ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ইভিএম ব্যবহারের সুযোগ রেখে আরপিও অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৬:১১, ৩০ অক্টোবর ২০১৮

ইভিএম ব্যবহারের সুযোগ রেখে আরপিও অনুমোদন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম ব্যবহারের সুযোগ রেখে সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আইন-২০১৮ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। চলতি সংসদ অধিবেশনে এটি পাস হওয়ার সুযোগ না থাকায় রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে এটি কার্যকর হবে। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ আইনের সংশোধনীর খসড়ার অনুমোদন দেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, সংশোধিত আইনে নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সুযোগ রাখা হয়েছে। ইভিএম ব্যবহারের মাত্রা ও ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ কমিশনই ঠিক করবে কোথায় এটি ব্যবহার করতে হবে, পরিমাণ কেমন এবং আদৌ ব্যবহারের প্রয়োজন আছে কিনা তা দেখভালের পূর্ণ ক্ষমতা ও স্বাধীনতা কমিশনকে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, চলতি সংসদ অধিবেশন যেহেতু শেষ হয়ে যাচ্ছে তাই এই সংশোধনী পাস হওয়ার সুযোগ নেই। তাই আইনটি রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে কার্যকর হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইভিএম-এর অপব্যবহার প্রসঙ্গে আইনের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ইভিএম-এর অপব্যহারে সর্বোচ্চ সাত বছর ও সর্বনিম্ন তিনবছর সশ্রম কারাদ-ের বিধান রাখা হয়েছে। সংশোধিত আরপিওতে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের সাত দিন আগে খেলাপী ঋণ নিয়মিতকরণের যে বিধান ছিল তা সহজ করে আগের দিন পর্যন্ত করা হয়েছে। ইভিএম সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব দূর করতে ২৬টি ‘সেফটি মেজারের’ কথা বলা হয়েছে। এতে মানুষের মনে ইভিএম সম্পর্কে ভুল ধারণা দূর করতে বিভিন্ন উপধারা যুক্ত করা হয়েছে। ইভিএমে কোন নেটওয়ার্ক যুক্ত হয় না। টেম্পারিং করারও কোন সুযোগ থাকবে না। এর আগে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানমের নেতৃত্বে আরপিও সংস্কারের জন্য একটি কমিটি করা হয়। আরপিও সংস্কারের বিষয়ে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের মতামত নেয়া হয়। মাঠ কর্মকর্তা ও সংলাপে পাওয়া সুপারিশ পর্যালোচনা করে এই কমিটি সুপারিশ তৈরি করে। এরপর গত ৩০ আগস্ট নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এক সভায় আরপিও সংশোধনীর প্রস্তাব চূড়ান্ত করে ভেটিংয়ের (পরীক্ষা-নিরীক্ষা) জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগে পাঠানো হয়। ভেটিংয়ের পর এটি গত সপ্তাহে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়। চলতি বছর ডিসেম্বরের শেষ বা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের লক্ষ্য থাকলেও বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলো এর মাধ্যমে ভোট গ্রহণের বিরোধিতা করছে। তাদের আশঙ্কা এ ব্যবস্থায় সরকার ভোট কারচুপি করবে। এছাড়া এর আগে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করে কমিশনের এ সংক্রান্ত বৈঠক ত্যাগ করেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হার কমেছে ॥ চলতি বছরের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর) মন্ত্রিসভায় নেয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার কমেছে এক দশমিক ৪৬ শতাংশ। এ সময়ে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৭২ দশমিক ২৯ শতাংশ। গত বছর একই সময়ে এ হার ছিল ৭৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। মন্ত্রিসভা বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে ২০১৮ সালের তৃতীয় ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১০টি মন্ত্রিসভা বৈঠক হয়। এতে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ৮৩টি। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়েছে ৬০টি। ২৩টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৭২ দশমিক ২৯ শতাংশ।
×