ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ফু-ওয়াং ফুডের পরিচালকের পদ শূন্য করার নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৪:১০, ২১ অক্টোবর ২০১৮

ফু-ওয়াং ফুডের পরিচালকের পদ শূন্য করার নির্দেশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ফু-ওয়াং ফুড লিমিটেডের পর্ষদে থাকা পরিচালকদের মধ্যে যাদের কাছে ন্যূনতম ২ শতাংশ শেয়ার নেই, তাদের পরিচালক পদ শূন্য ঘোষণার বিষয়ে রায়ের কপি পাওয়ার দুই মাসের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তাছাড়া তাদের শূন্য পদ বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) মাধ্যমে ৫ শতাংশ কিংবা তার বেশি শেয়ারধারীদের মাধ্যমে পূরণেরও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সম্প্রতি বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও কেএম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ের বিষয়ে বিএসইসির আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী বলেন, ফু-ওয়াং ফুডের পর্ষদে থাকা যেসব পরিচালকের ন্যূনতম ২ শতাংশ শেয়ার নেই, তাদের পরিচালক পদ শূন্য হওয়ার বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদনটি করা হয়েছিল। আদালত শুনানি শেষে রায়ের কপি পাওয়ার দুই মাসের মধ্যে ২ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ পরিচালকদের পদ শূন্য ঘোষণার বিষয়ে বিএসইসিকে প্রজ্ঞাপন জারির নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি বিদ্যমান আইন অনুসারে এজিএমের মাধ্যমে ৫ শতাংশ কিংবা তার বেশি শেয়ারধারীদের মধ্য থেকে পরিচালকের শূন্য পদ পূরণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, আদালতের পক্ষ থেকে যেসব কোম্পানির পরিচালকদের ন্যূনতম ২ শতাংশ শেয়ার নেই, তাদের বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে জানতে চাওয়া হয়েছে। এর জবাবে বিএসইসি জানিয়েছে, কমিশনের ৬২৯তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ন্যূনতম শেয়ার ধারণে ব্যর্থ পরিচালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্তটি কমিশনের এসফোর্সমেন্ট বিভাগে পাঠানো হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সর্বশেষ এ বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার ধারণ সংক্রান্ত প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, কোম্পানিটির পর্ষদে বর্তমানে পাঁচজন পরিচালক রয়েছেন। এর মধ্যে দু’জন স্বতন্ত্র পরিচালক আর বাকি তিনজন শেয়ারধারী পরিচালক। শেয়ারধারী পরিচালকদের মধ্যে ফু-ওয়াং ফুডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. আরিফ আহমেদ চৌধুরীর কাছে কোম্পানিটির ৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ বা ৪৫ লাখ ২৫ হাজার ৮২৫টি শেয়ার রয়েছে। শেয়ারধারী পরিচালক কমল কান্তি মণ্ডল ও বিপ্লব চক্রবর্তীর কাছে যথাক্রমে ০.০০৫ শতাংশ ও ০.০৩৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। উদ্যোক্তা হু চিন হুয়ার কাছে রয়েছে কোম্পানিটির ০.২৩ শতাংশ শেয়ার। স্বতন্ত্র পরিচালকদের মধ্যে কোম্পানিটির চেয়ারম্যান আবদুল কাদেরের কাছে ০.৫৯ শতাংশ বা ৬ লাখ শেয়ার রয়েছে। আরেক স্বতন্ত্র পরিচালক কাজী তোফাজ্জল হোসাইনের কাছে কোন শেয়ার নেই। এদিকে, কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার মোহাম্মদ আব্দুল হাইয়ের কাছে ৫ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ বা ৫০ লাখ ৯০ হাজার ৯৫৩টি শেয়ার রয়েছে। উল্লেখ্য, গত বছরের সেপ্টেম্বরে রাজধানীর লালবাগের জুয়েল শিকদার নামের একজন বিনিয়োগকারী সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী ফু-ওয়াং ফুডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. আরিফ আহমেদ চৌধুরী, পরিচালক কমল কান্তি মণ্ডল, বিপ্লব চক্রবর্তী, খাজা তোফাজ্জল হোসেনের মধ্যে যারা ২ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের কেন পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে না এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যাদের কাছে কোম্পানিটির পর্যাপ্ত শেয়ার রয়েছে, তাদের পরিচালনা পর্ষদে কেন যুক্ত করা হবে না তা জানতে চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন। রিট আবেদন আমলে নিয়ে গত বছরের ১১ অক্টোবর হাইকোর্টের বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের বেঞ্চ চার সপ্তাহের মধ্যে ফু-ওয়াং ফুডের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনে বিএসইসিকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। পাশাপাশি সিকিউরিটিজ আইনানুসারে ২ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ কেন পরিচালক পদে থাকবেন এবং যাদের কাছে নির্ধারিত শেয়ার রয়েছে তাদের কেন পরিচালনা পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত করতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে না এ বিষয়ে বিএসইসি, ডিএসই, সিএসই, জয়েন্ট স্টক এক্সচেঞ্জ, বিনিয়োগকারীর পরিষদ ও ফু-ওয়াং ফুডের পরিচালনা পর্ষদের কাছে ব্যাখ্যা তলব করে রুল জারি করেন। প্রসঙ্গত, বিএসইসির ২০১১ সালের ২২ নবেম্বর জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুসারে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির উদ্যোক্তা বা পরিচালককে ন্যূনতম ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে হবে। একই সঙ্গে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে হবে।
×