ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জিম্বাবুইয়েকে আবারও হোয়াইটওয়াশের হাতছানি

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ২৬ অক্টোবর ২০১৮

জিম্বাবুইয়েকে আবারও হোয়াইটওয়াশের হাতছানি

মিথুন আশরাফ ॥ টানা দুই ওয়ানডে ম্যাচ জিতে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে নিয়েছে বাংলাদেশ। আজ চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটিতে বাংলাদেশ জিতলেই জিম্বাবুইয়েকে হোয়াইটওয়াশ করবে বাংলাদেশ। জিম্বাবুইয়েকে আবারও হোয়াইটওয়াশ করার হাতছানি দিচ্ছে বাংলাদেশকে। দুই দলের মধ্যকার সর্বশেষ ২০১৫ সালে দ্বিপক্ষীয় ওয়ানডে সিরিজ হয়েছিল। সেই তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুইয়েকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৪ সালের শেষদিকে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজেও জিম্বাবুইয়েকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। যে সিরিজটি বাংলাদেশের নতুন পথ তৈরি করে দিয়েছিল। এরপর টানা জয়ের ধারাবাহিকতাতেই থাকে বাংলাদেশ। আজ দুপুর আড়াইটায় শুরু হওয়া ম্যাচটিতে যদি বাংলাদেশ জিততে পারে, তাহলে জিম্বাবুইয়েকে টানা তিন সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করবে বাংলাদেশ। তা খুবই সম্ভব। জিম্বাবুইয়ে যে দল, তাতে বাংলাদেশের জেতার ভাবনাই সবার মাথায় খেলছে। প্রথম ওয়ানডেতে ২৮ রানে জিতেছে বাংলাদেশ। সহজ জয় তুলে নিয়েছে। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তো অনায়াসেই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ৭ উইকেটের জয় পেয়েছে। তৃতীয় ওয়ানডেতেও জিম্বাবুইয়েকে উড়িয়ে দেয়ার সুযোগ আছে। অবশ্য আজকের ওয়ানডেতে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা হবে। সৌম্য সরকারকে দলে নেয়া হয়েছে। যেহেতু সিরিজ জয় হয়ে গেছে, তাই সৌম্যকে আজ একাদশে দেখা যেতে পারে। ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তও খেলার সুযোগ পাচ্ছেন না। লিটন কুমার দাস ও ইমরুল কায়েস যে দুর্দান্ত ব্যাটিং করছেন। আজ শান্তরও ওপেনিংয়ে সুযোগ ধরা দিতে পারে। ফজলে মাহমুদ রাব্বি ব্যর্থ হচ্ছেন। অভিষিক্ত ওয়ানডে সিরিজের দুই ম্যাচেই ব্যর্থ হয়েছেন। আজও তার সুযোগ মিলতে পারে। সেই সঙ্গে আরিফুল হকেরও সুযোগ আসতে পারে। সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে কয়েকজন বিশ্রামে থাকতে পারেন আজ। চার বছর আগে ২০১৪ সালের নবেম্বর থেকে যে বাংলাদেশ দল সিরিজ জেতা শুরু করেছিল, টানা ছয় দ্বিপক্ষীয় হোম সিরিজ জিতেছিল। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে গিয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জেতা সিরিজটিই দেশের মাটিতে সর্বশেষ সিরিজ জেতা হয়। এরপর দুই বছর অতিক্রম হয়ে গেল। কিন্তু দেশের মাটিতে কোন সিরিজ জেতা হয়নি বাংলাদেশের। বুধবার গিয়ে দেশের মাটিতে সিরিজ জেতার ধারায় আবার ফিরল বাংলাদেশ। এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জেতা হয়ে গেছে বাংলাদেশের। আজ শুক্রবার জিম্বাবুইয়েকে হোয়াইটওয়াশ করার পালা। ২০১৪ সালের শেষদিক থেকে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টানা দ্বিপক্ষীয় হোম সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। প্রথমে জিম্বাবুইয়েকে, এরপর পাকিস্তানকে, ভারতকে, দক্ষিণ আফ্রিকাকে, আবার জিম্বাবুইয়ে ও সর্বশেষ ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তানকে সিরিজে হারায় বাংলাদেশ। টানা ছয় সিরিজ জেতার পর গিয়ে ইংল্যান্ডের কাছে ২০১৬ সালের অক্টোবরে সিরিজ হারে বাংলাদেশ। দেশের মাটিতে সেটিই এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সর্বশেষ খেলা দ্বিপক্ষীয় সিরিজও ছিল। এর মধ্যে আর দেশের মাটিতে সিরিজই হয়নি। এবার জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে আবার দুই বছর পর দেশের মাটিতে সিরিজ খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ। সেই সিরিজটি এরই মধ্যে জেতাও হয়ে গেছে। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ১০টি সিরিজ জেতা হয়ে গেছে। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ২০০১ সালে প্রথমবারের মতো দ্বিপক্ষীয় সিরিজে খেলে বাংলাদেশ। এরপর ২০১৫ সাল পর্যন্ত দুই দলের মধ্যকার ১৫টি দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলা হয়। ৯টি সিরিজে বাংলাদেশ জিতে। ৬টি সিরিজে হারে বাংলাদেশ। ২০০৪ সাল পর্যন্ত টানা তিন সিরিজে হারে বাংলাদেশ। এরপর ২০০৫ সালে যে বাংলাদেশ প্রথমবার সিরিজে জিতে এরপর জেতার সংখ্যা বাড়তেই থাকে বাংলাদেশের। ২০১১ সালের পর এখন পর্যন্ত টানা তিন সিরিজে বাংলাদেশই জেতে। দুই দলের মধ্যকার সর্বশেষ ২০১৫ সালে খেলা ওয়ানডে সিরিজেও জিতে বাংলাদেশ। এবার যখন দুই দল আবার বাংলাদেশের মাটিতে মুখোমুখি হয়েছে তখনও বাংলাদেশের সামনেই সিরিজ জেতার সুযোগ ধরা দিয়েছিল। সেই সুযোগ কাজেও লাগায় বাংলাদেশ। ২-০ ব্যবধানে জিতে আছে সিরিজে। এখন ৩-০ হয়, না ২-১; সেই দিকেই সবার নজর আছে। বাংলাদেশ যে ফেভারিট, তা তো দুই ম্যাচ থেকেই বোঝা গেছে। এখন হোয়াইটওয়াশ করার সুযোগটি কাজে লাগানো গেলেই হয়। এ পর্যন্ত জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে খেলা ১৫টি সিরিজের মধ্যে জিম্বাবুইয়েকে তিনটি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ। ২০০৬ সালে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে প্রথমবার জিম্বাবুইয়েকে হোয়াইটওয়াশ করে। এরপর ২০১৪ ও ২০১৫ সালে যথাক্রমে ৫ ও ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুইয়েকে হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ। দুইবার বাংলাদেশ হোয়াইটওয়াশও হয়। তবে ২০০১ সালেই জিম্বাবুইয়ের কাছে দুইবার ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয় বাংলাদেশ। এরপর আর কোন সিরিজে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করতে পারেনি বাংলাদেশ। উল্টো এর আগে ৯টি সিরিজ হারের সঙ্গে তিনটি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। আজ জিম্বাবুইয়েকে হারিয়ে হোয়াইটওয়াশ করা গেলে চতুর্থবারের মতো জিম্বাবুইয়েকে হোয়াইটওয়াশ করার গৌরব অর্জন করবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সামনে আবারও জিম্বাবুইয়েকে হোয়াইটওয়াশ করার হাতছানি দিচ্ছেও।
×