ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চট্টগ্রামে আজ অনুশীলন করে বুধবার সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মুখোমুখি বাংলাদেশ-জিম্বাবুইয়ে

সাগরিকায় সিরিজ জয়ের মিশন টাইগারদের

প্রকাশিত: ০৭:১২, ২৩ অক্টোবর ২০১৮

সাগরিকায় সিরিজ জয়ের মিশন টাইগারদের

মোঃ মামুন রশীদ ॥ প্রথম ওয়ানডেতে মধ্যরাত পর্যন্ত মাঠেই কাটাতে হয়েছে উভয় দলকে। পূর্ণ বিশ্রামে ম্যাচের ক্লান্তি পুরোপুরি কাটিয়ে সোমবার বিকেলেই চট্টগ্রাম রওনা দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল ও জিম্বাবুইয়ে ক্রিকেট দল। সন্ধ্যা নাগাদই বন্দরনগরীতে পৌঁছে গেছে উভয় দল দ্বিতীয় লড়াইয়ে নামার আগে। তবে এর আগে আজ শুধু একটা দিনই সময় পাবে উভয় দল নিজেদের প্রস্তুত করতে। সাগরিকায় অবস্থিত জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জিতলেই এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ নিশ্চিত করবে স্বাগতিক টাইগাররা। আর সিরিজে টিকে থাকার জন্য অবশ্যই এই ম্যাচে জিততে হবে জিম্বাবুইয়ের। স্বাগতিক হলেও বাংলাদেশ দল ঠিক দুই বছর পর খেলতে নামবে এই ভেন্যুতে। তাই টাইগারদেরও বেশ সতর্কই থাকতে হবে কন্ডিশন নিয়ে। মিরপুরের সঙ্গে অনেক ফারাক চট্টগ্রামের পরিবেশ, কন্ডিশন ও উইকেটের পরিস্থিতির। তাই সেখানে সফরকারীদের জন্য ভিন্ন চ্যালেঞ্জ। প্রথম ওয়ানডে মিরপুরে খেলতে নামার আগে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছে সফরকারীরা। কিন্তু এবার চট্টগ্রামে নামার আগে মাত্র একটা দিন হ্যামিল্টন মাসাকাদজারা অনুশীলন করতে পারবেন। এখান থেকেই তাদের বুঝে উঠতে হবে সাগরিকার বর্তমান পরিস্থিতি এবং মানিয়েও নিতে হবে এর মধ্যে। অবশ্য ম্যাচের আগে পুরো একটা দিন যেমন আছে, ম্যাচটি দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হওয়াতে সুযোগ আছে সেদিনও মূল ভেন্যুতে নেমে নিজেদের ঝালিয়ে নেয়ার। স্বাগতিক হলেও বাংলাদেশ দল দীর্ঘদিন পর সাগরিকায় আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামবে। ২০১৬ সালের ১২ অক্টোবর সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছিল এখানে বাংলাদেশ দল। কিন্তু সাগরিকায় সাফল্যের হার সবচেয়ে বেশি মাশরাফি বিন মর্তুজাদের। এ মাঠে নিষ্পত্তি হওয়া ১৭ ওয়ানডের (সূচী অনুসারে থাকা ১৯ ওয়ানডের মধ্যে দুটি ম্যাচে খেলাই হয়নি) ১০টিতেই জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ, আর হেরেছে মাত্র ৭টি। অবশ্য সর্বশেষ ম্যাচটিতে ইংলিশদের কাছে ৪ উইকেটে হারতে হয়েছিল টানা তিন জয় তুলে নেয়ার পর। কিন্তু সর্বশেষ ১০ ম্যাচের মধ্যে এখানে টাইগারদের সাফল্য সর্বাধিক। ৭ জয়ের বিপরীতে মাত্র দুই হার এবং অপর ম্যাচ পুরোপুরিই পরিত্যক্ত। এই মাঠে সর্বোচ্চ ২৮১ রান করতে পেরেছে বাংলাদেশ। সেটি ২০১৪ সালের ২১ নবেম্বর জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষেই। সেই সিরিজের পরের ম্যাচটি ছিল দু’দিন পর একই ভেন্যুতে। সেটিই ছিল জিম্বাবুইয়ের সাগরিকায় শেষবারের মতো খেলা। অর্থাৎ প্রায় চার বছর পর আরেকবার এখানে মাঠে নামতে যাচ্ছে তারা। ২০১১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের বিপক্ষে এখানে ১১৯ রানেই গুটিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ যা সাগরিকায় নিজেদের সর্বনি¤œ রান। তবে এ মাঠের সর্বনি¤œ দলী রান মাত্র ৪৪! জিম্বাবুইয়েকে ২০০৯ সালের ৩ নবেম্বর এই রানেই গুটিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ দল। সেই ম্যাচে বর্তমান জিম্বাবুইয়ে দলের অধিনায়ক মাসাকাদজা ছাড়াও খেলেছিলেন ব্রেন্ডন টেইলর, কাইল জারভিস ও এলটন চিগুম্বুরা। আর বাংলাদেশ দলের বর্তমান স্কোয়াডের শুধু মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ছিলেন। তাই উভয় দলের জন্যই এবার সাগরিকায় নামাটা হবে নতুন অভিজ্ঞতা। অবশ্য, স্বাগতিক হিসেবে কিছুটা ভিন্নতা থাকলেও বাংলাদেশ দল মানিয়ে নিতে খুব বেশি সমস্যায় পড়বে না। তাছাড়া প্রথম ওয়ানডেতে সহজ জয়ের পর অনেকটাই ভারমুক্ত বাংলাদেশ দল। লোকাল বয় তামিম ইকবাল এখানেও থাকবেন না, নেই সাকিব আল হাসানও। উভয় ক্রিকেটার এই পুরো সিরিজে ইনজুরির কারণে নেই। তবে সেই অভাবটা হয়তো দ্বিতীয় ম্যাচেও অনুভব করবে না বাংলাদেশ দল। কিন্তু প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ চলার মাঝপথেই বিজয় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর স্বাগতিকদের বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে গা ছাড়া মনোভাব ছিল দৃষ্টিকটু। সেই সুযোগে জিম্বাবুইয়ের লোয়ার অর্ডার অনেক রান তুলে পরবর্তী ম্যাচের জন্য ভাল অনুপ্রেরণা পেয়েছে। ৮ উইকেট পতনের পরও ৭৪ রান করেছে তারা যা আত্মবিশ্বাসী করবে সফরকারীদের। পেসার জারভিস জিম্বাবুইয়ে ইনিংসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৭ রান করেছেন। আর বাংলাদেশের ব্যাটিংয়েও ছিল দৈন্যতা। ওপেনার ইমরুল কায়েসের ১৪৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস ছাড়া বাকিরা ছিলেন ব্যর্থ। দীর্ঘদিন পর আবার দলে ফেরা অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের ৫০ রান অবশ্য বাকিদের জন্য অনুপ্রেরণা হবে। এই ম্যাচে নবাগত ফজলে রাব্বির আরেকটি চ্যালেঞ্জ। অভিষেকে শূন্য রানে সাজঘরে ফিরেছিলেন তিনি। ওপেনার লিটন কুমার দাসও রান পাননি, তার ফেরার অপেক্ষা। তবে পুরো বাংলাদেশ দল মূলত তাকিয়ে থাকবে দুই অভিজ্ঞ মুশফিক-মাহমুদুল্লাহর ব্যাটের দিকে। এক ম্যাচ আগেই সিরিজ জিততে হলে এ দু’জনের নৈপুণ্যই অনেকখানি এগিয়ে দেবে বাংলাদেশ দলকে।
×