ্য আসামি। সেই গ্রাউন্ডে তার সাজা বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছিল। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করে খালেদা জিয়ার সাজা ৫ থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেছেন। ফলে মামলায় সব আসামির সাজাই ১০ বছর হলো। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বলেছেন, খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে পারবেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপীলের যাব। আশা করি সেখানে খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার পাবেন। খালেদা জিয়ার অপর আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেছেন, আদালত একতরফাভাবে সব কিছু করে যাচ্ছে। রায়ে আমরা ব্যথিত ও মর্মাহত। ৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালতের বিচারক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান টানটান উত্তেজনার মধ্যে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে খালেদা জিয়াকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদ- প্রদান করেন। অন্যদিকে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৫ আসামিকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদ- দেয়া হয়। একইসঙ্গে তাদের সবার ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী (পলাতক) এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান (পলাতক)। একইসঙ্গে তাদের সবার ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা করে জরিমানা করা হয়। ওই রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি হাতে পাওয়ার পর ২০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে আপীল করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। ২২ ফেব্রুয়ারি তা শুনানির জন্য গ্রহণ করে খালেদার অর্থদ- স্থগিত করে আদালত। আর দুর্নীতি দমন কমিশন খালেদা জিয়ার সাজার মেয়াদ বাড়াতে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিশন আবেদন করে গত ২৫ মার্চ। দুদকের যুক্তি ছিল, আদালত মুখ্য আসামিকে পাঁচ বছরের সাজা দিয়ে সহযোগী আসামিদের দিয়েছে ১০ বছরের সাজা। এটা সাজা দেয়ার ক্ষেত্রে বৈষম্য। সেই আবেদনের গ্রহণযোগ্যতার শুনানি কেরে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের বেঞ্চ ২৮ মার্চ রুল জারি করে। জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের সাজা কেন বাড়ানো হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় ওই রুলে। তবে আদালত বলে দেয়, রুলের ওপর শুনানি হবে খালেদা জিয়ার আপীলের সঙ্গে। গত ১২ জুলাই এ মামলার আপীল শুনানি শুরু হওয়ার পর ২৮ কার্যদিবসের মধ্যে ২৬ কার্যদিবস খালেদা জিয়ার আপীলের ওপর শুনানি ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন তার আইনজীবীরা। এরপর গত ২৩ অক্টোবর রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের আইনজীবী তাদের যুক্তিতর্ক শেষ করেন। শুনানিতে খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে যাবজ্জীবন চাওয়া হয় দুদকের পক্ষ থেকে। আর রাষ্ট্রপক্ষ বিচারিক আদালতের দেয়া ৫ বছরের সাজা বহাল রাখার পক্ষে যুক্তি দেয়। এর মধ্যেই গত ২২ অক্টোবর খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা এ মামলার অর্থের উৎসের বিষয়টি স্পষ্ট করতে অতিরিক্ত সাক্ষ্য চেয়ে আবেদন করেন। বিষয়টি নিয়ে তারা আপীল বিভাগেও যান। সেই সঙ্গে এ মামলার আপীল নিষ্পত্তির সময় চেয়ে সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করেন। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপীল বেঞ্চ সোমবার সময়ের আবেদন খারিজ করে দিলে আগের নির্দেশনা অনুযায়ী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার আপীল শুনানি শেষ করার বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়। এরপর হাইকোর্ট সোমবারই অতিরিক্ত সাক্ষ্য গ্রহণের আবেদনটি খারিজ করে দিয়ে শুনানির সমাপ্তি টানে এবং রায়ের জন্য মঙ্গলবার (৩০ অক্টোবর) দিন ধার্য করে হাইকোর্ট। নির্বাচন করতে পারবেন না ॥ এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, দুর্নীতির দুই মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ৭ বছর ও ১০ বছর কারাদ- হওয়ার ওই সাজা বাতিল না হলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। মঙ্গলবার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা ৫ বছর বাড়িয়ে ১০ বছর করেছে হাইকোর্ট। এরপর এ্যাটর্নি জেনারেল তার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন কথা বলেন। হাইকোর্টের রায়ের পর খালেদা জিয়ার আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি না তা জানতে চাইলে মাহবুবে আলম বলেন, কেউ সাজাপ্রাপ্ত হলে নিশ্চয়ই পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত সাজা বাতিল না হয়। সাজার দুই রকম ব্যাখ্যা রয়েছে। এক. আপীল করে সাজা বাতিল করা এবং দুই. সাজার কার্যকারিতা স্থগিত করা। এখানে আমার অভিমত হলো, কেউ নির্বাচন করতে চাইলে তাকে সাজা বাতিল করতে হবে। তবে সাজা সাময়িক স্থগিত করে নির্বাচন করতে পারবে না। ফলে খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। আপীল শুনানি অবস্থায় থাকলেও হবে না, যে পর্যন্ত সাজা বাতিল না হয়। এর আগেও অনেকেই সাজা স্থগিত রেখে নির্বাচন করেছেন, সেক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত রেখে নির্বাচন করতে পারবেন কি না তার জবাবে এ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এটা অনেকেই আইনের নানান ফাঁকফোকর দিয়ে করতে পারেন। কিন্তু আমার ব্যাখ্যা হলো যে, কেউ যদি দ-প্রাপ্ত হন, সেক্ষেত্রে তার দ- যতক্ষণ না বাতিল হবে, সে পর্যন্ত তিনি মুক্ত মানুষ হিসেবে পরিগণিত হতে পারেন না। আবার সাজা স্থগিত হলে আপাতত জেল খাটা থেকে হয়তো অব্যাহতি পেতে পারেন, কিন্তু নির্বাচন করতে পারবেন না। জামিন অটোমেটিকলি বাতিল হয়ে যাবে ॥ দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, আদালত তাদের (আসামিপক্ষের) তিনটি আপীলই খারিজ করে দিয়েছে। আমাদের আবেদন গ্রহণ করেছেন। এখন জামিন অটোমেটিকলি বাতিল হয়ে যাবে। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের অযোগ্য ॥ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল জনকণ্ঠকে বলেছেন, বেগম জিয়া নিন্দনীয় অপরাধ করেছেন। এই ধরনের পদে থেকে এভাবে অনাথদের সম্পত্তি গ্রাস করার মানসিকতার শাস্তি হওয়া উচিত। আদালত যে সাজা দিয়েছে তা সঠিকই। তিনি আরও বলেন, সংবিধানের অনুচ্ছেদ অনুযায়ী খালোদা জিয়া নির্বাচনে কারা অযোগ্য। কারণ ‘সংবিধান অনুযায়ী নৈতিকতা স্খলনের দায়ে কেউ যদি দুই বছরের জন্য দ-িত হন, তাহলে পরবর্তী ৫ বছর না যাওয়া পর্যন্ত তিনি নির্বাচন করতে পরবেন না। কাজেই সংবিধানের ৬৬ (২) ডি অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচনের প্রশ্নই আসে না। আপীল করলেও তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না। কারণ এখানে দুটি আদালতের রায় হয়ে গেছে। খালেদা জিয়াকে রায় পড়ে শুনানো হয়েছে ॥ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে দুটি মামলার রায় পড়ে শোনানো হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে কারাকর্তৃপক্ষ এ রায় পড়ে শোনান। একই সঙ্গে সাজা বৃদ্ধির বিষয়টিও জানানো হয়। এ সময় বেগম খালেদা জিয়া নিশ্চুপ ছিলেন বলে জানা গেছে। সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির একাংশের কর্মসূচী ॥ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় হাইকোর্টের রায়কে ‘বেআইনী’ ঘোষণা করে এর প্রতিবাদে বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত সুপ্রীমকোর্টের আপীল ও হাইকোর্ট বিভাগের আদালত বর্জনের কর্মসূচী দিয়েছে সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির একাংশ। মঙ্গলবার সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সভাপতি এ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন এ ঘোষণা দেন। জয়নুল আবেদীন বলেন, পূর্বে আদালত বর্জনের মতো কোন কর্মসূচী আমরা গ্রহণ করিনি। আমরা চেয়েছিলাম আদালতের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে। প্রধান বিচারপতিকে (সৈয়দ মাহমুদ হোসেন) সংবর্ধনা দেয়ার সময় আমরা বলেছি যে, প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা যাওয়ার পরে এই বিচার বিভাগে একটি ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। আপনার (প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন) দায়িত্ব হচ্ছে, সেই ক্ষত মুছে দেয়া। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই ক্ষত মুছে দেয়া সম্ভব হয়নি। আবেদন আপীল বিভাগ গ্রহণ করেনি ॥ আদালত একতরফাভাবে সবকিছু করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। তিনি বলেন, আমরা মনে করি, এই আদালতে যথার্থ বিচার পাব না। এই কথা বলে আমরা একটি আবেদন নিয়ে গিয়েছিলাম। আদালত আমাদের সেই আবেদনটি গ্রহণ ররেননি। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির বেঞ্চে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। আদালত সে আবেদন গ্রহণ না করলে এর প্রতিক্রিয়ায় জয়নুল আবেদীন এসব কথা বলেন।
×