ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

৩ হাজার ৮৮৫ কোটি ৭২ লাখ টাকার প্রকল্প প্রস্তাব আজ একনেকে উঠছে

এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্ক জোরদারের উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৬:৫৪, ২৩ অক্টোবর ২০১৮

এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্ক জোরদারের উদ্যোগ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ শিল্প ও বাণিজ্য গতিশীল করতে এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্ক জোরদারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ‘ভূমি অধিগ্রহণ ও ইউটিলিটি স্থানান্তর প্রকল্প: সাপোর্ট টু ঢাকা (কাঁচপুর)-সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ এবং উভয় পাশে পৃথক সার্ভিস লেন নির্মাণ’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বিমসটেক করিডর, সার্ক করিডরসহ আঞ্চলিক সড়ক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ত্বরান্বিত হবে। ভবিষ্যতে উপ-আঞ্চলিক সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার জন্য মহাসড়কের উভয় পাশে পৃথক সার্ভিস লেনসহ চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮৮৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা। আজ মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হচ্ছে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেক ২০২২ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, টেকসই সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার জন্য সরকার দেশব্যাপী জাতীয় মহাসড়কের উভয় পাশে পৃথক সার্ভিস লেনসহ ক্রমান্বেয়ে চার লেনে উন্নীতকরণের পরিকল্পনা নিয়েছে। এ মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে ধীরগতির যানবাহনের জন্য উভয় পাশে পৃথক লেনের সংস্থান রেখে জাতীয় মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণের জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কারিগরি সহায়তায় দেশব্যাপী ১ হাজার ৭৫২ কিলোমিটার মহাসড়কের অংশ হিসেবে ঢাকা (কাঁচপুর) সিলেট-তামাবিল মহাসড়কটির ফিজিবিলিটি স্টাডি ও ডিটেইলড ডিজাইন এর মধ্যেই শেষ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় বলছে, ঢাকা (কাঁচপুর)-সিলেট মহাসড়কটি এশিয়ান হাইওয়ে এবং সার্ক হাইওয়ে করিডোরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি উপআঞ্চলিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য অঞ্চলের যোগাযোগের প্রধান করিডোর। সে জন্য ঢাকা (কাঁচপুর)-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বর্তমান এ্যালাইনমেন্ট বিদ্যমান রাইট অব ওয়ে গড়ে প্রায় ৩৩ মিটার। কিন্তু ঢাকা (কাঁচপুর)-সিলেট মহাসড়কে দুপাশে সার্ভিস লেনসহ চার লেনে উন্নীতকরণের জন্য বিদ্যমান রাইট অব ওয়ে ৩৩ মিটার থেকে প্রায় চার কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণ এবং বিভিন্ন সাব-স্ট্যান্ডার্ড বাঁকগুলো সরলীকরণের জন্য বিদ্যমান সড়কের দুই পাশে ৯৮৬ দশমিক ৪৭৬ একর ভূমি অধিগ্রহণ এবং ইউটিলিটি স্থানান্তর প্রয়োজন রয়েছে। ভবিষ্যতে ঢাকা-সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ এবং উভয় পাশে পৃথক সার্ভিস লেন নির্মাণের জন্য যে বিনিয়োগ প্রকল্প নেয়া হবে, তার লিংক প্রকল্প হিসেবে ভূমি অধিগ্রহণ এবং ইউটিলিটি স্থানান্তর কার্যক্রম শেষ করা প্রয়োজন। এই প্রকল্প এশিয়ান হাইওয়ে অংশ হিসেবে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণ কাজ সহজ করবে। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য ৪ হাজার ২৭৫ কোটি ৫৭ লাখ ২৬ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৯ সালের মার্চ পর্যন্ত অনুমোদনের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয় পরিকল্পনা কমিশনে। প্রস্তাবিত প্রকল্পের ওপর ২০১৮ সালের ৬ জুন প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। পুনর্গঠিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবের (ডিপিপি) প্রাক্কলিত ব্যয় ৩ হাজার ৮৮৫ কোটি ৭২ লাখ ২৩ হাজার টাকা। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য সুবীর কিশোর চৌধুরী পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে একনেকের জন্য তৈরি প্রকল্পের সারসংক্ষেপে বলেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় ভূমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হলে ঢাকা থেকে সিলেটের তামাবিল পর্যন্ত ২৭০ দশমিক ৫৫৭ কিলোমিটার দীর্ঘ মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ এবং উভয় পাশে পৃথক সার্ভিস লেন নির্মাণ সহজ হবে। প্রকল্পের আওতায় ৯৮৬ দশমিক ৪৭৬ একর ভূমি অধিগ্রহণ ও ইউটিলিটি স্থানান্তরসহ অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করা হবে।
×