ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাংকিং খাত বেশি বড় হয়ে গেছে : অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০২:০৯, ২৪ অক্টোবর ২০১৮

ব্যাংকিং খাত বেশি বড় হয়ে গেছে  :  অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের ব্যাংকিং খাত ও ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন খুব বেশি বড় হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, তবে সার্বিকভাবে ব্যাংকিং খাত ভাল আছে। পল্লী বিদ্যুতের জন্য ট্রান্সফারমার সরবরাহে ৪০ শতাংশ আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের বাধ্যবাধকতা রাখার অনুশাসন দিয়ে দশ ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে সরকারী ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে সরকারী ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। মুহিত জানান, সংসদ নির্বাচনে না গেলেও চলে যাওয়ার আগে ব্যাংকিং খাতসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে প্রস্তাবনা প্রতিবেদন রেখে যাওয়া হবে। এখাতে কিছুটা সংস্কারের প্রয়োজন আছে। তিনি বলেন, অনেক ব্যাংক, অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান দুটোই এ মুহূর্তে দেশে বেশি। এটা মনে হয়, একটু সীমিতকরণ করার প্রয়োজন হতে পারে। টু মেনি ব্যাংকস, টু মেনি ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস। এ খাত নিয়ে আপনি কি প্রতিবেদন দিতে যাচ্ছেন-সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনো এ বিষয়ে কিছু তৈরি করা হয়নি। তবে কীভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানখাত সংস্কার করা যায়, সে বিষয়ে একটি গাইড লাইন দেয়া হবে। এই রিপোর্টেই প্রধানত ব্যাংক ও আর্থিকখাত সংস্কারের কথা থাকবে। নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা চলতি মাসে গঠন হতে পারে। তিনি নিজেই নির্বাচনকালীন সরকারে থাকছেন বলেও জনান অর্থমন্ত্রী। আন্তর্জাতিক দরপত্রে ট্রান্সফরমার কেনা হবে ॥ পল্লী বিদ্যুতের জন্য ট্রান্সফারমার সরবরাহে ৪০ শতাংশ আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের বাধ্যবাধকতা রাখার অনুশাসন দিয়েছে একটি মন্ত্রিসভা কমিটি। স্থানীয় দরদাতাদের কাছ থেকে ভালো দর না পাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে বুধবার সচিবালয়ে সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এই অনুশাসন দেয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম বলেন, সভায় একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে, ডমেস্টিক ক্রয়ের জন্য কম্পিটিশনটা ভাল হচ্ছে না, দামটা বেড়ে যাচ্ছে। পরবর্তীতে ৪০ শতাংশ করে ইন্টারন্যাশন বিডারদেরকে দেয়া হবে। ডমেস্টিক বিডাররা তো ডমেস্টিক প্রেফারেন্স পেয়েই থাকেন। আরও কম্পিটিটিভ করার জন্য ইন্টারন্যাশনাল বিডারদের দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের শতভাগ পল্লী বিদ্যুতায়নের জন্য বিতরণ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ (রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগ)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৯৩ হাজার ৩২৪টি ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমার ৫৪৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকায় কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেয় কমিটি। এছাড়া ৬০টি ব্রিজের সঙ্গে আরও ২২টি ব্রিজ যোগ হয়েছে। মূল চুক্তিমূল্য ছিল ২২০ কোটি ২৩ লাখ টাকা, এটা ৩১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা বেড়ে এখন ২৫১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা হয়েছে। নৌ-মন্ত্রণালয়ের অধীন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন মোংলা বন্দর চ্যানেলের আউটার বারে ড্রেজিংয়ের জন্য একমাত্র দরদাতা হিসেবে কাজ পেয়েছে হংকং ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। এতে ব্যয় হবে ৫৯২ কোটি ৫১ লাখ টাকা। জাইকা এবং বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক সহায়তায় ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পে (দ্বিতীয় পর্যায়) কনসোর্টিয়াম ফার্ম নিয়োগের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি। জাপানের নিপ্পন কোম্পানি লিমিটেড বাংলাদেশের দুটি কোম্পানিকে সঙ্গে নিয়ে কাজটি পেয়েছে। তারা ৬২ মাসের জন্য নিয়োজিত থাকবে, নিয়োগ মূল্য ১০৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। কনসালটেন্সি সার্ভিস ফর ট্রেনিং এক্সারসাইজ অ্যান্ড ড্রিল (টিইডি) প্রোগ্রামের আওতায় ভূমিকম্পরোধে দক্ষ জনবল তৈরির জন্য পরামর্শক সেবা ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি। অস্ট্রেলিয়ার রিস্ক অ্যান্ড ইমারজেন্সি ম্যানেজমেন্ট ৮৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকায় পরামর্শক নিয়োগ পেয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্ব ব্যাংক এতে অর্থায়ন করবে। এছাড়া ৩৪ দশমিক ০৯ কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষণে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডকে কাজ দেয়া হয়েছে, এতে ব্যয় হবে ৪৫৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। দুই হাজার ৭২১ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজশাহী ওয়াসার ভূ-উপরিস্থ পানি শোধনাগার নির্মাণের কাজ জিটুজি ভিত্তিতে চীনকে দেয়া হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত সচিব নাসিমা। এদিকে, নেটওয়ার্ক রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত, আপগ্রেডেশন, প্রতিস্থাপন ও রাজস্ব আয়ের অংশ বিসিককে দেয়ার বিষয়ে এর আগে অনুমোদন দেয়া দুটি সিদ্ধান্ত বাতিলের প্রস্তাবে সায় দিয়েছে সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। নাসিমা বেগম জানান, দেশের দুই হাজার ৬০০টি ইউনিয়নে ইন্টারনেট সেবা, অপটিক্যাল ফাইবার কেবল স্থাপন, অ্যাকটিভ ডিভাইজ রক্ষণাবেক্ষণ এবং কিছু আপগ্রেডেশনের কাজ পেয়েছিল সামিট কমিউনিকেশন এবং ফাইবার অ্যাট হোম। এখন এই কাজটা পিপিপিতে বাস্তবায়নের জন্য কিছুদিন আগে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
×