ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চট্টগ্রামে বাংলাদেশ-জিম্বাবুইয়ে দ্বিতীয় ওয়ানডে আজ, প্রতিপক্ষকে খাটো করে দেখছেন না অধিনায়ক মাশরাফি

দেশের মাটিতে আবারও সিরিজ জয়ের হাতছানি

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ২৪ অক্টোবর ২০১৮

দেশের মাটিতে আবারও সিরিজ জয়ের হাতছানি

মিথুন আশরাফ ॥ চার বছর আগে ২০১৪ সালের নবেম্বর থেকে যে বাংলাদেশ দল সিরিজ জেতা শুরু করেছিল, টানা ছয় দ্বিপক্ষীয় হোম সিরিজ জিতেছিল। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে গিয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জেতা সিরিজটিই দেশের মাটিতে সর্বশেষ সিরিজ জেতা হয়। এরপর দুই বছর অতিক্রম হয়ে গেল। কিন্তু দেশের মাটিতে কোন সিরিজ জেতা হয়নি বাংলাদেশের। আজ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে খেলতে নামবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি জিতলেই দুই বছর পর দেশের মাটিতে আবারও সিরিজ জেতা হবে। সেই সিরিজ জেতার হাতছানি দিচ্ছে বাংলাদেশকে। প্রথম ওয়ানডেতে ২৮ রানে জিতেছে বাংলাদেশ। আর তাই সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে। আজ জিতলে সিরিজে ব্যবধান ২-০ হয়ে যাবে। সিরিজ জয় নিশ্চিত হবে। এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জেতা হয়ে যাবে। আজ না জিতলেও সিরিজ জেতার সুযোগ থাকবে। তখন শুক্রবার সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে জিততে হবে বাংলাদেশকে। ২০১৪ সালের শেষদিক থেকে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টানা দ্বিপক্ষীয় হোম সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। প্রথমে জিম্বাবুইয়েকে, এরপর পাকিস্তানকে, ভারতকে, দক্ষিণ আফ্রিকাকে, আবার জিম্বাবুইয়ে ও সর্বশেষ ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তানকে সিরিজে হারায় বাংলাদেশ। টানা ছয় সিরিজ জেতার পর গিয়ে ইংল্যান্ডের কাছে ২০১৬ সালের অক্টোবরে সিরিজ হারে বাংলাদেশ। দেশের মাটিতে সেটিই এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সর্বশেষ খেলা দ্বিপক্ষীয় সিরিজও ছিল। এরমধ্যে আর দেশের মাটিতে সিরিজই হয়নি। এবার জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে আবার দুই বছর পর দেশের মাটিতে সিরিজ খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচটি জেতায় আজ জিতলেই সিরিজ জেতা হয়ে যাবে। আর সিরিজে জিতলেই জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ১০টি সিরিজ জেতা হবে। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ২০০১ সালে প্রথমবারের মতো দ্বিপক্ষীয় সিরিজে খেলে বাংলাদেশ। এরপর ২০১৫ সাল পর্যন্ত দুই দলের মধ্যকার ১৫টি দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলা হয়। ৯টি সিরিজে বাংলাদেশ জিতে। ৬টি সিরিজে হারে বাংলাদেশ। ২০০৪ সাল পর্যন্ত টানা তিন সিরিজে হারে বাংলাদেশ। এরপর ২০০৫ সালে যে বাংলাদেশ প্রথমবার সিরিজে জিতে এরপর জেতার সংখ্যা বাড়তেই থাকে বাংলাদেশের। ২০১১ সালের পর এখন পর্যন্ত টানা তিন সিরিজে বাংলাদেশই জিতে। দুই দলের মধ্যকার সর্বশেষ ২০১৫ সালে খেলা ওয়ানডে সিরিজেও জিতে বাংলাদেশ। এবার যখন দুই দল আবার বাংলাদেশের মাটিতে মুখোমুখি হয়েছে তখনও বাংলাদেশের সামনেই সিরিজ জেতার সুযোগ ধরা দিয়েছে। সেই সুযোগ ভালভাবেই কাজে লাগাতে চান বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। তিনি বলেছেন, ‘তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটি জিতে আমরা এগিয়ে আছি। যে কোন দলের জন্য দৃশ্যত এটি বাড়তি সুবিধা। তাই টেনশন কাজ করছে না। শিরোপার দিকেই চোখ আমাদের।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘গত ম্যাচে আমাদের টপ কিংবা মিডলঅর্ডারের ব্যাটসম্যানরা রান না পেলেও নিচের দিকে এসে সাইফউদ্দিন রান পেয়েছে। এটি দলের জন্য ইতিবাচক। খেলায় যে কোন পরিস্থিতিতে একজন ব্যাটসম্যান মাঠে দাঁড়াতে পারাটা ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। দীর্ঘদিন ধরেই একজন পেসার কাম অলরাউন্ডার খুঁজছিলাম আমরা। মিরপুরের ম্যাচে সাইফউদ্দিনের পারফর্মেন্স আমাদের আশা জাগিয়েছে।’ তবে মাশরাফির চিন্তা আছে শিশির নিয়ে। চট্টগ্রামে বেলা যত গড়ায় ততই শিশির ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়। মাশরাফি তাই বলেছেন, ‘ক’দিন ধরেই চট্টগ্রামে শিশির পড়ছে বেশ। দিবা-রাত্রির ম্যাচে শিশির বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। জিম্বাবুইয়ে দলেও সিনিয়র খেলোয়াড়রা এসেছেন। তাদেরও হাল্কাভাবে নেয়ার সুযোগ নেই। সবকিছু মাথায় রেখেই আমরা ম্যাচ ঘিরে পরিকল্পনা করছি।’ অবশ্য জিম্বাবুইয়েকে সহজভাবেও নিচ্ছেন না মাশরাফি। জিম্বাবুইয়ে দলটি নিয়ে বলেছেন, ‘ওই সময়ের জিম্বাবুইয়ে একরকম ছিল, আমাদের ক্রিকেটে পেশাদারিত্ব শুরুর সময়। অবশ্যই পার্থক্য একটা ছিল। এখন হয়তো আপনারা পার্থক্য দেখছেন। আমরা কিন্তু ওভাবে চিন্তা করছি না। তাদের ছোট করে দেখার কোন সুযোগ নেই।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘তাদের সব সিনিয়র খেলোয়াড়ই এসেছে এবং আমরা জানি তারা তাদের সেরাটা খেললে আমাদের জন্য কঠিন হবে। সত্যিকার অর্থে এশিয়া কাপে যে মানসিকতা নিয়ে নেমেছি আমরা, সেই মানসিকতা নিয়েই খেলছি, যেন মিসটেক না করি। কিন্তু এটা ক্রিকেট, আমরা তো এখানে হংকংয়ের সঙ্গেও হেরেছি। ওটা কিন্তু মাথায় আছে আমাদের।’
×