ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রুপসেরা হওয়ার লড়াই বাংলাদেশের কিশোরদের

প্রকাশিত: ০৬:৪৯, ২৯ অক্টোবর ২০১৮

 গ্রুপসেরা হওয়ার লড়াই বাংলাদেশের কিশোরদের

জাহিদুল আলম জয় ॥ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের মেয়েরা হালি হালি গোল করছে প্রতিপক্ষের জালে। কিন্তু ছেলেদের ঠিক সেভাবে খুঁজে পাওয়া যেত না। অবশেষে সেই বৃত্ত ভেঙ্গেছে বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৫ জাতীয় ফুটবল দল। নেপালে চলমান ছেলেদের সাফ অনুর্ধ-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই প্রতিপক্ষের জালে গোলোৎসব করেছে বাংলাদেশের কিশোররা। ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে মালদ্বীপকে ৯-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে এক খেলা হাতে রেখেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এবার গ্রুপের সেরা অর্থাৎ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মিশন অধিনায়ক মেহেদী হাসানের দলের। এ লক্ষ্যে আজ দুপুরে স্বাগতিক নেপালের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। নেপালের ললিতপুরের আনফা কমপ্লেক্সের এই ম্যাচে হার এড়ালেই গ্রুপের এক নম্বর দল হবে লাল-সবুজরা। নেপালও এক ম্যাচ খেলে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে। কিন্তু বাংলাদেশ যেখানে মালদ্বীপকে নয় গোলে হারিয়েছে সেখানে একই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নেপাল করেছে চার গোল। গোল পার্থক্যে তাই বাংলাদেশ পাঁচ গোলে এগিয়ে আছে। হিমালয় কন্যাদের বিরুদ্ধে তাই স্পষ্ট ফেবারিট হয়েই মাঠে নামছে বাংলার কিশোররা। ড্রতেই গ্রুপসেরা নিশ্চিত হলেও জিততে চায় বাংলাদেশ দল। বাংলাদেশ কোচ মোস্তফা আনোয়ার পারভেজ ম্যাচটি সামনে রেখে বলেন, প্রথম ম্যাচ বড় ব্যবধানে জিতে ছেলেদের আত্মবিশ্বাস আরও বেড়েছে। সবাই জানে ড্র করলেই গ্রুপসেরা হওয়া যাবে। কিন্তু ছেলেরা ড্র নয় জয়ের জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে। আশা করছি জয় দিয়েই সেমিফাইনালের প্রস্তুতি সারতে পারব। অবশ্য শেষ চারের প্রতিপক্ষ কে হবে এসব নিয়ে ভাবছে না বাংলাদেশ। নেপাল ম্যাচ নিয়েই যত চিন্তা। গত সাফে এই দলটির কাছেই সেমিফাইনালে হেরেছিল। এবার সেই হারের বদলা নেয়ার সুযোগ। হিমালয়ের দেশকে হারিয়ে গ্রুপসেরা হতে চান বাংলাদেশ কোচ। বলেন, গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে আমরা সেমিফাইনাল খেলতে চাই। নেপাল শক্তিশালী দল। তাদের শক্তি সম্পর্কে আমরা জানি। তাদের হারানোর জন্য সর্বোচ্চটা দিয়ে খেলব আমরা। প্রথম ম্যাচের জয় নিয়ে বাংলাদেশ কোচ বলেন, আমরা ভেবেছিলাম মালদ্বীপ আমাদের ওপর চড়াও হয়ে খেলবে। কিন্তু আমরাই ওদের ওপর আধিপত্য বিস্তার করেছি। ছেলেরা নিজেদের সেরাটা দিয়েছে বলেই এত বড় জয় এসেছে। নেপালের বিপক্ষে আরও ভাল খেলতে চাই। বাংলাদেশ অধিনায়ক মেহেদী হাসানও আত্মবিশ্বাসে ভরপুর। মালদ্বীপকে উড়িয়ে দেয়ার পর তিনি বলেন, বড় ব্যবধানে জিতলেও এই জয় নিয়ে পড়ে থাকলে আমাদের চলবে না। সামনে নেপালের বিরুদ্ধে লড়াই। নেপালকে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। এ জন্য আমাদের আরও বেশি পরিশ্রম করতে হবে। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের দুর্দান্ত সূচনায় সবচেয়ে বড় অবদান নিহাত জামান উচ্ছাসের। এই কিশোর ফরোয়ার্ড দলের নয় গোলের মধ্যে একাই হ্যাটট্রিকসহ করেন চার গোল। সঙ্গত কাররেই বেজায় খুশি তিনি। নামের সঙ্গে মিল রেখে ‘উচ্ছ্বাস’ তার কণ্ঠে। তিনি বলেন, এক ম্যাচে চার গোল করার আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। শুধু বলব, আমি খুব খুশি। আন্তর্জাতিক ম্যাচে হাটট্রিক করা অনেক কঠিন। নেপালের বিপক্ষেও হ্যাটট্রিকের চেষ্টা করব। ২০১৫ সালে নিজেদের মাটিতে এই আসরের শিরোপা জেতা বাংলাদেশ পরের আসরে (২০১৭) শিরোপা ধরে রাখতে পারেনি। গত বছর সেমিতে হারা বাংলার বালকেরা হয়েছিল তৃতীয়। হারানো সেই সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধারের মিশনে এবার শুরুটা অসাধারণ হয়েছে। আপাতত এখন মিশন গ্রুপের সেরা হওয়া। তারপর সেমিফাইনাল ও ফাইনাল জিতে মসনদ পুনরুদ্ধারের সঙ্কল্প শুনিয়েছেন কিশোর ফুটবলার। অথচ এই আসরে বাংলাদেশ গেছে ৩২ সদস্যের দল নিয়ে। যার মধ্যে পাঁচজন কোচ এবং চারজন কর্মকর্তা থাকলেও ফিজিও বা চিকিৎসক নেই। দল নিয়ে সমালোচনা হলেও প্রথম ম্যাচেই তা ধুয়ে দিয়েছে ছেলেরা। এখন প্রত্যাশিত ফলাফল বয়ে আনতে পারলে সমালোচনা পেছনে ফেলে প্রশংসায় জুটবে কর্তাদের কপালে।
×