ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচন বানচালের যারা ষড়যন্ত্র করছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে ॥ এরশাদ

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ২৮ অক্টোবর ২০১৮

নির্বাচন বানচালের যারা ষড়যন্ত্র করছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে ॥ এরশাদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নিজের অবস্থান পরিবর্তন করলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। গত সপ্তাহেও দলের এক অনুষ্ঠানে যথাসময়ে নির্বাচন হবে কিনাÑ এ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন বারবার মত পাল্টানো এই নেতা। হঠাৎ করে আবারও ভিন্ন কথা বলেছেন তিনি। বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে যে সংশয় ছিল তা এখন নেই। যারা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। এখন মাঠে শুধু আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি আর বিএনপি। শনিবার বনানীর জাপা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে ডিজিটাল পদ্ধতিতে দলের নির্বাচনী প্রচারাভিযান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, এক সময় আমার হাত-পা বাঁধা ছিল। এখনও বাঁধা। তারপরও এগিয়ে যাচ্ছি। হাত-পা বাঁধা থাকলেও সংশয় নেই। আশা করছি যথাসময়ে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। কারণ মানুষ বসে আছে পরিবর্তনের আশার। নির্বাচনই হলো রাজনীতি ও ক্ষমতা পরিবর্তনের একমাত্র পথ। এরশাদের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা পীরজাদা শফিউল্লাহ আল মনিরের সঞ্চালনায় জাপা মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়, এস এম ফয়সাল চিশতি, মেজর (অব) খালেদ আখতারসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এরশাদ বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সিদ্ধান্ত কী হবে তা নির্ভর করছে বিএনপির গতিবিধির ওপর। বিএনপি যদি ভোটে আসে তাহলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকে জোটগত নির্বাচন করবে জাতীয় পার্টি। আর বিএনপি যদি না আসে তাহলে ৩০০ আসনে দলীয় প্রার্থী দেয়া হবে। জাতীয় পার্টি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত একথা উল্লেখ করে এরশাদ বলেন, এবার নির্বাচনী প্রচারে স্লোগান পল্লীবন্ধুর হাত ধরে দেশ শাসনে আরেকবার। এ স্লোগানের মধ্য দিয়ে আমার নির্বাচনী প্রচার চলবে। নির্বাচনী প্রচারে জাতীয় পার্টির নয় বছরের শাসনামলের কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হবে। পীরজাদা জানান, জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে প্রতিদিন চার কোটি ভোটারের কাছে জাতীয় পার্টির প্রচার এবং এরশাদের কথা তুলে ধরা হবে। ৪০ আইটি বিশেষজ্ঞ প্রতিদিন ৩ শিফটে ভাগ হয়ে ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল প্রচার চালাবেন। প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ার বিষয়েও কথা বলেন এরশাদ। তিনি বলেন, অল্পদিনের মধ্যেই মনোনয়ন বোর্ড গঠন করা হবে। প্রার্থীদের সাক্ষাতকার নিয়ে যোগ্য ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেয়া হবে। এ বিষয়ে দলের মধ্যে ইতোমধ্যে আলোচনা চলছে। আমরা ইতোমধ্যেই যোগ্য প্রার্থী বাছাই করেছি। তাদের মধ্য থেকে আরও বেশি যোগ্যদের চূড়ান্ত করা হবে। মনোনয়ন দেয়ার পর যেন বিজয়ী হতে পারে এ বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করতে চাই। তাহলে দলের সুনাম হবে। লাভবান হবে জাতীয় পার্টি। তিনি বলেন, জাপা আগের থেকে অনেক শক্তিশালী হয়েছে। আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ভাল রেজাল্ট করবে। দলের ডিজিটাল প্রচার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রতিদিন সাড়ে চার কোটি মানুষের কাছে জাপার কর্মকা- তুলে ধরা হবে। গুগলে একটি প্লাটফর্ম থাকবে যেখানে ক্লিক করলে জাতীয় পার্টির উন্নয়নের চিত্র ভেসে আসবে। প্রতিদানের সময় আওয়ামী লীগকে তেমন উদার দেখা যায় নাÑ মিলন ॥ জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন বলেছেন, আওয়ামী লীগ দীর্ঘ একুশ বছর পর জাপার সহযোগিতায় ৯৬ সালে ক্ষমতার স্বাদ পেয়েছে। ২০০৮ সালেও এরশাদের সহযোগিতায় মহাজোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে। এমনকি সরকারের চরম ক্রান্তিলগ্নে ১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অংশ না নিলে আওয়ামী লীগকে চরম খেসারত দিতে হতো। শনিবার দুপুরে রাজধানীর সুরিটোলা মাঠে বংশাল থানা জাপান এক কর্মিসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মিলন বলেন, ২০ অক্টোবরের মহাসমাবেশ প্রমাণ করেছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ-বিএনপির চেয়ে জাতীয় পার্টি কোন অংশে কম নয়। আমরা দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতার স্বার্থে মহাজোটে থেকেই নির্বাচন করতে চাই। কিন্তু এক্ষেত্রে ক্ষমতাসীনদেরও বিবেকবান হতে হবে। আমাদের একশ’ আসনে ছাড় দিতে হবে এবং আনুপাতিকহারে মন্ত্রিত্ব দিতে হবে। এটা আওয়ামী লীগের কাছে কোন করুণা নয়, আমাদের ন্যায্য হিস্যা। কর্মিসভায় হাজী মোঃ ফারুকের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন নগর জাপা নেতা আফতাব গনি, আমজাদ হোসেন পিন্টু, বিশাল হোসেন, হাজী শাহজাহান, কামাল হোসেন, মকবুল হোসেন প্রমুখ।
×