ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

একনেক বৈঠকে উঠছে আজ

বগুড়া-সিরাজগঞ্জ ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ৩০ অক্টোবর ২০১৮

বগুড়া-সিরাজগঞ্জ ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে

সমুদ্র হক ॥ শেষ পর্যন্ত বহু প্রতীক্ষিত উত্তরবঙ্গের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার দ্রুত যোগাযোগের বগুড়া-সিরাজগঞ্জ ডুয়েল গেজ রেললাইন নির্মাণ কাজ শীঘ্রই শুরু হচ্ছে। আজ (মঙ্গলবার) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য উত্থাপিত হচ্ছে। ৫ হাজার ৫শ’ ৮০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ের এই প্রকল্পটির অর্থের জোগান হয়েছে। ভারতীয় লেটার অব ক্রেডিটের (এলসি) আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। রেলপথ বিভাগের উর্ধতন সূত্র বিষয়টি জানিয়েছে। আশা করা হয়েছে ২০২১ সালের মধ্যেই রেলপথ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। পরামর্শক নিয়োগ হয়েছে। একই সূত্র জানায়, এই রেলপথে পূর্বের প্রস্তাবিত ৭২ কিলোমিটার রেললাইনের স্থলে বর্তমানে ৮৬ দশমিক ৫১ কিলোমিটার সরাসরি মিশ্র গেজ (ডুয়েল গেজ) এবং ১৬ কিলোমিটার লুপ রেলপথ ডুয়েল গেজসহ মোট ১শ’ ২ দশমিক ৮১ কিলোমিটার রেলপথ নির্মিত হবে। বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জের এম মনসুর আলী রেলস্টেশন পর্যন্ত মূল রেললাইন হবে। তার সঙ্গে বগুড়াকে জংশন করে লুপ রেলপথ হবে। নতুন প্রজেক্ট প্রোফাইলে বগুড়াকে রেল জংশনে উন্নীত ও দশটি নতুন রেলস্টেশন নির্মাণ করা হবে। রেলপথের নক্সা তৈরি, স্টেশনের সংখ্যা নির্ধারণসহ আনুষঙ্গিক সকল কাজ শেষ হয়ে ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রোফাইলে (ডিপিপি) অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। যা আজ উত্থাপিত হচ্ছে। উল্লেখ্য, প্রকল্পটি গেল জুন মাসে একনেক বৈঠকে যাওয়ার কথা ছিল। প্রকল্পটিকে আরও আধুনিকায়ন করে আজ উত্থাপন করা হচ্ছে। এই রেলপথ নির্মাণে বগুড়া সীমানায় ৫৪ কিলোমিটার রেললাইনের জন্য ৫শ’৬০ একর ভূমি এবং সিরাজগঞ্জ সীমানায় ৩২ কিলোমিটার রেলপথের জন্য ৪শ’ একর ভূমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে। মোট ৯শ’৬০ একর ভূমির মূল্য নির্ধারণের কাজ শেষ হয়েছে। একনেক বৈঠকে প্রকল্প অনুমেদিত হওয়ার পর জেলা প্রশাসকগণের কাছে রেললাইনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের নির্দেশ দেয়া হবে। প্রকল্পের আওতায় রেললাইন নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে এভাবে- বগুড়া রেলস্টেশন থেকে আড়াই কিলোমিটার পশ্চিমে ছোট বেলাইল এলাকা থেকে সিরাজগঞ্জের এম মনসুর আলী রেলস্টেশন পর্যন্ত ৮৬ দশমিক ৫১ কিলোমিটার। বগুড়ার পশ্চিমের কাহালু রেলস্টেশন থেকে রানীরহাট পর্যন্ত ১৬ দশমিক ৩০ কিলোমিটার। এটি হবে কানেকটিভিটি লুপ রেললাইন। লুপ রেললাইন নির্মাণের যৌক্তিকতা হলো : সান্তাহার থেকে ছেড়ে যাওয়া ঢাকাগামী এবং ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া সান্তাহার হয়ে দিনাজপুরের পার্বতীপুরগামী ট্রেনগুলো যাতে বগুড়া স্টেশন এড়িয়ে সরাসরি চলাচল করতে পারে সেজন্য কাহালু-রানীরহাট রেললাইন নির্মিত হবে। এই দুই রেলপথ মিলিত হওয়ার কারণে বগুড়া নগরী থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে রানীরহাটে একটি রেল জংশন নির্মিত হবে। যা হবে বগুড়া জংশন। নতুন এই রেলপথের বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত দশটি পয়েন্টে নতুন রেলস্টেশন নির্মিত হবে। যার মধ্যে আছে : শেরপুর, চান্দাইকোনা, রায়গঞ্জ, কিষানদিয়া ও সদানন্দপুর। নতুন এই পথে রেল সেতু রেল ক্রসিং ছাড়াও সর্বাধুনিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা, কম্পিউটার হটলাইন ও কন্ট্রোল অনলাইন টিকেটিং সিস্টেমসহ সকল ডিজিটাল পদ্ধতি থাকবে।
×