ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

এই মুহূর্তে সড়ক আইন বদলে দাবি মানা সম্ভব নয় ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৭:৩৬, ২৯ অক্টোবর ২০১৮

এই মুহূর্তে সড়ক আইন বদলে দাবি মানা সম্ভব নয় ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এই মুহূর্তে সড়ক পরিবহন আইন পরিবর্তন করে শ্রমিকদের দাবি মেনে নেয়া সম্ভব নয়। একই সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবি মানতে হলে তার সংবিধান সংশোধন করতে হবে। কিন্তু এখন আর কোন সুযোগ নেই। রবিবার সেতু ভবনে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। পরিবহন শ্রমিকদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই মুহূর্তে বলতে চাই, ধর্মঘট প্রত্যাহার করুন, মানুষকে কষ্ট দিয়ে লাভ নেই। এখন আইন পরিবর্তন করতে তো পারব না। পরবর্তী পার্লামেন্ট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। পরিবহন শ্রমিকদের ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, অপেক্ষা করুন, ন্যায়সঙ্গত কোন বিষয় থাকলে পরে আলোচনার মাধ্যমে বিবেচনা করা হবে। কাদের বলেন, ঐক্যফ্রন্ট হা-হুতাশ করছে, অপজিশন তো একটু ক্রিটিকাল হবেই। অপজিশনের কাজই হলো ক্রিটিসাইজ করা। তারা সাত দফা দাবি দিয়েছে। এই মুহূর্তে সাত দফা মেনে নিতে হলে সংবিধান বদলাতে হবে, যা কোন অবস্থাতেই সম্ভব নয়। কাজেই এ দাবির বিষয়ে তারা যদি স্ট্রাইক করে, অনড় থাকে, তাহলে অস্থিরতার পরিবেশ তৈরি হতে পারে। দেশে এখন শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ বিরাজ করছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের দরকার একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন। এই মুহূর্তে ইসি পুনর্গঠনের কোনো সুযোগ নেই। রাষ্ট্রপতি একটি সার্চ কমিটি গঠন করে সব দলের প্রতিনিধিকে নিয়ে ইলেকশন কমিশন গঠন করেছেন। কাজেই এটা পরিবর্তন করার কোন সুযোগ নেই। তারপরও যদি তারা পরিবর্তন চায় তাহলে বুঝতে হবে, আসলে তারা ইলেকশন চায় কি না। ১০ বছর পার হলো, আর কবে আন্দোলন ॥ বিকেলে পল্লবীতে হারুন মোল্লা ঈদগাহ ময়দানে এক গণসংযোগ অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বিএনপির উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা আন্দোলনের কথা বলেন গত ১০ বছর ধরে। ঈদের পর আন্দোলন। ঈদ আর আসে না। দেখতে দেখতে ১০ বছর পার হয়ে গেল, কবে হবে আন্দোলন? ঈদ তো আর আসে না। বিএনপির আন্দোলন সবাই দেখেছে। এ সময় বিএনপিকে ‘ভুয়া, ভুয়া, ভুয়া বলে সেøাগান দেন ওবায়দুল কাদের।’ ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনে এক আসন থেকে হয়তো মনোনয়ন জমা দেবেন ১০ জন। তাদের মধ্য থেকে শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দেবেন, বাকিরা তার হয়ে কাজ করবেন। কেউ ঘরের মধ্যে ঝামেলা সৃষ্টি করলে মনে রাখবেন, পোস্টারে নাম লিখে, ছবি ছাপিয়ে কোন লাভ নেই। নেতা হতে হলে মানুষের হƒদয়ে নাম লেখাতে হবে। সেতুমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার উন্নয়ন বিএনপির চোখে পড়ে না। তাদের চশমা দরকার। উন্নয়ন দেখতে হলে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের নেতারা চশমা লাগাতে পারেন। তাহলেই দেখবেন পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেল দৃশ্যমান। চশমা লাগালে অন্য কিছু নয়, আপনারা শুধু উন্নয়নই দেখতে পারবেন। কাদের বলেন, ‘এখন সবার হাতে মোবাইল। কৃষক, রিক্সাওয়ালা, দিনমজুরসহ সকলের কানে মোবাইল। কে দিয়েছে এই মোবাইল, ইন্টারনেট? এখন আমাদের নিজস্ব স্যাটেলাইট হয়েছে। নিজস্ব স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এতে ভূমিকা রাখছেন বঙ্গবন্ধুর নাতি সজীব ওয়াজেদ জয়। সেই জয়কে আপনারা (বিএনপি) ভয় পান।’ কাদের বলেন, এখন ঘরে ঘরে বিদ্যুত। আগে মাগরিবের নামাজের সময়, ইফতারের সময়, সেহরির সময় খালেদা (বিদ্যুত) চলে যেতেন! এই খালেদা জিয়া মানে কি? খালেদা জিয়া গেল মানে বিদ্যুত চলে গেল। আর কিছুদিন পর বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুত পাবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা কামালের সমালোচনা করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ড. কামাল আজ আপনি কথায় গেলেন? খুনী সন্ত্রাসীদের সঙ্গে হাত মেলালেন! তারেক রহমানের নেতৃত্ব আপনি মেনে নিয়েছেন। এটা- লজ্জা, লজ্জা, লজ্জা। আমরা আপনার সঙ্গে অসম্মানের সঙ্গে কথা বলব না, তবে আমরা আপনাকে সাবধান করে বলতে চাই, আপনি বহুরূপী শয়তানের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কামাল সাহেব বঙ্গবন্ধুর সহকর্মী হয়ে তার খুনীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন, যারা যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন, যারা স্বীকৃত সন্ত্রাসী, তাদের সঙ্গে হাত মেলানোর ফল আপনাকে একদিন পেতেই হবে। এজন্য তাকে কঠিন শাস্তি পেতে হবে।’ ঢাকা-১৬ আসনের সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লার সভাপতিত্বে এই গণসংযোগে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
×