ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বললেন প্রবল আত্মবিশ্বাসী ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা

‘আমরাই জিতব’

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ২১ অক্টোবর ২০১৮

‘আমরাই জিতব’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালকে ছাড়া খেলতে হবে। চাপ আছে। সেই চাপ জয় করে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে আজ প্রথম ওয়ানডে জেতার আশা করছে বাংলাদেশ। ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাই বলেছেন, ‘আমরা জিতব।’ শনিবার সিরিজের আগে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফির বলা কথাগুলোর সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হলো। * অনেকদিন পর হোম সিরিজ সাকিব-তামিমবিহীন দলে প্রত্যাশা? মাশরাফি বিন মর্তুজা ॥ অবশ্যই, অনেকদিন পর (আটমাস পর) হোমে খেলতে নামছি। অবশ্যই সবাই আত্মবিশ্বাসী। সাকিব তামিম থাকবে না এটা আগে থেকেই সবাই জানে। সেভাবেই সবাই প্রস্তুতি নিয়েছে। সেরা পারফর্মেন্স দেয়ার জন্য যা যা দরকার করেছেন। কাল (আজ) খেলা, সবাই যেটা চাচ্ছে, সেটা যেন করতে পারে। * সিরিজের চ্যালেঞ্জটা কী? মাশরাফি ॥ চ্যালেঞ্জটা প্রতি ম্যাচে যেটা থাকে সেটাই। সবার প্রত্যাশা, আমরা জিতব এবং জেতার আশাই করছে সবাই। সেটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়, অন্য দলের সঙ্গে যে চ্যালেঞ্জটা নিয়ে খেলেছি, গত এশিয়া কাপে যেভাবে খেলেছি, সেটাই থাকবে। আর ওদের প্রায় সব সিনিয়র প্লেয়ার কামব্যাক করেছে। আর জিম্বাবুইয়ে দলের নিজেদের মাটিতে সবচেয়ে ভাল রেকর্ড বাংলাদেশেই। সুতরাং আমাদের ১০০ ভাগ দিয়েই খেলতে হবে। হয়তো জিতলে সবাই বলবে এটাই হওয়ার কথা ছিল। হারলে কিন্তু ভিন্ন কথা হবে, এটাই স্বাভাবিক। * কম্বিনেশনটা কেমন হবে? মাশরাফি ॥ এশিয়া কাপে যেটা হয়েছে, দলের ওপর দিয়ে অনেক অনিশ্চয়তা গিয়েছে। এক এক ম্যাচে এক একজন করে অসুস্থ হচ্ছিল। দু’জন তো দল থেকে বের হয়ে গিয়েছিল। এখন আমরা জানি ওই দু’জন (সাকিব ও তামিম) খেলবে না। রুবেল হাসপাতালে ছিল, এটাও আপনারা জানেন। ইনজুরির দিক থেকে একটা জায়গা নিয়ে চিন্তা আছে। এছাড়া চেষ্টা থাকবে সেরা দলটাই গড়া। আর যে কোন সিরিজের প্রথম ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই কিছু নতুন প্লেয়ারদের দলে নেয়া হয়েছে। সামনে বিশ্বকাপকে চিন্তা করে। তাদের দেখে নেয়ার এটাই সুযোগ। সেটাও মাথায় রাখতে হবে। একই সঙ্গে ম্যাচ জেতাটাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। * কেমন উইকেটের প্রত্যাশা? মাশরাফি ॥ মিরপুরের উইকেট সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করা খুবই কঠিন, আমরা সবাই জানি। মিরপুরের উইকেট ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন আচরণ শুরু করে। আগে থেকে বলা খুবই কঠিন হবে। তবে প্রত্যাশা তো অবশ্যই করছি, সাধারণত ২৫০-৬০ রান হলে ম্যাচ ভাল হয়, আগে ব্যাট করা দলের জেতার সুযোগ বেশি থাকে। শুরুতেই যে স্লো বা টার্ন হবে, এমন আশা অবশ্যই করছি না। ভাল উইকেটে খেলতে চেয়েছি, এখন ভাল উইকেট হলেই হয়। কিন্তু মিরপুরের উইকেট তো, আগে থেকে অনুমান করা একটু কঠিন। আমরাও বিশ্বাস করি মিরপুরের উইকেট আনপ্রেডিকটেবল। কী জন্য? হঠাৎ করেই আচরণ বদলে ফেলে। আপনারাও দেখেছেন হঠাৎ করে টার্ন বা বল নিচু হয়ে আসছে। তখন কিন্তু যারা ব্যাটিং করছে তাদেরও মাইন্ডসেট পরিবর্তন করতে হচ্ছে। বাইরে যারা থাকে তাদেরও মাইন্ডসেট পরিবর্তন করতে হয়। আনপ্রেডিকটেবল হলেও আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি। কারণ বেশিরভাগ সিনিয়র প্লেয়াররাই ১০ বছর যাবত এই উইকেটে খেলছে। তো এই জায়গায় অনেকটা অভ্যস্ত হয়ে গেছি। ঘরোয়া ক্রিকেটেও যারা খেলছে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। আপনি যদি দেখেন একক্ষেত্রে সুবিধাও থাকে। আচরণ যখন বদলাতে থাকে তখন প্রতিপক্ষের জন্য একটু কঠিন হয়। আমরা যখন ২০১৫ থেকে জেতা শুরু করেছি তখন থেকে আমার বিশ্বাস এই মাঠে আমাদের রেকর্ড ভাল। আনলেস অর আনটিল মেন্টালি কিছুটা দুর্বলতার কারণে আমরা হেরে গিয়েছি। এশিয়া কাপ ফাইনাল সেটাও বলতে পারেন। সেটা ছাড়া আমার মনে হয় এই উইকেটে আমার এ্যাডজাস্টমেন্ট একেবারে খারাপ হবে না। উইকেট হাফের পরে অন্যরকম আচরণ শুরু করে। এ জন্য বলছিলাম আনপ্রেডিকটেবল। বাট আমি নিশ্চিত আমাদের ছেলেরা এতদিন খেলার পরে এমন কোন অজুহাত না দেয়াই উচিত। তবে একটা মাইন্ডসেটআপ থাকা যেটা আগেও বললাম ২৫০-২৬০ করলে ওদের জন্য কঠিন হবে। * পেসারদের প্রস্তুতি ম্যাচের সাফল্য এবং স্পিনে জিম্বাবুইয়েকে ঘায়েল করা... মাশরাফি ॥ বাংলাদেশ দলকে শেষ তিন চার বছর অবশ্যই কাছে থেকে দেখেছেন। আমরা ৯৯% সময় তিনজন ফাস্ট বোলারকে ব্যাকআপ করেছি, যে কোন অবস্থায় ও যে কোন উইকেটে। আমরা পেস বোলিংকে সবসময় প্রাধান্য দিয়েছি। আর আমাদের পেস বোলিং বিভাগ ভাল করছেও। খারাপও করেছে, কিন্তু ভালর সংখ্যাটা বেশি এবং ম্যাচ উইনিং পারফর্মেন্স অনেক আছে। আমরা অবশ্যই ওই জায়গাতেই আছি। আমরা যতদূর সম্ভব, এটা ব্যাকআপ করেই যাব। একই সঙ্গে উপমহাদেশ ও মিরপুরের উইকেটে স্পিনের বড় ভূমিকা থাকে। আমরা স্পিন দিয়ে তাদের এর আগে অনেক সময় অল আউট করেছি। এটা অবশ্যই আমাদের মাথায় আছে এবং থাকবে। একই সঙ্গে আমরা পেস বোলারদের ফ্ল্যাট উইকেট বলেন, সিমিং উইকেট বলেন, সব জায়গায় আমরা ব্যাকআপ দিয়েছি। সেটা দিয়ে যেতে চাই। * বিশ্বকাপ সামনে রেখে আপনার নিজস্ব কিছু পরিকল্পনা আছে। তার বাস্তবায়ন কী এই সিরিজ থেকেই? মাশরাফি ॥ আল্লাহ যদি সবাইকে বাঁচিয়ে রাখেন কিছু প্লেয়ার আছে আপনার চিন্তা করার সুযোগ নেই সেখানে। নাম বললে হয়তো বা সাকিব, মুশফিক, তামিম, রিয়াদের ক্ষেত্রে হয়তো আমাদের চিন্তা করার সুযোগ কম। একই সঙ্গে মুস্তাফিজ আছে লিটন আছে রুবেল আছে; এরাও ভাল করছে। তবে একটি কথা আগেও বলেছি ব্যাকআপ প্লেয়ার আমাদের অনেক শর্ট। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পারফর্ম করার মতো ব্যাকআপ। এখন আস্তে আস্তে ঘরোয়া ক্রিকেটে শক্তিশালী হচ্ছে বা ক্রিকেটাররাও নিজে থেকে খেলতে চাচ্ছে। এ রকম খেলতে থাকলে সুযোগ তৈরি হবে এবং ব্যাকআপ প্লেয়ার তাড়াতাদি চলে আসবে। সেই ক্ষেত্রে আমি মনে করি কিছু পজিশন আছে সেখানে বিশ্বকাপের কথা যদি চিন্তা করি সাইফউদ্দিন অবশ্যই সেটা। ফজলে রাব্বি অবশ্যই সেটা। কারণ সাকিবের যদি আল্লাহ না করুক সমস্যা হয়ে যায় তখনও সমস্যায় আছে। তো কাউকে না কাউকে লেফ্টহ্যান্ড স্পিন ও ব্যাটসম্যান আমাদের চিন্তা করতে হতে পারে। এই ছোট ছোট জায়গাগুলো। অবশ্য এত কম সময়ে সেটাও না। কিন্তু সুযোগগুলো আমাদের দেখতে হবে, নিতে হবে। সেইসব জায়গা চিন্তা করেই কিন্তু এরা ১৫ সদস্যে এসেছে। একই সময়ে এটাও ঠিক আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলো হারা যাবে না। সো আমাদের আরও হিসেবি হতে হবে এবং ফার্স্ট এলিভেন সেভাবেই সেট করতে হবে। আস্তে আস্তে একজন দুইজন করে হয়তো বা আমাদের দেখতে হবে।
×