ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সহায়ক অবকাঠামোর অভাবে দেশে বাড়ছে না বিদেশী বিনিয়োগ

প্রকাশিত: ০৬:৫৪, ২৩ অক্টোবর ২০১৮

সহায়ক অবকাঠামোর অভাবে দেশে বাড়ছে না বিদেশী বিনিয়োগ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দীর্ঘমেয়াদী বাণিজ্যিক কৌশল আর সহায়ক অবকাঠামোর অভাবে বাংলাদেশে বাড়ছে না বিদেশী বিনিয়োগ, এমন মত শিল্প উদ্যোক্তাদের। রাজধানীতে আয়োজিত দুই দিনের প্রদর্শনী ‘শো’কেস কোরিয়া’র শেষ দিনে এমন পর্যালোচনা তুলে ধরেন তারা। তবে, দর্শনার্থীরা মনে করছেন, সামগ্রিক অর্থনীতির উন্নয়নে ইতিবাচক ফল পেতে পরিবর্তন দরকার, ব্যবসায়ীদের মানসিকতারও। যে কোন দেশে বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ধারাবাহিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি বড় ভূমিকা রাখে প্রতিযোগিতামূলক মজুরি কাঠামো। যার দুটোতেই বাংলাদেশের অবস্থান ক্রমেই শক্ত হচ্ছে, এরপরও দেশের অর্থনীতিতে খুব একটা বাড়ছে না বিদেশী বিনিয়োগ। এমন প্রেক্ষাপটে রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে আয়োজন দুই দিনের প্রদর্শনী শো’কেস কোরিয়া। বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগ ফেরি করে বেড়ানো স্যামসাং, এলজি, কিয়া মোটরসের পাশাপাশি প্রদর্শনীতে দেশের মানুষ পরিচিত হয়েছে অর্ধশতাধিক কোরীয় পণ্য উৎপাদকদের সঙ্গে। যেখানে আগ্রহের শীর্ষে প্রক্রিয়াজাত খাদ্য সামগ্রী, ইলেকট্রনিক পণ্য, বিলাসবহুল গাড়ি আর কোরিয়ান কসমেটিকস। দেশটির সঙ্গে দ্বিপাক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এ আয়োজনকে গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দেখছেন দর্শনার্থীরা। দর্শনার্থীরা বলেন, ‘বিদেশীদের সঙ্গে আমরা ব্যবসা করতে পারলে ভাল সুযোগ আসবে। ভারতের কসমেটিকের ওপর মানুষের যে বিশ্বাস, তার থেকে কোরিয়ান আইটেমের ওপর বেশি বিশ্বাস রাখে।’ আরেক দর্শনার্থী বলেন, ‘কত তাড়াতাড়ি মুনাফা পকেটে তুলতে পারবে সেই চিন্তা না করে কিভাবে পণ্য বিক্রি করব সেই চিন্তা থাকা প্রয়োজন। পণ্য বিক্রি করে ব্যাংকের ঋণ শোধ করব।’ তবে একতরফা বাণিজ্য নয়, কোরিয়ার সঙ্গে যৌথ বাণিজ্যিক সম্পর্কোন্নয়নকে প্রাধান্য দিচ্ছেন দেশীয় উদ্যোক্তারা। বাংলাদেশী উদ্যোক্তারা জানান, ‘আমি একটি ব্রান্ডকে কিছু দেব। সেই চিন্তা সবার মধ্যে আসছে। এটা যখন আরও বাড়বে তখন তারা চিন্তা করব না এখানে আরও বিক্রি করার মতো জায়গা আছে।’ কোরিয়া উদ্যোক্তারা বলেন, ‘ঐতিহাসিকভাবেই কোরিয়া পণ্যে বাংলাদেশী মানুষের আস্থা রয়েছে। পণ্য উৎপাদনে যা আমাদের উৎসাহিত করে। তবে দিন শেষে মুনাফা অর্জনই শেষ কথা। আপনি চাইবেন আপনার বিনিয়োগ সুরক্ষিত থাকুক।’ প্রদর্শনীর আয়োজক সংস্থা কেবিসিসিআই মনে করছে, নীতিমালায় ঘন ঘন পরিবর্তন আনার কারণে, বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে বাংলাদেশ। কোরিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি শাহাব উদ্দিন খান বলেন, ‘জমি দিয়ে দিলেন আর বলেন এখানে তোমরা কারখানা কর। সেটা তো হবে না। কারণ আমার যে ১০ হাজার শ্রমিক থাকবে তাদের থাকার তো জায়গা থাকতে হবে। তাদের তো বাজার করে খেতে হবে। একটি মাঠের মধ্যে একটি ইপিজেড করে দিলেন, আর সেখানে হবে সেটা না। নীতিমালা এবং একটি অবকাঠামো এই দুইটা করে দিলে ব্যবসায়ীদের আর কিছু বলতে হয় না।’ সংগঠনটি মনে করছে, দেশে রফতানিযোগ্য পণ্যের মানোন্নয়ন ছাড়াও শিল্প কারখানায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর ক্ষেত্রে এ আয়োজন বড় ভূমিকা রাখবে। ঐতিহাসিকভাবেই বাংলাদেশের মানুষের আস্থা রয়েছে কোরীয় পণ্যে। এখানে পণ্য উৎপাদনে যা আমাদের উৎসাহিত করে। তবে, দিনশেষে মুনাফা অর্জনই শেষ কথা, আপনি নিশ্চয়ই চাইবেন আপনার বিনিয়োগ সুরক্ষিত থাকুক।
×