ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘জনগনকে সঙ্গে নিয়ে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি রুখে দেয়ার ডাক’

প্রকাশিত: ০১:৪৩, ২৩ অক্টোবর ২০১৮

‘জনগনকে সঙ্গে নিয়ে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি রুখে দেয়ার ডাক’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কোন অপশক্তি যেন নতুন করে অঘটন ঘটাতে না পারে, সেদিকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে সামাজিক সংগঠন সম্প্রীতি বাংলাদেশ। নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ভোট দেয়ারও আহ্বান জানান সংগঠনের নেতারা। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘সম্প্রীতির উদারহরণ এখন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলন থেকে নেতারা এ আহ্বান জানান। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার পিএসসি (অব.)। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের প্রধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. অসীম কুমার সরকার, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম বড়ুয়া, রেভারেন্ড মার্টিন অধিকারী ও ডা. নুজহাত চৌধুরী। সঞ্চালনা করেন সম্প্রীতি বাংলাদেশ-এর সদস্য-সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ পরিচয়ে কেউ যেন নিগ্রহের শিকার না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। এবারের নির্বাচনে ‘আমার ভোট আমি দেব, তবে অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে দেব’। বক্তারা বলেন, দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর অসাম্প্রদায়িক মনোভাবের কারণেই অন্ধকারের কুশীলবরা কোনো অঘটন ঘটাতে ব্যর্থ হয়েছে। কোন ভাবেই সাম্প্রদায়িক গোষ্টীর মনোভাবকে সফল হতে দেয়া যাবে না। তাহলে গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আঘাত আসবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, একটি অপশক্তি সবসময় দেশের মধ্যে গোলযোগ সৃষ্টি করতে চেয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকলে দেশের সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। বিষয়টি সবাইকে মনে রাখতে হবে। নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার পিএসসি (অব.) বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী ও ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগের ও পরের ঘটনাগুলো আমাদের মন থেকে মুছে যায়নি। সাম্প্রদায়িক অপশক্তি নতুন করে সংগঠিত হয়ে যেকোনো অঘটন ঘটাতে তৎপর। সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এ ব্যাপারে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সব অপশক্তিকে রুখে দিতে হবে। শুরুতেই লিখিত বক্তব্যে পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রীতি বাংলাদেশ-এর পথচলার কথা তুলে ধরে বলেন, চলতি বছরের ৭ জুলাই আত্মপ্রকাশের পর থেকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সম্প্রীতি বাংলাদেশ নাম পৌঁছে গেছে। সমাজে, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে সম্প্রীতি বাংলাদেশ বিশেষ সাড়া জাগাতে পেরেছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে যেমন, তেমনি প্রবাসী বাঙালিদের কাছ থেকেও প্রচুর সাড়া মিলেছে। তিনি বলেন, চলতি বছর এখন পর্যন্ত দেশে তিনটি বড় ধর্মীয় উৎসব পালিত হয়েছে- ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা ও শারদীয় দুর্গোৎসব। তিনটি উৎসবই পালিত হয়েছে সাড়ম্বরে। কোনো অঘটনের খবর পাওয়া যায়নি। এজন্য সম্প্রীতি বাংলাদেশ মিডিয়ার মাধ্যমে দেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানায়। দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর অসাম্প্রদায়িক মনোভাবের কারণেই অন্ধকারের কুশীলবরা কোনো অঘটন ঘটাতে ব্যর্থ হয়েছে। আগামীকাল পালিত হতে যাওয়া প্রবারণা পূর্ণিমা ও ডিসেম্বরে বড়দিনও দেশের মানুষের পূর্ণ সহযোগিতায় নির্বিঘ্নে পালিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এবারের দুর্গোৎসবে হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য একটি বড় উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ঢাকেশ্বরী মন্দিরের বেহাত হয়ে যাওয়া জমি পুনরুদ্ধার করে দিয়েছেন তিনি। এজন্য তাঁকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের মানুষ তাঁর যোগ্য নেতৃত্বে সব ধরণের অশক্তিকে রুখে দিতে প্রস্তুত।
×