ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

খুশকির সমস্যায় ঘরোয়া সমাধান

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ২৯ অক্টোবর ২০১৮

 খুশকির সমস্যায় ঘরোয়া সমাধান

আমাদের জীবনে খুব পরিচিত একটি শব্দ ‘খুশকি’। দৈনন্দিন চলার পথে এই সমস্যায় আমাদের অনেককেই ভুগতে হয়। খুশকি মূলত এক ধরনের ছত্রাক, যা আমাদের মাথার লোমকূপে বিভিন্ন ধরনের ময়লা ও ধুলোবালি জমে হয়ে থাকে। খুশকি সাধারণত আমাদের মাথার উপরের অংশে দেখা দেয়। তবে চুল ছাড়াও শরীরের বিভিন্ন লোমকূপেও খুশকি দেখা দিতে পারে। ‘সেবেরিয়েক ডারমেটাইটিস’ বা ‘সেবরিয়া’ নামক চর্মজনিত ব্যাধি থেকেই মূলত খুশকির সৃষ্টি। এই রোগে আক্রান্ত হলে মাথার তালুর ত্বক অনেক বেশি শুষ্ক হয়ে যায় এবং এই শুষ্কতা ত্বকের উপরিঅংশে খুশকি তৈরিতে সাহায্য করে থাকে। খুশকি হলে মাথায় চুলকানো, জ্বালা করা, অস্বস্তি হওয়া, চুল পড়াসহ অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এ ছাড়াও খুশকি হলে শরীরে বা কাপড়- চোপড়ে সাদা দানার মতো পড়ে, যার কারণে বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। মানুষের জীবনপ্রবাহে যে কোন সময় খুশকি দেখা দিতে পারে, তবে বয়ঃসন্ধিকালীন এবং প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যেই খুশকির আধিক্য দেখা যায়। খুশকি হওয়ার কারণ আবহাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খুশকির আধিক্যের তারতম্য ঘটে থাকে। বাংলাদেশে সাধারণত শীতকালে খুশকির সংক্রমণ অনেক বেশি চোখে পড়ে। আবার মাথার ত্বকের ভিন্নতার উপরও খুশকি অনেকাংশে নির্ভর করে। অতিরিক্ত খুশকি হলে মাথার ত্বকে অনেক ধরনের জটিল সমস্যা হতে পারে। তাই চুলে খুশকি দেখা দিলে দ্রুত তা দূর করার চেষ্টা করা উচিত। আর খুশকি দূর করার আগে আমাদের খুশকির আসল কারণগুলো জেনে নিতে হবে। শুষ্ক ত্বক মাথার শুষ্ক ত্বক খুশকি হওয়ার অন্যতম চারণভূমি। শীতকালে আবহাওয়া অনেকটাই আর্দ্র থাকে বলে ঐ সময় মাথার ত্বক অনেকটাই শুষ্ক হয়ে পড়ে। তাই শীতকালে খুশকির প্রাধান্য বেশি থাকে। তবে বর্তমানে তাপানুকূল ব্যবস্থায় গরম ও ঠা-া আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে গ্রীষ্মকালেও মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। মাথায় ময়লা জমলে মাথায় অতিরিক্ত ময়লা জমা মাথার ত্বকের জন্য মোটেও ভাল কিছু নয়। অতিরিক্ত ময়লা জমার ফলে খুব সহজেই খুশকি আক্রমণ করতে পারে। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় ঘরে এবং বাইরে প্রচুর ধুলোবালির সম্মুখীন হতে হয়। এর ফলে নিজের অজান্তেই আমাদের মাথায় অনেক ময়লা জমে থাকে। ফলে মাথায় ছত্রাকের সংক্রমণ হতে পারে। তৈলাক্ত তালুর ত্বক শারীরিক গঠনের ভিন্নতার কারণে আমাদের মাথার ত্বক বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। অনেকের মাথার ত্বকে তৈলাক্ত ভাবের আধিক্য থাকাটা মোটেও অস্বাভাবিক কিছু নয়। এছাড়াও হরমোনজনিত কারণে অনেকের মধ্যে ঘামের আধিক্য দেখা যায়। এই ধরনের ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও মাথার ত্বকে অনেক বেশি খুশকি দেখা যেতে পারে। ম্যালাসেজিয়া ছত্রাক আমাদের সকলের ত্বকেই কম-বেশি এই ছত্রাকের উপস্থিতি রয়েছে। নির্দিষ্ট পরিমাণ এই ছত্রাকের উপস্থিতি কোন প্রকার সমস্যার সৃষ্টি করে না। তবে যখন ত্বকে এর পরিমাণ বাড়তে থাকে, তখন ত্বক থেকে তেল শুষে নিয়ে ত্বককে অনেক বেশি শুষ্ক করে তোলে। ফলে ত্বকে ধীরে ধীরে মৃত কোষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এর ফলে মৃত কোষগুলো লোমকূপ থেকে খুশকির সৃষ্টি করে। বংশগত কারণ অনেক সময় বংশগত কারণকেও খুশকির হওয়ার জন্যে অনেকাংশে দায়ী করা হয়ে থাকে। এছাড়াও হরমোনজনিত কারণেও খুশকি দেখা যেতে পারে। এই ধরনের সমস্যার ক্ষেত্রেও অবশ্যই অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ বিশেষজ্ঞগণ ব্যক্তিজীবনে অতিরিক্ত মানসিক চাপ, কাজের চাপ, দুশ্চিন্তা, অধিক পরিশ্রম, ঘুমের ঘাটতি, সুশৃঙ্খল জীবনযাপনের অভাব ইত্যাদিকে খুশকির অন্যতম কারণ হিসেবেও উল্লেখ করে থাকেন। ত্বকের উপযোগী পণ্যের ব্যবহার না করলে আমাদের দেশে অনেকেরই প্রসাধনী সামগ্রী ব্যবহারে বিশেষ অজ্ঞতা বা উদাসীনতা লক্ষ্য করা যায়। নিম্নমানের এবং ত্বকের অনুপযোগী প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে মাথার ত্বক বা চুলের বিশেষ ক্ষতি হতে পারে। ত্বকের উপযোগী সামগ্রী খুঁজে পেতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া যেতে পারে। খুশকি থেকে মুক্তি পেতে করণীয় খুশকির সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া মোটেও সহজ ব্যাপার নয়। অনেকেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অতিরিক্ত রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার করে থাকেন, যার ফল অনেক সময় আরও খারাপ হয়ে উঠতে পারে। যাপিত ডেস্ক
×