ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

এবার সৌর বিদ্যুতে চলবে নৌকা

প্রকাশিত: ০৬:২০, ২৫ অক্টোবর ২০১৮

এবার সৌর বিদ্যুতে চলবে নৌকা

রশিদ মামুন ॥ সৌরশক্তি ব্যবহার করে অনেক দিন থেকেই রাস্তায় গাড়ি চলছে। এবার বলা হচ্ছে সৌরবিদ্যুত ব্যবহার করে নৌকা চালানো হবে। ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে সোলার বোট প্রকল্প শুরু হয়েছে। ভবিষ্যতে বাণিজ্যিকভাবে সারাদেশে এই উদ্যোগ ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে। সারাদেশে প্রায় ১০ লাখ ছোট-বড় নৌকা চলে। এর মধ্যে কিছু ইঞ্জিন চালিত নৌকা রয়েছে যেগুলো চালাতে কম শক্তি (জ¦ালানি) প্রয়োজন হয়। এসব নৌযানে সৌরশক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে বলে মনে করা হয়। বিশে^র বিভিন্ন দেশ সৌখিন নৌযানে সৌরশক্তি ব্যবহার করছে। তবে বাণিজ্যিক নৌযানে সৌরশক্তি ব্যবহারের নজির এখনও তেমন তৈরি হয়নি। তবে নৌযানে রাতের আলো জ¦ালতে সৌর প্যানেল ব্যবহার শুরু হয়েছে। টেকসই এবং নবায়নযোগ্য জ¦ালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (¯্রডো) ইতোমেধ্যে দেশের তিনটি জায়গাতে পাঁচটি নৌকা পরীক্ষামূলকভাবে সৌরশক্তি দিয়ে চালানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে চুক্তি করেছে। এর মধ্যে রাজধানীর হাতিরঝিলে একটি নৌকা রয়েছে। আর এর বাইরে সোনারগাঁওয়ের পানাম নগরে দুটি এবং চট্টগ্রামের ফয়েজ লেকে দুটি সৌর চালিত নৌকা রয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে চালানো এই প্রকল্পের অবস্থা দেখে ¯্রডোর চেয়ারম্যান মোঃ হেলাল উদ্দিন জনকণ্ঠকে বলেন, কিছু বাধা তো রয়েছে। তবে এসব বাধা অতিক্রম করতে পারলে বাণিজ্যিকভাবে নৌকা পরিচালনায় সৌরবিদ্যুত ব্যবহার করা যেতে পারে। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৌরশক্তি ব্যবহার করে নৌকা চালানো যায় কি তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয়ার পর ¯্রডো এই প্রকল্প হাতে নেয়। আমাদের এখন মনে হচ্ছে, ব্যয় কিছুটা কমিয়ে আনতে পারলে সাধারণ মানুষ আগ্রহী হবে। পরীক্ষামূলকভাবে যেসব নৌযান তৈরি করা হয়েছে তার ব্যয় দাঁড়িয়েছে পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা। কিন্তু প্রযুক্তি উন্নত করা সম্ভব হলে ব্যয় তিন লাখে নামিয়ে আনা সম্ভব। ¯্রডো বলছে, এ ধরনের নৌযান নির্মাণে সহজশর্তে উদ্যোক্তাকে ঋণেরও ব্যবস্থা করে দিতে চায়। এজন্য কয়েকটি ব্যাংকের সঙ্গেও তারা আলোচনা করেছে। ব্যাংক আর্থিকভাবে উদ্যোক্তার পাশে দাঁড়ানোর বিষয়ে ¯্রডোকে আশ^াস দিয়েছে। এখন যে নৌযানগুলো তৈরি করা হচ্ছে সেগুলো সৌরশক্তিতে তিন ঘণ্টা চলছে। পরিচালনার সময় তিন ঘণ্টার স্থলে সাত ঘণ্টা করা যায় কি না তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। এজন্য রাতেরবেলায় নৌযানের ঘাটে একটি চার্জিং স্টেশন রাখা এবং চার্জ না থাকলে একই ইঞ্জিনে ডিজেল দিয়ে পরিচালনার কথাও বলা হচ্ছে। এখন পরীক্ষামূলকভাবে যে নৌকাগুলো চালানো হচ্ছে সেগুলো সবই স্টিল দিয়ে নির্মিত। এ কারণে নৌযানগুলো ভারি হওয়াতে বেশি শক্তির অপচয় হয়। তবে ফাইবার দিয়ে নৌকা তৈরি করা হলে কম শক্তি খরচে চালানো সম্ভব। ¯্রডো বলছে, দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে ফাইবার দিয়ে নির্মিত একটি নৌকাতে তারা সৌর প্যানেল স্থাপন করবে। সংশ্লিষ্টরা বলছে, ১২ ভোল্টের চারটি ব্যাটারি চার্জের জন্য ২৫০ ওয়াটের দুটি সোলার প্যানেল ব্যবহার করলেই চলে। যা যাত্রীদের ছাউনি হিসেবেও কাজ কর। ব্রাশলেস ডিসি মোটর ব্যবহার করা হয়। এই ইঞ্জিনের গতি কোনভাবেই শ্যালো ইঞ্জিনের চেয়ে কম নয়। এখন নদীতে যেসব ছোট নৌযান চলে তার সবই শ্যালো ইঞ্জিনে চলে। জ¦ালানি হিসেবে ডিজেল ব্যবহার করা হয়। এতে শব্দ এবং পরিবেশ দূষিত হয়। তবে সোলার প্যানেল ব্যবহার করলে দূষণ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
×