ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সালাহর অর্ধশতকে শীর্ষে লিভারপুল

প্রকাশিত: ০৬:৪৩, ২৬ অক্টোবর ২০১৮

সালাহর অর্ধশতকে শীর্ষে লিভারপুল

জাহিদুল আলম জয় ॥ গত বছরের চোখ ধাঁধানো পারফর্মেন্স এবার দেখা যাচ্ছিল না। অবশেষে স্বরূপে ফেরার আভাস দিয়েছেন মোহাম্মদ সালাহ। মিসরীয় এই ফরোয়ার্ডের জোড়া গোলে ভর করে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগে ‘সি’ গ্রুপের শীর্ষে ফিরেছে লিভারপুল। বুধবার রাতে ঘরের মাঠ এ্যানফিল্ডে অনুষ্ঠিত ম্যাচ সার্বিয়ার ক্লাব রেড স্টার বেলগ্রেডকে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে জার্গেন ক্লপের দল। দ্য রেডসদের হয়ে সালাহর জোড়া গোল ছাড়াও বাকি দুই গোল করেন রবার্টো ফিরমিনো ও সাডিও মানে। প্যারিসে আরেক ম্যাচে সফরকারী ইতালিয়ান ক্লাব নেপোলির সঙ্গে হারতে হারতে কোনরকমে ২-২ গোলে ড্র করেছে প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইন (পিএসজি)। এবারের লীগে ‘সি’ গ্রুপটিই মৃত্যুকূপ। এখন যে অবস্থা তাতে নেইমারের পিএসজি গ্রুপ পর্বেই বাদ পড়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। বর্তমানে তিনটি করে ম্যাচ শেষে ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের তিন নম্বরে ফরাসী জায়ান্টরা। ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে লিভারপুল ও ৫ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে নেপোলি। প্রতিটি গ্রুপ থেকে শীর্ষ দুটি দল শেষ ষোলোর টিকেট পাবে। প্যারিসের পার্ক দ্য প্রিন্সেসের মাঠে ইনজুরির টাইমের তৃতীয় মিনিটে এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার কার্লিং শটে গোলের আগ পর্যন্ত পিএসজির পরাজয় অনেকটাই অবধারিত ছিল। লোরেনজো ইনসিগনের গোলে প্রথমার্ধে এগিয়ে যায় নেপোলি। মারিও রুইয়ের আত্মঘাতী গোলে ৬১ মিনিটে সমতা ফেরায় স্বাগতিকরা। এরপর ৭৭ মিনিটে ড্রিয়েস মার্টিনসের গোলে আবারো জয়ের স্বপ্ন দেখতে থাকে ইতালিয়ান জায়ান্টরা। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ডি মারিয়া ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। অবশ্য এক পয়েন্ট পেয়েই সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে নেপোলি। ম্যাচ শেষে নেপোলির কোচ কার্লো আনচেলোত্তি বলেন, আমরা ভাল খেলেছি। তবে আমি মনে করি জয়টা আমাদের প্রাপ্য ছিল। কিন্তু পিএসজি আসলে এমনই। তাদের দলে তেমনই দক্ষতা সম্পন্ন খেলোয়াড় রয়েছে। ঘরের মাঠে আমাদের আরেকটি সুযোগ আছে। আশা করছি ঐ ম্যাচে কিছু একটা করে দেখাতে পারব। পিএসজি কোচ টমাস টাচেল বলেন, ইতালিয়ান যে কোন দলের বিপক্ষে ম্যাচগুলো সবসময়ই জটিল হয়ে উঠে। তাদের সংস্কৃতি তাই প্রমাণ করে। এই ম্যাচেও তার ব্যতিক্রম ছিল না। আমরা ইতালিয়ান কোন দল নই, আমরা এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ নই, আমরা পিএসজি এবং আমাদের নিজস্ব স্টাইল আছে। তারা দীর্ঘদিন একসঙ্গে খেলছে, আর আমরা মাত্র ১১ সপ্তাহ একসঙ্গে হয়েছি। কিন্তু আমাদের অবশ্যই উন্নতি হয়েছে যা ম্যাচের পারফর্মেন্সে ধরা পড়ছে। অন্যদিকে কিছুদিন ধরেই সালাহকে যেন ঠিক আগের রূপে দেখা যাচ্ছিল না। ফলে গত মৌসুমের লিভারপুলের সেই ধারালো আক্রমণভাগও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। চেলসির বিপক্ষে লীগ ও কাপের দুই ম্যাচে গোল পাননি, ফলে ইএফএল কাপ থেকে বিদায় নিতে হয়েছে লিভারপুলকে। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শেষ ম্যাচেও নেপোলির বিপক্ষে হেরেছে তারা, ওই ম্যাচেও নিষ্প্রভ ছিলেন সালাহ। এমনকি দেশ মিসরের জার্সিতেও আফ্রিকান নেশন্স কাপের বাছাইপর্বে নাইজারের বিপক্ষে এক ম্যাচে দুটো পেনাল্টি মিস করেছিলেন! তবে পরশু রাতে এ্যানফিল্ডে যেন আগের সেই সালাহর দেখা মেলে। ম্যাচে জোড়া গোল করে অনন্য রেকর্ডও গড়েছেন। লিভারপুলের জার্সি গায়ে দ্রুততম ৫০ গোলের রেকর্ড এখন মিসরীয় এই সুপারস্টারের। মাত্র ৬৫ ম্যাচ খেলেই গৌরবময় রেকর্ডটা নিজের করে নিয়েছেন তিনি। সালাহর আগে দ্রুততম ৫০ গোল করার রেকর্ড ছিল ইংলিশ স্ট্রাইকার এ্যালবার্ট স্টাবিন্সের। অর্ধশতক করতে সালাহর চেয়ে ১২ ম্যাচ বেশি খেলেছিলেন তিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে নিজের খেলোয়াড়ী জীবনকে দীর্ঘায়িত করতে না পারা স্টাবিন্স ১৯৪৬-৪৭ মৌসুমে লিভারপুলকে জিতিয়েছিলেন লীগ শিরোপাও। লিভারপুলের আরেক কিংবদন্তি ইংলিশ স্ট্রাইকার রজার হান্ট ৫০ গোলের মাইলফলক ছুঁয়েছিলেন ৭৯ ম্যাচ খেলে। ৮৭ ম্যাচ খেলে ৫০ গোল করেছেন স্টারিজ। টোরেসের লেগেছিল ৮৪ ম্যাচ।
×