ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

জলঢাকায় আসন উদ্ধারে মরিয়া জামায়াত

প্রকাশিত: ০৩:৫৬, ২৬ অক্টোবর ২০১৮

জলঢাকায় আসন উদ্ধারে মরিয়া জামায়াত

তাহমিন হক ববী, নীলফামারী ॥ সারাদেশে স্বাধীনতা বিরোধীদের যে কয়েকটি উর্বর এলাকা রয়েছে তার মধ্যে নীলফামারী-৩ (জলঢাকা) আসন অন্যতম। আসনটিতে এক সময় মুসলিম লীগ ও জামায়াতের রাজত্ব ছিল। আসনটিতে এখন সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা। জলঢাকার আসনটি উদ্ধারে জামায়াত মরিয়া হয়ে উঠেছে। আর এ জন্য তারা আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ে বিরোধ সৃষ্টি করে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে বলে আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভিযোগ। আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে আসনটিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের শুরু হয়েছে জোর তৎপরতা। সম্ভাব্য প্রার্থীরা শুভেচ্ছা বিনিময়, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে ভোটারদের নজরে আসার চেষ্টা করছে। তবে ওই মনোনয়ন প্রত্যাশার অস্থিরতা বেশি আওয়ামী লীগে। আর এ জন্য জলঢাকায় আওয়ামী লীগের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টির কলকাঠি নাড়ছে জামায়াত। কারণ তারা পুনরায় আসনটি দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে। বিগত ১০টি নির্বাচনের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এককভাবে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ প্রথম, পঞ্চম, এবং দশম নির্বাচনে জয়ী হয়। এরপর নবম সংসদে সেখানে নির্বাচিত হয় মহাজোটের (আওয়ামী লীগ-জাপা) জাতীয় পাটির প্রার্থী। চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি, ১৫ ফেব্রুয়ারির ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী নির্বাচিত হয়। সেখানে স্বাধীনতাবিরোধী মুসলীম লীগ দ্বিতীয় সংসদে, জামায়াত তৃতীয়, সপ্তম এবং অষ্টম সংসদ নির্বাচনে আসনটি দখল করে। দশম সংসদ নির্বাচনে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা। ২০১৪ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে পরাজিত করে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচন হন গোলাম মোস্তফা। তিনি দাবি করে বলেন, আসনটি স্বাধীনতাবিরোধীদের হাত থেকে উদ্ধার করেছি, এলাকার মানুষের কল্যাণ দৃশ্যমান উন্নয়নে কাজ করছি। এদিকে এই আসনে মনোনয়ন চান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. মমতাজুল হক। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নের জন্য ছোটাছুটি করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আনছার আলী মিন্টু, সাধারণ সম্পাদক শহীদ হোসেন রুবেল, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুর ওয়াহেদ বাহাদুর, সাবেক অধ্যাপক আব্দুল মতিন ও প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা দীপেন্দ্র নাথ সরকার দিপু বাবুর মেয়ে ববিতা রানী সরকার। মনোনয়ন চান জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) শিল্পপতি মোঃ সামসুজ্জামান। বিএনপি-জামায়াতের জোটগত নির্বাচনে আসনটি এর আগে জামায়াতকে ছেড়ে দেয়া হলেও তিনি বলেন, ‘এ আসনে বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। বিএনপি নেতা সামসুজ্জামান সামু ও জলঢাকা উপজেলা বিএনপির সভাপতি বর্তমানে পৌর মেয়র ফাওমিদ ফয়সাল কমেট মনোনয়ন প্রত্যাশা করেছেন। জামায়াতের কেন্দ্রীয় কমিটির ইউনিট সদস্য ও রংপুর বিভাগীয় টিমের সদস্য অধ্যক্ষ আজিজুল ইসলাম অথবা জামায়াত নেতা বর্তমানে জলঢাকা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফয়সাল আহমেদ মুরাদ প্রার্থী হতে পারেন। জাতীয় পার্টির কাজী ফারুক কাদের মনোনয়ন প্রত্যাশী। কাজী ফারুক কাদেরের পাশাপাশি আসনটিতে জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ পারভেজ। এ ছাড়া সদ্য জাতীয় পার্টিতে যোগদানকারী ডাঃ আলমগীর হোসেন দলীয় মনোনয়ন পেতে উঠে পড়ে লেগেছেন।
×