ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ

দেশের প্রথম পোষাপ্রাণী হাসপাতালের যাত্রা শুরু হচ্ছে কাল

প্রকাশিত: ০৫:০১, ২৭ অক্টোবর ২০১৮

 দেশের প্রথম পোষাপ্রাণী হাসপাতালের যাত্রা শুরু হচ্ছে কাল

বিভাষ বাড়ৈ ॥ দেশের প্রথম পেট হসপিটালের যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে আগামীকাল। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে ঢাকার পূর্বাচলে ২২ কাঠা জমির ওপর স্থাপিত ‘টিচিং এ্যান্ড ট্রেনিং পেট হসপিটাল এ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার’ নামে এ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হবে। ভেটেরিনারি শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানের দক্ষ গ্র্যাজুয়েট তৈরি, বিদেশে দক্ষ জনশক্তি রফতানির বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি করবে ব্যতিক্রমী এ প্রতিষ্ঠান। এখানে রোগাক্রান্ত মানুষের মতোই চিকিৎসা পাবে কুকুর, বিড়াল, খরগোশসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হলে নেয়া হবে আইসিইউতেও। ৩শ’ টাকা নিবন্ধনের মাধ্যমে এখানে দেয়া হবে কুকুরের চিকিৎসা। বিড়ালের জন্য গুনতে হবে ২শ’ টাকা। আর বিভিন্ন প্রজাতির পাখির জন্য খরচ করতে হবে একশ’ টাকা। এ ছাড়াও কোন প্রাণীর হাড় ভাঙ্গা নির্ণয়ে থাকছে এক্সরে, পেটের সমস্যা বের করার জন্য আল্ট্রাসনোগ্রাম। এর জন্য পোষা প্রাণীর মালিকদের গুনতে হবে ৫শ’ টাকা করে। আগামীকাল রবিবার শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এ হাসপাতাল ও রিসার্চ সেন্টারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। অনুষ্ঠানে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন সিভাসু উপাচার্য প্রফেসর ড. গৌতমবুদ্ধ দাশ। জানা গেছে, ইন্টার্ন ও স্নাতকোত্তর ভেটেরিনারি ডাক্তারদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেয়ার উদ্দেশে সিভাসু কর্তৃপক্ষ ঢাকার পূর্বাচলে ২২ কাঠা জমির ওপর এই টিচিং এ্যান্ড ট্রেনিং পেট হসপিটাল এ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার স্থাপন করেছে। বর্তমান অবকাঠামোর পাশাপাশি এখানে একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করা হবে এবং ওই ভবনে পোষা প্রাণীর চিকিৎসাসেবা প্রদানের সব ধরনের অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা, যেমন মেডিসিন ইউনিট, সার্জারি ইউনিট, গাইনি এ্যান্ড অবস্ট্রেটিক্স ইউনিট, অর্থোপেডিক্স ইউনিট, রেডিওলজি এ্যান্ড ইমেজিং ইউনিট ও ভ্যাকসিনেশন ইউনিট থাকবে। ইতোমধ্যে এখানে ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন, আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন, মাইক্রোস্কোপসহ আধুনিক যন্ত্রপাতিসমৃদ্ধ ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে। এটি স্থাপনের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টার্ন ছাত্রছাত্রীদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিকমানের দক্ষ গ্র্যাজুয়েট হিসেবে তৈরি করা যাবে এবং বিদেশে দক্ষ জনশক্তি রফতানি ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের ইন্টার্ন শিক্ষার্থীরা এ হাসপাতালের মাধ্যমে পোষা প্রাণী বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ পাবেন। বিশ্বস্ততার জন্য অনেকেই আস্থা রাখেন পোষা প্রাণীদের ওপর। অথচ অসুস্থ হলে সহজে মেলে না এদের চিকিৎসা। বিভিন্ন হিসাব বলছে, ঢাকা শহরে মানুষের পোষা কুকুর, বিড়াল, খরগোশসহ পোষা প্রাণী রয়েছে প্রায় ৫ লাখ। এসব পোষা প্রাণীর চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকছে পেট হসপিটালে। ঢাকায় অবস্থানকারী বিদেশী রাষ্ট্রদূত, বিদেশী বিনিয়োগকারী ছাড়াও সাধারণ নাগরিকদের অনেকেরই রয়েছে পোষা প্রাণী। পোষা প্রাণীর মধ্যে বিশেষ করে কুকুর, বিড়াল, খরগোশ এবং বিভিন্ন প্রজাতির পাখি পালন করেন অভিজাত ব্যক্তিরা। বিদেশীদের পোষা প্রাণীগুলো রেখে যাওয়ার জন্যও নেই কোন কেয়ার সেন্টার। আবার দেশের ছয়টি ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাতেকলমে শিক্ষা দেয়ার জন্য নেই কোন গবেষণা ইনস্টিটিউট। এসব বিবেচনা করেই টিচিং এ্যান্ড ট্রেনিং পেট হসপিটাল ও রিসার্চ সেন্টার (পেট হসপিটাল) নির্মাণ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এ্যান্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গৌতমবুদ্ধ দাশ বলেন, এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যেমন হাতেকলমে শিক্ষা অর্জন করবে, তেমনি মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচবে অনেক পোষা প্রাণীও। এছাড়া বিভিন্ন পোষা প্রাণী ও পাখি কেন মারা যায়, তার গবেষণাও করা হবে এখানে। পাশাপাশি যারা পোষা প্রাণী রেখে বাইরে যাবেন, তাদের জন্য এখানে থাকছে পেট হোস্টেলও। ঢাকার ডিপ্লোম্যাটিক জোনের অধিবাসীদের পোষা প্রাণী রাখার জন্য এখানে থাকবে বিশেষ কেয়ার ইউনিট। এই হাসপাতালে থাকবে ইনডোর ও আউটডোর চিকিৎসাসেবা ব্যবস্থা। আইসিইউ ছাড়াও অস্ত্রোপচারের পর পোষ্য প্রাণী রাখার জন্য থাকবে ২০ জেনারেল বেড। এখানে চাইলে যে কেউ তাদের পোষা প্রাণী নির্দিষ্ট সময়ের জন্য লালন-পালনের জন্য রেখে যেতে পারবেন। এর জন্য পোষ্য প্রাণী প্রেমীদের গুনতে হবে প্রতিদিন ২০ ডলার। এরই মধ্যে ডিজিটাল এক্সরে মেশিন, আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন, মাইক্রোস্কোপসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে। এর জন্য ব্যয় হয়েছে তিন কোটি টাকা। শুক্রবার প্রতিষ্ঠানটিতে গিয়ে দেখা যায়, আগামীকালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে ব্যস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমান অবকাঠামোর পাশাপাশি এখানে একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করা হবে। ওই ভবনে পোষা প্রাণীর চিকিৎসাসেবা প্রদানের সব অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা, যেমন- মেডিসিন, সার্জারি, গাইনি এ্যান্ড অবস্টেট্রিক্স, অর্থোপেডিক্স, রেডিওলজি এ্যান্ড ইমেজিং ও ভ্যাকসিনেশন ইউনিট থাকবে। সাইবার অপরাধ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে শিক্ষকদের এগিয়ে আসার আহ্বান উগ্রবাদ, সহিংসতা ও সাইবার অপরাধ সচেতনতায় শিক্ষকরা এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন (সিসিএ) ফাউন্ডেশন। শুক্রবার প্রেস ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে কর্মশালায় এ আহ্বান জানানো হয়। বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের ‘সম্প্রীতি’ প্রকল্পের পৃষ্ঠপোষকতায় এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। সরকারী-বেসরকারী ৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কর্মশালায় অংশ নেন। কর্মশালায় তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের কন্ট্রোলার অব সার্টিফাইং অথরিটিজের (সিসিএ) নিয়ন্ত্রক (যুগ্ম সচিব) আবুল মানসুর মোহাম্মদ সারফ উদ্দিন বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তির নেতিবাচক বিষয়গুলোতে তরুণরা অন্যদের চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ থেকে রক্ষায় সচেতনতার বিকল্প নেই। তাই সহিংস উগ্রবাদ ও সাইবার অপরাধ সচেতনতায় শিক্ষকদের এগিয়ে আসা উচিত। সরকার স্কুল-কলেজের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়েও সচেতনতামূলক কার্যক্রমের দিকে নজর দিচ্ছে। কর্মশালায় সিসিএ ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা তথ্যপ্রযুক্তিবিদ একেএম নজরুল হায়দার বলেন, প্রযুক্তি ব্যবহারে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এর সঙ্গে তৃণমূল থেকে সব শ্রেণী-পেশার মানুষের মধ্যে সচেতনতামূলক কার্যক্রমও জোরদার করা উচিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. রাশেদা রওনক খান বলেন, সন্তানের ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার বিষয়ে অভিভাবকদের সচেতনতা খুব জরুরী। প্রযুক্তিকে আসক্তির পর্যায়ে নয় বরং প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহারের দিকে সবার দৃষ্টি দেয়া উচিত। কর্মশালায় সাইবার অপরাধ ও সহিংস উগ্রবাদ বিষয়ে আলোচনা করেন সিসিএ ফাউন্ডেশনের সাইবার নিরাপত্তা গবেষক-প্রশিক্ষক মেহেদী হাসান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের সভাপতি কাজী মুস্তাফিজ।
×