ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

প্যাকেটজাত দুধ খেয়ে শিশু অসুস্থ ॥ দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ২৫ অক্টোবর ২০১৮

প্যাকেটজাত দুধ খেয়ে শিশু অসুস্থ ॥ দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি

স্টাফ রিপোর্টার,বগুড়া অফিস ॥ বগুড়ায় বেবি ফুডসের দোকান থেকে কেনা একটি বহুজাতিক কোম্পানির দুধ দেড় মাস বয়সী শিশুসন্তানকে খাওয়ানোর পর অসুস্থ হয়ে পড়ায় এক মাকে বিনিদ্র রজনী কাটিয়ে আবার দোকানির অপমান সহ্য করতে হয়েছে। অসুস্থ শিশুসন্তানের কান্নায় তরুণী এ মা এক প্যাকেট দুধের জন্য গভীর রাত পর্যন্ত ছোটাছুটির পর বুধবার সকালে থানায় গিয়েও বিফলে ফিরতে হয়। তার অভিযোগ কৌটা ও প্যাকেটজাত ওই দুধে ভেজাল রয়েছে। এর বিচার চেয়ে জেলা প্রশাসকের নিকট তিনি অভিযোগও করেছেন। জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ জানিয়েছেন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। শহরের নুরানী মোড় সংলগ্ন রানার সিটি নামে আবাসিক এলাকার লাভলি নামের ওই মা জানান, ৪২ দিন আগে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে তার শিশুটির জন্ম হয়। নাম রাখা হয় আফরিন। তবে মায়ের দুধ ঠিকমতো না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে শিশুটিকে প্যাকেটজাত দুধ খাওনোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। মঙ্গলবার বিকেলে লাভলি শহরের গালাপট্টি এলাকার বেবি ফুডসের দোকান রূপা স্টোর থেকে একটি বহুজাতিক কোম্পানির প্যাকেটজাত(কৌটা) দুধ কেনেন। রাতে সেই দুধ শিশুটিকে খাওয়ানোর পর সে অসুস্থ হয়ে বমি করতে থাকে। পরে শিশুটি খাবারের জন্য কান্না শুরু করলে তিনি দোকানিকে বিষয়টি জানিয়ে নতুন এক প্যাকেট দুধ দেয়ার জন্য বললে দোকানি তাতে সাড়া দেননি। মধ্যরাত পর্যন্ত তিনি শিশুটির খাবারের জন্য দিশেহারা হয়ে ঘোরেন। শিশুটির কান্নায় অসহায় ওই মা ভোর ৪টার দিকে ওই দোকানের সামনে এসে বসে থাকেন। সকাল ৭টা পর্যন্ত শিশুর খাবার ব্যবস্থা করতে না পেরে তিনি বগুড়া সদর থানা পুলিশকে দুধের কারণে শিশুর অসুস্থতা জানিয়ে এ বিষয়ে পদক্ষেপ এবং দোকানিকে নতুন একটি দুধ দেয়ার জন্য ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জানালে থানা থেকে তাকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। পরে তিনি আবার ওই বেবি ফুডসের দোকানে গেলে তাকে অপমান করা হয়। তবে এতে তিনি দমে না গিয়ে তার অভিযোগের বিষয়ে অটুট থাকেন। অবশেষে সেখান থেকে একই কোম্পানির নতুন যে দুধ দেয়া হয় তাও একই ধরনের বলে অভিযোগ করেন লাভলি। বিষয়টি তিনি সাংবাদিকদের জানিয়ে জেলা প্রশাসকের নিকট দুপুরে মৌখিক অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ওই মা তার নিকট এসে অভিযোগ করার পর বিষয়টি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। সদর থানায় শিশু আফরিনের মা লাভলি বেগমের সঙ্গে সঠিক আচরণ না করার বিষয়ে জানতে চাইলে বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা জানান, বিষয়টি তদন্তের জন্য এক সিনিয়র কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। অভিযোগ সঠিক হলে এর জন্য দায়ী পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। অপরদিকে বেবি ফুডসের দোকান রূপা স্টোরের মালিক নারায়ণ আগারওয়ালা তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, তিনি তার দোকান থেকে প্যাকেটজাত দুধ কেনা মহিলার সঙ্গে কোন খারাপ ব্যবহার করেনি। তিনি জানান, রাতে দুধ পাল্টে দিতে না পারলেও সকাল ৮ টার সময় তিনি তা দিয়েছেন।
×