ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

নিত্যপণ্যের বাজারে সব মাছের দাম চড়া, শীতের সবজিও আক্রা

প্রকাশিত: ০৬:৫৯, ২০ অক্টোবর ২০১৮

 নিত্যপণ্যের বাজারে সব মাছের দাম চড়া, শীতের সবজিও আক্রা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ নিত্যপণ্যের বাজারে সব মাছের দাম চড়া। স্থিতিশীল রয়েছে চাল, ডাল, আটা, ভোজ্যতেল, চিনি ও পেঁয়াজের দাম। শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়লেও ভোক্তাকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। শুক্রবার কাপ্তান বাজার, কাওরান বাজার, ফকিরাপুল বাজার ও ফার্মগেট কাঁচা বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে, ইলিশ ধরা ও বিক্রি কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে। পুনরায় ইলিশ ধরা, সরবরাহ ও বিক্রি শুরু হলে মাছের দাম কমবে বলে জানান মাছ ব্যবসায়ীরা। পুরান ঢাকার কাপ্তান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন জনকণ্ঠকে বলেন, বাজারে ইলিশ নাই। এ কারণে মাছের দাম চড়া। তিনি বলেন, ইলিশের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে বাজারে মাছের সরবরাহ বাড়বে। মাছের সরবরাহ বাড়লে দামও কমে আসবে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, জাত ও মানভেদে প্রতিকেজি চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৭শ’ থেকে দেড় হাজার টাকায়। গত সপ্তায় মাঝারি সাইজের প্রতিকেজি বাগদা চিংড়ি ৪৫০/৫৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সেই চিংড়ি এখন কিনতে হচ্ছে ভোক্তাকে প্রতিকেজিতে দেড়শ থেকে ২শ’ টাকা বেশি দিয়ে। এছাড়া পুঁটি, পাবদা, রুই, কাতলা, মৃগেল ও পাঙ্গাস মাছের দামও বেড়েছে। ভালমানের প্রতিকেজি রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫৫০ টাকায়। এছাড়া কই মাছ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-২২০ টাকায়, সরপুঁটি আকারভেদে ১৮০-২২০ টাকা কেজি, পাঙ্গাশ প্রতিকেজি ১৩০-১৬০ টাকা, ছোট মলা মাছ ৩৫০-৪৫০ টাকা কেজি, চাষের শিং ও মাগুর মাছ ৫০০-৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। বাজারে মাছের দাম বাড়লেও মাংসের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। মাছের বাজার চড়া হলেও ভোগ্যপণ্যের বাজারে চাল, পেঁয়াজ ও ভোজ্যতেলসহ সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। মিনিকেট ও মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চালের দাম কিছুটা কমতির দিকে রয়েছে। চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমন কাটা শুরু হয়েছে। এ বছর আমনের বাম্পার ফলন হওয়ায় চালের দাম বাড়ার আর কোন আশঙ্কা নেই। বরং সবকিছু ঠিক থাকলে চালের দাম সামনের দিনগুলোয় আরও কমে আসবে। এদিকে, বাজারে প্রতিকেজি মিনিকেট ও নাজিরশাইল জাতীয় চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮-৬৬, মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চাল ৪৮-৫৫ এবং মোটা জাতীয় চায়না ইরি স্বর্ণা জাতীয় চাল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়। কাওরান বাজারের চাল ব্যবসায়ী মতিন বলেন, এ সপ্তায় চালের দাম বাড়েনি। সামনে পুরোদমে আমন কাটা শুরু হলে চালের দাম কমবে। তিনি বলেন, আমনে পাশাপাশি সরকারী উদ্যোগেও দেশে কমদামে চাল বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে চালের বাজার নিয়ে কারসাজি করার তেমন কোন সুযোগ পাবে না অসাধু ব্যবসায়ীরা। জানা গেছে, সরবরাহ বাড়ায় কমে গেছে পেঁয়াজের দাম। প্রতিকেজি আমদানিকৃত ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩৫ টাকায়। এছাড়া উন্নতমানের দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়। এছাড়া আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে নতুন পেঁয়াজ ওঠা শুরু হবে। এ কারণে সামনে পেঁয়াজের দাম আরও কমবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে, বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ বাড়লেও দাম কমার তেমন কোন খবর নেই। কম দামে সবজি পেতে ভোক্তাদের আরও একমাস অপেক্ষা করতে হবে। সবজি ব্যবসায়ীদের মতে, এখন শীতের আগাম সবজি পাওয়া যাচ্ছে। মৌসুমের বাজারে আসা শুরু হলে ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, টমেটোসহ সব ধরনের সবজির দাম কমে আসবে। প্রতিকেজি সবজি ৪০-৬০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। তবে টমেটো ও ফুলকপির দাম চড়া। নতুন সবজি হওয়ায় ৮০ টাকা কেজি টমেটো এবং ৫০/৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ফুলকপি। সবজি ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতের আগাম সবজি হিসেবে ফুলকপি, বাঁধাকপি ও শিম বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে শীঘ্রই সবজির সরবরাহ বাড়বে। এজন্য ভোক্তাকে আরও একমাস অপেক্ষা করতে হবে।
×