ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বঞ্চিতদের হাসি ফোটাতে ‘হাসিমুখ’

প্রকাশিত: ০৪:২০, ২৯ অক্টোবর ২০১৮

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বঞ্চিতদের হাসি ফোটাতে ‘হাসিমুখ’

শিশুরা ছোটবেলায় যা শেখে, যা অনুকরণে বড় হয়, পরবর্তীতে তারই প্রতিফলন ঘটে তার দৈনন্দিন জীবনে। শিশুদের মাঝে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো গেলে তার ধারাবাহিকতা শিশুরা বড় হয়েও বজায় রাখে। এমন চিন্তাধারা থেকেই শিশুদের মাঝে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে ভিন্নরকম এক উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘হাসিমুখ’। ময়মনসিংহের বয়ড়া ইউনিয়নের ছালাকান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থীকে সঠিক উপায়ে হাত ধোয়া শেখানো ও স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে করা হয় এমনই এক ক্যাম্পেইন। সংগঠনটির শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী সদস্যরা শিশুদের মাঝে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার উপকারিতা ও সঠিক উপায়ে হাত ধোয়ার পদ্ধতিগুলো তুলে ধরে। শিশু মনকে বোঝানোর জন্য প্রজেক্টরে দেখানো হয় হাত ধোয়া সম্পর্কিত পর্বের মিনা কার্টুন, সিসিমপুরসহ বিভিন্ন প্রামাণ্য চিত্র। শিশুদের হাতে হাতে শিখিয়ে দেওয়া হয় হাত ধোয়ার সঠিক কৌশল। খাওয়ার আগে-পরে, বিভিন্ন কাজকর্ম শেষে হাত ধোয়ার বিষয়গুলোও শেখানো হয় তাদের। শিশুদের মাঝে এমন স্বাস্থ্য সচেতনতা গড়ার প্রত্যয়ে করা ক্যাম্পেইনটিতে পাশে ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষিকাও। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার জাহান ভূঁইঞা বলেন, রোগজীবাণু ছড়ানোর প্রধান মাধ্যমই হলো হাত। শিশুরা ছোটবেলা থেকে যা দেখে, যা করে, তাতেই অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। তাদেরকে যদি আমরা স্বাস্থ্য সচেতনতার বিষয়গুলোতে অভ্যস্ত করতে পারি, তাহলে স্বাস্থ্য সচেতন একটি ভবিষ্যত সমাজ গড়া সম্ভব। শিশুদের মাঝে তাই সঠিক কৌশলে হাত ধোয়া শেখানো ও এর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরতেই আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। ‘হাসিমুখ’। সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মাঝে হাসি ফোটানোর লক্ষ্য নিয়েই যাত্রা শুরু হয়েছিল সংগঠনটির। ২০১৭ সালের ২৬ মার্চ ১২ জন সদস্য নিয়ে সংগঠনটির যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে এর সদস্য প্রায় দেড় শতাধিক। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরের সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের নিয়ে কাজ করে চলছে সংগঠনটি। বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ, রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ, শীতে দুস্থ মানুষদের মাঝে কম্বল বিতরণ, এতিমখানায় শিশুদের মাঝে ঈদের পোশাক বিতরণের মতো বিভিন্ন কাজে ভূমিকা রেখেছে এই সংগঠন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান, স্থায়ী ডাস্টবিন বসানো, স্বাধীনতা দিবসে ক্যাম্পাসে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, পহেলা বৈশাখে শিশুদের খেলাধুলারও আয়োজন করে সংগঠনটি। সংগঠনের উদ্যোক্তা সুলতানা জাহান মুন বলেন, বঞ্চিতদের পাশে দাঁড়ানো, বঞ্চিতদের নিয়ে কাজ করায় অন্য রকম এক ভাললাগা খুঁজে পাই সবসময়। আমাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় কিছু মানুষের মুখে হাসি ফুটছে, এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। একসময় ক্যাম্পাসে থাকব না আমরা। কিন্তু আমাদের ‘হাসিমুখ’ থাকবে। নতুনরা এগিয়ে নিয়ে যাবে আমাদের এই সংগঠন। অব্যাহত রাখবে মানুষের মাঝে হাসি ফোটানোর এই প্রচেষ্টা। এটাই আমাদের প্রেরণা, আমাদের পথ চলার শক্তি। জাহিদ হাসান
×