ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এক ক্লিকেই জানা যাবে সব তথ্য

মাইক্রোসফটের সঙ্গে বিদ্যুত বিভাগের চুক্তি

প্রকাশিত: ০৬:০০, ২৩ অক্টোবর ২০১৮

মাইক্রোসফটের সঙ্গে বিদ্যুত বিভাগের চুক্তি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এক ক্লিকেই জানা যাবে বিদ্যুত বিভাগের সব তথ্য। এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং বা ইআরপি করতে বিশ্বখ্যাত সফটওয়ার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের সঙ্গে চুক্তি করেছে বিদ্যুত বিভাগ। সোমবার বিকেলে ইআরপির সুফল তুলে ধরতে যৌথভাবে বিদ্যুত বিভাগ এবং মাইক্রোসফট একটি সেমিনারের আয়োজন করে। সেমিনারে বলা হয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ইআরপি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে পারে। কোম্পানির উর্ধতন কর্মকর্তা থেকে শুরু করে বিদ্যুত বিভাগের উর্ধতনরা চাইলেই যখন তখন যে কোন প্রতিষ্ঠানের চিত্র নিজেদের কম্পিউটার এবং মোবাইল ফোনে দেখতে পারবেন। সরকারী মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে বিদ্যুত বিভাগই সবার আগে ইআরপি চালু করল। কোম্পানি পরিচালনা থেকে গ্রাহক সেবা সব তথ্যই ইআরপিতে সন্নিবেশিত থাকবে। মাইক্রোসফটের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ইআরপিতে প্রকল্প ব্যবস্থাপনা, সেবা গ্রহিতা ব্যবস্থাপনা, হিসাব রক্ষণ, মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা, বিক্রয়, সম্পদের হিসেব রক্ষণ, ক্রয় সব তথ্য সন্নিবেশিত থাকবে। এখন যেভাবেই যে তথ্য সংরক্ষণ করা হোক না কেন ইআরপি সফটওয়ার তা সরাসরি নিয়ে নেবে। গ্রাহকসেবা বৃদ্ধির পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা সহজ করতে বেশকিছু কার্যক্রম অনলাইনে করা হচ্ছে। তবে এই সেবাকে যথেষ্ট মনে করছে না বিদ্যুত বিভাগ। খোদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু সেমিনারে বলেন, এখন আমাদের কোম্পানিগুলোতে অনলাইনে আবেদন করা যায়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে একজন গ্রাহক অন লাইনে আবেদন করতে পারেন ঠিকই কিন্তু পরের প্রক্রিয়াগুলো সারা হয় হাতে হাতে। এই ধরনের আংশিক অনলাইন প্রথায় গ্রাহক সন্তাষ্টি অর্জন সম্ভব নয়। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আমরা সাত দিনের মধ্যে যে বিদ্যুত সংযোগের কথা বলছি তা আগেও সাত দিনে দেয়া হচ্ছে কি না তা বোঝার উপায় থাকছে না। ইআরপিতে সেই সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা ই ফাইলিংয়ের যে প্রচলন করেছি তাতে আমাদের কাছে কিছু ছবি আসে। আমরা ওই ছবি থেকে বিষয়গুলো জানতে পারি। কিন্তু কোন পরিবর্তন করতে পারি না। শতভাগ অনলাইন নির্ভরতার মানে এমন হতে পারে না বলে মনে করেন তিনি। ইতোমধ্যে বেশকিছু কাজ তথ্যপ্রযুক্তির আওতায় এসেছে। সংযোগের আবেদন থেকে শুরু করে প্রিপেইড মিটার, বিল প্রেরণ, বিল প্রদান, অভিযোগ সবই ডিজিটাল পদ্ধতিতে করার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। বিতরণ কোম্পানিগুলো এসব কাজ সীমিত পরিসরে শুরুও করেছে। শুধু গ্রাহকসেবার মান বৃদ্ধি নয়, বিদ্যুত কোম্পানিগুলোও কর্মী ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে নিজেদের যাবতীয় কার্যক্রম সারতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে। এরমধ্যেই ইআরপি ব্যবহার শুরু করতে যাচ্ছে বিদ্যুত বিভাগ। আগামী তিন থেকে চার মাসের মধ্যে এই প্রকল্পের প্রথম ধাপের কাজ শুরু হবে। আর পুরো প্রক্রিয়া শেষ করে সব তথ্য ইআরপিতে দিতে সব মিলিয়ে এক বছর সময় প্রয়োজন হবে। মাইক্রোসফটের সঙ্গে দেশীয় দুই উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান টেকনো হ্যাবেন এবং টেকনো ভিশন যৌথভাবে ইআরপির কাজ করছে। এই প্রক্রিয়াতে তথ্য সন্নিবেশিত করে ডাটা ব্যাংক তৈরির পাশাপাশি কর্মীদের প্রশিক্ষণও দেয়া হবে। সারা বিশ্বেও সব বড় বড় কোম্পানি এই পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়। প্রকৌশলী ইকবাল হাবিব সেমিনারে বলেন, আগে যেমন কোন তথ্যের জন্য মন্ত্রী এবং সচিব সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তথ্য চেয়ে পাঠাতেন ইআরপি হলে তার আর প্রয়োজন হবে না। তাৎক্ষণিকভাবে চাইলে মোবাইল ফোনেও তথ্যগুলো দেখতে পারবেন তারা। এতে কোন কোম্পানির কি অবস্থা। আজ কতটা বিদ্যুত উৎপাদন হচ্ছে। কাল কতটা বিক্রি হয়েছে। একমাস আগে কোন বিদ্যুত কেন্দ্রের কি অবস্থা ছিল তা সহজে জানা যাবে। কারো কাছে তথ্য চাইতে হবে না। সেমিনারে মাইক্রোসফটের বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার প্রিন্সিপাল সল্যুশন স্পেশালিস্ট মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন শিকদার বলেন, ইআরপি একটি আধুনিক ধারণা। কোম্পানি পরিচালনায় এটি যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করতে পারে। এখানে এক সঙ্গে সব তথ্য পাওয়া যাবে। আর তথ্যগুলো কোন সময় নষ্টও হবে না সেইভাবে সংরক্ষণ করা হবে। সেমিনারে বিদ্যুত বিভাগের সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, পিডিবি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদ, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুম আল বেরুনী ছাড়াও বিতরণকৃত কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিদ্যুত বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×