ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নাসের রহমান

গল্প ॥ মাতাল হাওয়া

প্রকাশিত: ০৭:২৮, ২৬ অক্টোবর ২০১৮

গল্প ॥ মাতাল হাওয়া

শৈবাল ক্রাচে ভর দিয়ে হাঁটুজলে দাঁড়িয়ে আছে। পাশে স্বর্ণা। সে ডান হাতের বেড়ে শৈবালের কোমর জড়িয়ে দূরে তাকিয়ে আছে। কারও মুখে কোন কথা নেই। এ দৃশ্যটি দেখার জন্য শৈবাল অনেকদিন অপেক্ষা করেছে। আজ সেই স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। এক মুহূর্তে কেউ কারও দিকে তাকাচ্ছে না। স্থির দৃষ্টি মেলে আছে আছড়ে পড়া ঢেউয়ের খেলায়। সূর্যটা তখন পশ্চিম আকাশে হেলে পড়েছে। সব রোদ যেন এসব ঢেউয়ের সঙ্গে দোল খেতে খেতে বিশাল জলরাশিতে নীল এক আবরণ মেলে দিয়েছে। আকাশের সব নীলও যেন ওই দূর সীমানায় সাগরের জলতরঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। যেখানে দাঁড়িয়ে আছে ওখানকার পানি একেবারে স্বচ্ছ। বালির ওপর শামুকের লুকোচুরি দৃষ্টিকে প্রথমে টানলেও এখন দূর সমুদ্র থেকে চোখ ফেরানো যাচ্ছে না। কোন এক জায়গায় ঢেউ ভেঙে ভেঙে পড়ছে। মুহূর্তে বড় একটি ঢেউ এসে ভেঙে পড়া ঢেউদের বিলীন করে দিয়ে অন্য জায়গায় গিয়ে আছড়ে পড়ে বিদীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এর থেকে দূরে কোথাও আরেকটি নতুন ঢেউ যেন জল ছলছল শব্দ তুলে এগিয়ে আসে। একেবারে কাছে তখন আরেকটি ঢেউ এসে পাশের ঢেউটিকে আলিঙ্গন করে তাদের হাঁটুর ওপর পর্যন্ত ভিজিয়ে দিয়ে যায়। সারা শরীর মন সে সময় অপূর্ব এক ছোঁয়ায় শিহরিত হয়। ওরা একে অপরের আরও কাছে এসে বিভোর হতে থাকে। এ দৃশ্য সত্যিই এদের নির্বাক করে তুলেছে। এরা যেন কোন কথা বলতে পারছে না। এতদিনের জমাটবাঁধা দুঃখগুলো যেন কোথায় হারিয়ে গেছে। আশপাশে তেমন কেউ নেই এখন। আর সবাই সাগরের এই জলরাশির অপরূপ লীলায় যেন মত্ত। কেউ কারও দিকে তাকানোর প্রয়োজন মনে করছে না। কিছু দূরে জমে পড়া কদম ফুলের মতো বড় শৈবালের উপার বসে কেউ পানিতে পা দোলাচ্ছে। শৈবালের অনেক দিনের একটা স্বপ্ন পূরণ হলো। সে ছোটবেলায় যখন বইয়ে পড়েছিল সেন্টমার্টিনের কথা, তখন থেকে এ দ্বীপের প্রতি কৌতূহল জেগেছিল। সমুদ্রের বুকে জেগে উঠা এই নির্জন দ্বীপে এক সময়ে কোন মানুষ ছিল না। নানা ধরনের প্রবাল, বিচিত্র সব শামুক আর অসংখ্য জলজ উদ্ভিদে ভর্তি এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে। এসব কিছু তাকে আরও বেশি স্বপ্নময় করে তুলেছিল এই দ্বীপে আসার জন্য। কলেজের সীমানা পেরিয়ে কর্মক্ষেত্রে ঢুকে গেল। কিন্তু স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেল। স্বর্ণাকে জীবনসাথী হিসেবে পেয়ে সে-ই তার ইচ্ছাটি পূরণ করার জন্য উঠেপড়ে লাগল। হানিমুন করার জন্য সেন্টমার্টিন যাবে। স্বর্ণা প্রথমে সাহস পায়নি। এতদূরে এই অচেনা-অজানা দ্বীপে শৈবালকে সে কীভাবে নিয়ে যাবে? সমুদ্র পাড়ি দেয়া কি সহজ ব্যাপার! স্বাভাবিক দেহের লোকজন যেতে ভরসা পায় না। আর সে তো ক্রাচে ভর দিয়ে চলাফেরা করে। স্বর্ণারও ওই জায়গা সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। কীভাবে থাকবে? সে তো কখনও চট্টগ্রামেও যায়নি। যশোরে বড় হয়েছে, সেখানে লেখাপড়া। বিভিন্ন সময়ে ঢাকা পর্যন্ত এসেছে। প্রথমে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার, তারপর কক্সবাজার থেকে টেকনাফ। এসব না হয় বাসে যাওয়া গেল। তারপর তো সাগর পাড়ি দিতে হবে। আগে কখনও গিয়েছে ওখানে, এ রকম লোকের খোঁজ নিতে থাকে। পেয়েও যায় দু’একজনকে। ওরা ওখানকার এত সুন্দর বর্ণনা দেয়, স্বর্ণারও এসব দেখার একান্ত ইচ্ছা হয়। সে মনে মনে সাহস জোগায়। ওদের কাছ থেকে এই দীর্ঘ পরিভ্রমণের অনেক কিছু জেনে নেয়। তারপর মনস্থির করে। শৈবালকে নিয়ে একদিন সত্যি সত্যি রওনা দেয়। লম্বা বাস জার্নির দু’এক জায়গায় রাত্রি যাপন করতে হলেও খুব বেশি কোথাও অসুবিধায় পড়তে হয়নি। কিন্তু টেকনাফের নাফ নদীতে স্টিমারঘাটে ট্রলার জাতীয় বোটে উঠতে ক্রাচ ফেলে স্বর্ণার কাঁধের উপর ভর দিয়ে উঠতে হয়। নদীর মৃদুমন্দ ঢেউ পেরিয়ে সমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গমালার আনন্দ আর ভয় মিশ্রিত শিহরণ ভিন্ন এক জগতে নিয়ে যায়। এতদিনের যত গ্লানি আর অপমান যেন মুহূর্তে কোথায় বিলীন হয়ে যায়। পঙ্গু হওয়ায় ছোটবেলা থেকে সবার আড়চোখে তাকানোটা কেমন যেন গা সওয়া হয়ে গিয়েছে। বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে খোঁড়া বলে সমবয়সীরা করুণা করত। কোন খেলাধুলায় অংশ নিতে পারত না। সহপাঠীরা কোথাও যাওয়ার জন্যে স্থির করলে তাকে অনেকে নিতে চাইত না। তবুও সে বন্ধুদের যে কোন একজনের সাহায্য নিয়ে এদিকে-সেদিকে যেতে চেষ্টা করত। শৈশব, কৈশোর আর তারুণ্যে চারপাশ থেকে যে অবহেলা সে পেয়েছে তা সে মনের ভেতর পুষে রাখেনি। ভেবেছে এসব জমাট বেঁধে রাখলে শুধু কষ্টই বাড়বে। সাগরের মাঝে দৃষ্টি যতটুকু যায় শুধু জল আর জল। যেন এই পৃথিবীতে উপরে আকাশ আর চারদিকে পানি, কোথাও যেন কোন কিনারা নেই। তখন মনের গহীনে কোথাও কোন দুঃখ বা কষ্ট অবচেতন মনে জমা হয়ে পড়লেও তাও যেন বেরিয়ে গিয়ে মনটা একেবারে সাদা মেঘের মতো হালকা হয়ে যায়। স্কুল নাটকে সে একবার হকারের চরিত্রে অভিনয় করেছিল। খোঁড়া হওয়ায় প্রথমে অনেকে ওই চরিত্রে অভিনয় করতে দিতে চায়নি। কারণ হকার রাস্তায় অনেকটা দৌড়ে পত্রিকা বিক্রি করে। কিন্তু হেডস্যার তাকে এই চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ দেন। সে এত ভাল অভিনয় করে যে নাটক শেষে দর্শকদের কাছ থেকে কয়েকটি পুরস্কার পায়। এত আনন্দের মুহূর্ত তার আর একটিও নেই। এই স্মৃতিটা সে কখনও ভুলে না। কিন্তু এখন সেই উজ্জ্বল সময়টার কথাও মনে পড়ছে না। মনটা সাদা মেঘের ভেলায় উড়তে থাকে। তখন বড় আর বিশাল ঢেউয়ের ধাক্কায় দুলতে দুলতে বিশেষ নৌযানটি সেন্টমার্টিনে এসে পৌঁছে। একটি বড় ঢেউ এসে ওদের কাছে আছড়ে পড়তেই পানি কোমর পর্যন্ত ভিজিয়ে দেয়। এতক্ষণ পর একে অন্যের দিকে তাকায়। শৈবালের এই দৃষ্টিটি স্বর্ণার কাছে একটু অচেনা মনে হলো। তার দৃষ্টিতে যে এত গভীরতা আছে সে ভাবতে পারেনি। সেই গভীর চাউনি মুহূর্তে হৃদয়ের ভেতরটা ভেদ করে যেন সাগরের মাঝে মিলিয়ে গেল। সে শৈবালকে নিয়ে ভাবে না কখনও। যা ভেবেছে বিয়ের আগে। অনেক কথার মুখোমুখি হতে হয়েছিল তাকে শৈবালের সঙ্গে বিয়েতে মত দেয়ায়। তার নিজেরও একটু সমস্যা ছিল। সে কলেজে পড়ার সময় যে ছেলেটিকে ভালবাসত ছেলেটি একদিন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। এরপর স্বর্ণা অনেকটা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিল। ছেলেটি শৈবালের সঙ্গে পড়ত। ওরা ভাল বন্ধু ছিল। এ সময় শৈবাল এগিয়ে যায় স্বর্ণার কাছে। ধীরে ধীরে স্বর্ণা আবার স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। কিন্তু প্রেমিক ছেলেটিকে ভুলতে পারে না। তারপর শৈবালের মাঝে বেঁচে থাকার একটি স্বপ্ন মনের ভেতর বাসা বাঁধতে থাকে। এখন কিছুক্ষণ পর পর বড় বড় ঢেউ এসে ভেঙে পড়ছে। কোমর পর্যন্ত বার বার ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। কিছু দূরে শামুক কুড়ানো ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা লুটে পড়ছে বার বার সেই ঢেউয়ের সঙ্গে। এ পাশে কেউ কেউ এক দৌড়ে নেমে পড়ছে কোমরজলে, আবার ঢেউ এলে ছুটে আসছে কিনারায়। এসবের দিকে ওরা তেমন তাকাচ্ছে না। ওদের দৃষ্টি ওই দূর সাগরের অথৈ জলে। ছোট ছোট ঢেউগুলো কীভাবে একটু বড় ঢেউয়ের মাঝে বিলীন হয়ে যায় তা দেখে এতক্ষণ পর স্বর্ণা মন্তব্য করে, দেখ ছোটরা কীভাবে হারিয়ে যায় বড়র মাঝে। শৈবাল এবার মুখ খুলে, কে বলেছে হারিয়ে যায়? স্বর্ণা হাত বাড়িয়ে দেখায়, ওই যে দেখ। শৈবাল একটু থেমে বলে, আরে হারায় না, বলো, নিজেকে সমর্পিত করে। স্বর্ণা শৈবালের মুখে এ রকম ভাবের কথা অনেক শুনেছে। কিন্তু এখনকার কথায় যেন অজানা এক আবেগ জড়িয়ে আছে। সে শৈবালের চোখের দিকে তাকিয়ে একটু অবাক হয়। তার চোখ দুটিতে জল এসে গেছে। বিয়ের রাতে শৈবালের চোখে এ রকম জল দেখেছিল সে। সেই জল ছিল আবেগের, আনন্দের। এরপর আর কখনও এ রকম হয়নি। স্বর্ণা প্রশ্ন করে, তোমার চোখে পানি কেন? শৈবাল নিজেকে আড়াল করে বলে, কই, ঢেউয়ের সঙ্গে হয়ত জলের ফোঁটা এসে লেগেছে। স্বর্ণা কিছুটা আবেগ জড়িয়ে বলে, আজ আমাদের বড় আনন্দের দিন, চোখে পানি রাখতে নেই। সে ওড়না দিয়ে মুছে দেয়। সেদিনও এই একই কথা বলে সে শাড়ির আঁচল দিয়ে শৈবালের চোখ মুছে দিয়েছিল। তখন শৈবাল বলেছিল, সত্যিই তুমি যে আমাকে এত গভীরভাবে ভালবাসতে পারবে, আমি বুঝতে পারিনি। স্বর্ণা উত্তরে বলেছিল, সত্যিকারের ভালবাসা গভীরই হয়। বেলা পড়ে আসে। ওদের ফেরার সময় হয়ে যায়। নৌযানটি চলে গেলে ওরা আজ আর ফিরে যেতে পারবে না। কিন্তু কিছুতেই চোখ ফেরাতে পারছে না সাগরের অসীম নীল থেকে। ইচ্ছা হচ্ছে এখানে থেকে যেতে। স্বর্ণা ঘড়িতে সময় দেখে বলে, চল, আমাদের আর থাকা যাবে না। দেখ আশপাশে সবাই ফিরে গেছে। কিছুক্ষণের মধ্যে বোট ছেড়ে দেবে। শৈবাল পেছনে ফিরে তাকায়। ধু-ধু বালুর চর। ধীরে ধীরে পা ফেলে দুজন একসঙ্গে হাঁটতে থাকে। একটু পরে ওই বালুচরে গিয়ে পড়বে। এখনও পানির মাঝে হালকা পা ফেলে হাঁটছে। টলটল জল মুহূর্তে যেন পা যুগল ধুয়ে দিচ্ছে দু’জনের। বালিরা নিমিষে পানির ছোঁয়ায় পা থেকে ঝরে পড়ছে। বালুচরে এক পা দু’পা করে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসে। পা সহজে বালির ভেতর থেকে তোলা যায় না। নৌযানের কাছাকাছি আসতে বেশ সময় লেগে যায়। কিন্তু এসে দেখে অনেক দূরে নৌযানটি লম্বা জেটির মাথায় বাঁধা। পানি অনেক নিচে নেমে গেছে। আসার সময় সাগরে জোয়ার থাকায় ছোট ছোট কাঠের জোড়াতালি দেয়া এত লম্বা জেটিটি এভাবে চোখে পড়েনি। লোকজন নৌযানে উঠার জন্য জেটির উপর লাইন করে দাঁড়িয়ে আছে। ওরা নিচে খানিক দাঁড়িয়ে জেটিতে উঠে লাইনে দাঁড়ায়। এত নড়বড়ে অবস্থা রশিতে বাঁধা নৌযানের টানে যেন একদিকে ঝুঁকে পড়ছে। এতগুলি মানুষের ভার নিতে পারবে কিনা কে জানে। বাতাস আর ঢেউয়ের টানে নৌযানটি একবার জেটিতে লাগে আবার কিছুটা দূরে সরে যায়। এর মধ্যে সাবধানে একজন একজন করে বাঁধা রশিটা ধরে উঠতে থাকে। কখনও মনে হচ্ছে এতগুলো লোক নিয়ে জেটিটা এই মুহূর্তে ভেঙে পড়বে। অতি ধীরে ওরা দুজন এগুতে থাকে। এখানে মেয়ে যে ক’জন এসেছে ওদের স্বামীরা আগে নিজেরা নৌযানে উঠে অনেকটা টেনে ধরে তুলে নিচ্ছে। অনেকে ভাবে, এই খোঁড়া লোকটি উঠবে কীভাবে? প্রায় সবাই উঠে যাওয়ার পর ওরা লাইনে নৌযানের কাছে এসে দাঁড়ায়। সবার দৃষ্টি এখন ওদের দিকে। ওরা অপেক্ষা করে নৌযানের গলুই কখন জেটির সঙ্গে এসে লাগবে। পাশের নৌযানের ধাক্কা আর বাতাসের টানে গলুই জেটির সঙ্গে লাগতেই শৈবাল আননিতে বুক লাগিয়ে রশিতে ধরে উপরে উঠতে চেষ্টা করে। তখন ক্রাচটি হাতে নিয়ে স্বর্ণা পেছনে থেকে শৈবালকে ধরে রাখে। সে বুকে ভর দিয়ে রশি ধরে নিজেকে সামনে টেনে নেয়। নৌযান থেকে একজন হাত বাড়িয়ে শৈবালকে ধরে আননি থেকে নামিয়ে ফেলে। ক্রাচটা বাড়িয়ে দিতেই শৈবাল টেনে নিয়ে হাঁটুতে লাগায়। দাঁড়িয়ে নিজের ডান হাতটা বাড়িয়ে দেয়। স্বর্ণা হাত বাড়াতে তাকে টান দিয়ে নৌযানে তুলে নেয়। সবাই অবাক নয়নে তাকায় ওদের দিকে। ওরা একেবারে স্বাভাবিক ভঙ্গিতে নিজেদের আসনে গিয়ে পাশাপাশি বসে পড়ে। তখন রশির বাঁধন খুলে নৌযানে নোঙর তুলে দেয়। কারও মুখে তেমন কথা নেই। সবাই যেন চুপচাপ বসে আছে। ইঞ্জিনের আওয়াজ ছাড়া আর কিছু কানে আসে না। নৌযান চলতে শুরু করে। ওরা দুজন আবার সাগরের পানিতে দৃষ্টি মেলে। যাওয়ার সময় সাগরের জোয়ারের সঙ্গে আনন্দের জোয়ার মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে। এখন ফেরার পথে জোয়ার নেই ভাবে। এই ভাবার মাঝে সাগরের বিশাল জলরাশি তাদের মন প্রশান্তিতে ভরিয়ে তোলে।
×