ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘ব্যবসায়ীদের আধিপত্য সৎ রাজনীতিকদের উত্থান রুদ্ধ করেছে, নষ্ট হয়েছে মানবিক মূল্যবোধ’

প্রকাশিত: ০৮:০২, ২৬ অক্টোবর ২০১৮

 ‘ব্যবসায়ীদের আধিপত্য সৎ রাজনীতিকদের উত্থান রুদ্ধ করেছে, নষ্ট হয়েছে মানবিক মূল্যবোধ’

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ নির্বাচনী রাজনীতিতে ব্যবসায়ীদের আধিপত্য একদিকে যেমন সৎ, আদর্শবাদী ও তৃণমূল থেকে উঠে আসা নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতিবিদের উত্থানকে রুদ্ধ করেছে, অন্যদিকে রাজনীতি হয়ে উঠেছে অর্থবিত্তনির্ভর লোভ লালসার শিকার। রাজনীতির বাণিজ্যিকীকরণ শুধু রাজনীতিকেই কলুষিত করে না, সমাজে সৃষ্টি করে বৈষম্য, অস্থিরতা, নৈরাজ্য ও অশুভ তৎপরতা। ফলে বিনষ্ট হয় সমাজের সংহতি এবং সুষ্ঠু সামাজিক সংস্কৃতির চেতনার ধারাবাহিকতা এবং মানবিক ও যুক্তিসিদ্ধ মূল্যবোধ। বৃহস্পতিবার বুয়েট কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে তিন জাতীয় অধ্যাপকের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশিষ্টজনরা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. শামসুজ্জামান খান। বুয়েট শিক্ষক সমিতি ও বুয়েট এ্যালামনাই যৌথভাবে জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, রফিকুল ইসলাম ও জামিলুর রেজা চৌধুরীকে সংবর্ধনা দেয়। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ কে এম মাসুদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ঢাবির বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক, কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা ও বুয়েটের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এইচ খান। অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন বুয়েট এলামনাইয়ের মহাসচিব ড. সাদিকুর ইসলাম ভূঁইয়া। জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান বলেন, বুয়েটের এটার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। কেননা এটি দেশের শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রধানতম বিশ্ববিদ্যালয়। বুয়েট শিক্ষার মান সম্মত রাখতে সক্ষম হয়েছে। এখানকার ভর্তি পরীক্ষা ও শিক্ষক নিয়োগসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়ার কোন বিরূপ মন্তব্য শুনিনি। তিনি বলেন, আমরা যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পৃক্ত রয়েছি তাতে যেভাবে রাজনীতিকরণ হচ্ছে এতে শিক্ষার মান আজ প্রশ্নবিদ্ধ, বুয়েট সেখানে একটি আদর্শ স্থানীয় এবং অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় প্রতিষ্ঠান। ‘আমাদের সময় : শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সা¤প্রতিক ভাবনা’ শীর্ষক প্রবন্ধে অধ্যাপক ড. শামসুজ্জামান খান বলেন, দেশে শিক্ষার বিস্তার যেভাবে ঘটেছে তা প্রশংসনীয় দাবিদার। কিন্তু শিক্ষার মান গুণগতভাবে বেড়েছে কিনা সেটাই প্রশ্ন থেকে গেছে। শিক্ষার জন্য আমাদের মায়েরা শিশুদের জন্য যে ত্যাগ শিকার করে তাতে তাদের সাধুবাদ না দিলে হয় না। মফস্বলের স্কুলে শিশুদের ব্যাপকহারে আসাটাও খুবই আশাব্যঞ্জক বিষয়। তবে সারা দেশে কোচিং সেন্টার আর গাইড বই শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনা ও উৎসাহদানে উদ্বুদ্ধ করছে তার প্রমাণ জোরালো নয়। তিনি বলেন, জিপিও-৫ পাওয়ার জন্য আমাদের শিক্ষার্থীদের খুবই হতাশা দেখা যায়। কিন্তু এই জিপিএ-৫ নিয়ে শিক্ষার্থীরা যখন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় অযোগ্য হয়-তখন মনে প্রশ্ন জাগে যে ব্যাপার কি? তারা জ্ঞান-বিজ্ঞানের বই পড়ে না। তাদের হাতে গাইড বই। এটা খুবই হতাশার বিষয়। সৈয়দ আজিজুল হক বলেন, মানুষের সেবা ও জাতীয় কল্যাণে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ছোট বেলা থেকেই রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন, এরপর থেকে তিনি ভাষা আন্দোলনসহ বাঙালীর মুক্তি আন্দোলনে রেখেছেন অবদান। জাতির বিভিন্ন সংকটে এখনও তিনি অবদান রেখে যাচ্ছেন।
×