ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চাকুরিতে বয়সসীমা বাড়ানোর দাবী করলের রওশন এরশাদ

প্রকাশিত: ০৪:১৫, ২৯ অক্টোবর ২০১৮

চাকুরিতে বয়সসীমা বাড়ানোর দাবী করলের রওশন এরশাদ

সংসদ রিপোর্টার ॥ চাকুরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল ও চাকুরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবী জানিয়েছেন সংসদে বিরোধী দলের নেতা বেগম রওশন এরশাদ। তিনি গণতন্ত্রের সুন্দর্য রক্ষায় আগামী নির্বাচনে সকলে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, আসুন সবাই মিলেমিশে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জনগণের রায় নিয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করি। স্বাধীনতার পর এই দশম জাতীয় সংসদের মতো কার্যকর অধিবেশন আর হয়নি। আমরা সংসদের পবিত্রতা রক্ষা করেছি। তিনি আগামী নির্বাচনের সময় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবী জানান। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সোমবার সংসদের সমাপনি বক্তব্যে অংশ নিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ এবং স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজী। আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দলের নেতা বেগম রওশন এরশাদ বলেন, দশম জাতীয় সংসদ অধিবেশন শেষ হলেও সংসদ বহাল থাকবে। পাঁচটি বছরে আমরা দেশবাসীর কল্যাণে কতটুকু করতে পেরেছি তা তারাই বিচার করবেন। তবে আমরা সংসদের পবিত্রতা রক্ষা করেছি। আমরা যেভাবে প্রতিটি ইস্যুতে আলোচনা করেছি, অতীতে কোন সংসদে তেমন হয়নি। উন্নত গণতান্ত্রিক দেশে ঘরের সমস্যা বাইরে টেনে নিয়ে রক্তাক্ত পথে যায়নি বলেই তারা এগিয়ে গেছে। আসুন আমরা গণতান্ত্রিক সুন্দর্য রক্ষা করি, নির্বাচনের অংশ নিয়ে জনগণের রায় নিয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করি। কাউকে নিঃশ্বেস করার পথে না যাই। তিনি বলেন, নির্বাচনের মধ্যে সার্বজনীনতা বিদ্যমান। নির্বাচন সুষ্ঠু সমাজ গড়ার ভিত্তি। তাই যেভাবে নির্বাচনটা সবাই মিলেমিশে অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে যেন অবাধ ও মুক্তভাবে নির্বাচন পরিচালনার সুযোগ দেয়া হয়। নির্বাচন এলেই সংখ্যালঘুরা চিন্তাই পড়ে যায়। তাদের শান্তি যেন বিঘিœত না হয় সেজন্য তাদের পুর্ণ নিরাপত্তা দিতে হবে। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মই আমাদের দেশের ভবিষ্যত। তরুণদের বেকার সমস্যা দূর করতে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে কাজ করতে হবে। চাকুরির বয়সসীমা ৩৫ বছর বাড়ানোর বিষয়টি মায়ের মমতা দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে হবে। মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি পুলিশ বাহিনীর জন্য পেনশনের পরেও রেশনিং ব্যবস্থা নিশ্চিত এবং নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যতকে অন্ধকারে ঠেলে না দিতে স্মার্ট ফোনের ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির দাবী জানান। সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, আন্দোলন ও নির্বাচন বানচালের নামে বিএনপি-জামায়াত জোটের অগ্নিসন্ত্রাস, হেফাজতকে দিয়ে তান্ডবের চেষ্টা এবং খালেদা জিয়ার পুড়িয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যার ঘটনা দেশের মানুষ কোনদিন ভুলবে না। নানা বাধা ও প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে নবম জাতীয় সংসদ থেকে উন্নয়নের যে ভীত রচিত হয়েছিল, টানা দুই মেয়াদে বাংলাদেশকে উন্নয়নকে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে নিয়ে গেছে বর্তমান সরকার। তবে ধনী-গরীবের বৈষম্য ও দুর্নীতি দূরীকরণে আমরা যথাযথ পদক্ষেপ নিতে পারিনি। তবে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নানারকম চক্রান্ত শুরু হয়েছে। এর আগে লাল টেলিফোনে প্রত্যাখ্যাত হলেও ঐক্যফ্রন্টের সংলাপে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি রাজনীতিতে ইতিবাচক হাওয়া বইবে। তবে সংলাপ হোক, তবে সংবিধানবিরোধী কোন শর্ত মেনে নেয়া হবে না। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, নবম সংসদের ধারাবহিকতায় দশম সংসদেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনন্য ভূমিকা পালন করেছেন। দুর্যোগ ও অন্ধকার থেকে দেশকে টেনে তুলে আলোর পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি। নবম জাতীয় সংসদ থেকেই জঞ্জাল পরিস্কার, বিচারহীনতার হাত থেকে দেশকে রক্ষা এবং দূর্বল অর্থনীতিকে শক্তিশালী পথে টেনে তুলেছেন। বিএনপি-জামায়াত প্রথম দিন থেকেই উন্নয়নের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির চেষ্টা করে। বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস, নাশকতা, জঙ্গীবাদ মোকাবেলা করে দশম জাতীয় সংসদ পাঁচ বছর পার করছে। নির্বাচন সন্নিকটে। ষড়যন্ত্রকারীরা আবারও নির্বাচন বানচালের চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। ড. কামাল হোসেন তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। ঐক্যফ্রন্টের মুখ হচ্ছে ড. কামাল, মুখোশ হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত। তাদের সাত দফার মধ্যেই নির্বাচন বানচালের চক্রান্ত জড়িত। নির্বাচন লক্ষ্য নয়, খালেদা-তারেকসহ সব অপরাধীদের রাজনীতিতে পুনর্বাসনই তাদের উদ্দেশ্যে। এদের একচুল ছাড় দেয়া চলবে না, বরং তাদের চক্রান্ত শক্তহাতে দমন করতে হবে। শেখ হাসিনার বিকল্প কখনোই আগুণ সন্ত্রাসের মাতা খালেদা জিয়া নন, হতে পারে না। চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ বলেন, সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী সংসদে উপস্থিতির ক্ষেত্রে রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন। দশম জাতীয় সংসদে ১৯৩টি বিল পাস হয়েছে। সরকার ও বিরোধী দল মিলে সম্মিলিতভাবে দেশ ও জাতির কল্যাণে আমরা কাজ করেছে। দশম জাতীয় সংসদ ঐতিহাসিক ভূমিকা স্থাপন করেছে। দেশের মানুষ পুনরায় নৌকায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে দেশ সেবার সুযোগ দেবে ইনশাল্লাহ।
×