ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ইস্তানবুলে সিরীয় সঙ্কট নিয়ে চার দেশের শীর্ষ বৈঠক

প্রকাশিত: ০৩:৩০, ২৮ অক্টোবর ২০১৮

ইস্তানবুলে সিরীয় সঙ্কট নিয়ে চার দেশের শীর্ষ বৈঠক

তুরস্ক, রাশিয়া, ফ্রান্স ও জার্মানির নেতৃবৃন্দ সিরীয় গৃহযুদ্ধের একটি টেকসই রাজনৈতিক সমাধানে পৌঁছতে এবং বিদ্রোহী অধিকৃত উত্তরাঞ্চলীয় একটি প্রদেশে নাজুক অস্ত্র বিরতি সুসংহত করার জন্য শনিবার তুরস্কের ইস্তানবুলে এক শীর্ষ বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। খবর এএফপির। তুর্কী প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোগানের আতিথেয়তায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন, ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও জার্মান চ্যান্সেলর এঞ্জেলা মেরকেল এ শীর্ষ বৈঠকে বসেছেন। সিরীয় সংঘাতে ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৩ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের প্রশাসন সমর্থক রাশিয়া ও বিদ্রোহীদের প্রতি সমর্থক তুরস্ক এর আগে ইরানের সঙ্গে এ সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছেন। ঐ উদ্যোগসমূহ পাশ্চাত্যে প্রায়ই সন্দেহের সঙ্গে অভিনন্দিত হয়েছে। কিন্তু শনিবারের বৈঠকটি প্রথম শীর্ষ বৈঠক যেখানে তুর্কী ও রুশ নেতৃবৃন্দ ইউরোপীয় ইউনিয়নের অত্যন্ত দুই গুরুত্বপূর্ণ দেশের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসলেন। তুর্কী প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন শুক্রবার বলেছেন, বৈঠকে প্রাথমিক লক্ষ্য হবে একটি রাজনৈতিক সমাধানে পৌঁছবার পদক্ষেপ স্পষ্ট করা এবং একটি রোডম্যাপ স্থিরীকরণ করা। কালিন রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলুকে বলেন, বৈঠকে সিরিয়ার যুদ্ধোত্তর শাসনতন্ত্র প্রণয়নের বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হবে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানে এ শাসনতন্ত্র এক ক্রম অগ্রগতির উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে এসেছে। বিদ্রোহীদের সর্বশেষ বড় ঘাঁটি ইদলিবের চারদিকে অস্ত্রবিরতি সম্প্রসারণেরও চেষ্টা করা হবে এ শীর্ষ বৈঠকে। ত্রাণসংস্থাগুলো সতর্কতা উচ্চারণ করে বলেছে, সামরিক আক্রমণ অভিযানে ৭ বছরের এ যুদ্ধে সবচেয়ে মারাত্মক মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হতে পারে। সরকারী বাহিনীর আক্রমণ অত্যাসন্ন বুঝতে পেরে রাশিয়া ও তুরস্ক গত মাসে ৩০ লাখ মানুষ অধ্যুষিত ইদলিবের চারদিকে একটি অসামরিক বাফার জোন প্রতিষ্ঠায় সম্মত হয়। তারপরও, এ এলাকায় থেমে থেমে কামানের গোলাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। সিরীয় মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ গ্রুপ বলেছে, ইদলিবে শুক্রবার সিরীয় প্রশাসন বাহিনীর কামানের গোলাবর্ষণে ৭ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। অস্ত্রবিরতি চুক্তির পর ইদলিবে নিহতের সংখ্যা এটাই সবচেয়ে বেশি। শনিবারের শীর্ষ বৈঠকে ফ্রান্স ও জার্মানির অন্তর্ভুক্তিতে তুরস্কের দরকষাকষির অবস্থানের জন্য সহায়ক হতে পারে। কারণ, বৈঠকে যোগদানকারী তিনটি দেশই আসাদ প্রশাসন সম্পর্কে একই ধরনের মনোভাব পোষণ করে। এ কথা বলেছেন প্যারিসে সায়েন্সেস পো বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি বিজ্ঞানের অধ্যাপক জানা জাবুর। ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্কে স্বাভাবিক করার জন্য এরদোগান যে চেষ্টা চালাচ্ছেন তাতেও তিনি সফলতা পেতে পারেন বৈঠকে। ইস্তানবুলে সৌদি দূতাবাসে জামাল খাশোগি ২ অক্টোবর নিহত হওয়ার ঘটনার পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ শীর্ষ বৈঠক। তুর্কী সংবাদ মাধ্যম বলেছে, এরদোগান শীর্ষ বৈঠকের ফাঁকে এক-এক আলোচনায় এ সঙ্কট প্রসঙ্গও ওঠাবেন।
×