ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

নিত্যপণ্যের বাজারে পরিবহন ধর্মঘটের প্রভাব

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ৩০ অক্টোবর ২০১৮

নিত্যপণ্যের বাজারে পরিবহন ধর্মঘটের প্রভাব

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ মালিক-শ্রমিকদের পরিবহন ধর্মঘটের প্রভাব পড়েছে নিত্যপণ্যের বাজারে। ভরা মৌসুমে বেড়ে গেছে শাক-সবজির দাম। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ায় ফের নদী ও সাগরে ইলিশ ধরা শুরু হয়েছে। সেই ইলিশের দেখা মিলছে রাজধানীর বাজারগুলোতে। পরিবহন ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় মাছ, ব্রয়লার মুরগি, আদা ও রসুনের দাম বেড়েছে আরেক দফা। এদিকে, নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় সাগর ও নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে। রাজধানীর বাজারে পাওয়া যাচ্ছে এই নতুন ইলিশ। তবে দাম কিছুটা বেশি। ব্যবসায়ীরা বলছে, গত এক মাস ধরে প্রায় সব ধরনের মাছের দাম চড়া। সবে ইলিশ ধরা শুরু হয়েছে, কিন্তু পরিবহন ভাড়া বেশি। এসব কারণে মাছের বাজার স্বাভাবিক হতে পারছে না। তবে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঢাকার বাজারে ইলিশ পাওয়ায় কেউ কেউ নেতিবাচক প্রশ্ন রেখেছেন। তাদের মতে, চোরাইভাবে ধৃত ও মজুদকৃত ইলিশ এখন বাজারে নিয়ে আসা হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছে, নদীতেই ইলিশ ধরা পড়ছে। তাই দ্রুত সেই ইলিশ বেশি দামে বিক্রির জন্য ঢাকায় নিয়ে আসা হচ্ছে। জানা গেছে, ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটে জনদুর্ভোগের পাশাপাশি নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে শাক-সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের কষ্ট কিছুটা বেড়েছে। এছাড়া কৃষক পর্যায়েও আর্থিক ক্ষতির ঝুঁকির কথা বলছে পাইকারি ব্যবসায়ীরা। এ প্রসঙ্গে কাওরান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী মোঃ জসিম জনকণ্ঠকে বলেন, পরিবহন ধর্মঘটের কারণে পণ্য আনতে বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে। এ কারণে শাক-সবজির দাম বেড়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, খুচরা পর্যায়ে শাক-সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় ভোক্তাদের কষ্ট কিছুটা বাড়বে। আবার এখন সবজির ভরা মৌসুম চলছে। এই মুহূর্তে ক্ষেতের সবজি ঢাকায় আনা সম্ভব না হলে কৃষকরাও বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন। সব মিলিয়ে দ্রুত পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার হওয়া উচিত। জানা গেছে, ধর্মঘটের প্রভাবে প্রতিকেজি সবজিতে গড়ে ১০-১৫ টাকা দাম বেড়ে গেছে। এভাবে আরও কয়েকদিন চলতে থাকলে সব ধরনের জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতোমধ্যে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে প্রতিকেজি ১২৫-১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আদা বেড়ে ১৪০-১৮০ এবং রসুন ৫০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে বড় আকারের প্রতিকেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকা, যা একদিন আগে বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা। এক দিনের ব্যবধানে ২০ টাকা বেড়ে লাল টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে গাজর বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা। ৫৫-৬০ টাকা কেজির বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়। এছাড়া ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে প্রতি পিস বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, ফুলকপি ৬০-৭০ টাকা, লাউ ৫০-৬০ টাকা, জালি কুমড়া ৪০ টাকায়। আর ৫ টাকা বেড়ে প্রতি আঁটি কলমি শাক বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা, লাল শাক ২০ টাকা, লাউ শাক ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, পালং শাক ২৫ থেকে ৩০ টাকা, পুঁই শাক ২৫ থেকে ৩০ টাকা। কাপ্তান বাজারের ব্যবসায়ী খলিল জনকণ্ঠকে বলেন, দুদিন ধরে পাইকারি বাজারে সবজির দাম চড়া। ধর্মঘটের কারণে মালামাল আসতে পারছে না। যা এসেছে তাতে খরচ বেশি লেগেছে, তাই দাম বেশি দিতে হয়েছে।
×