ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নিজেকে খুশি রাখার চেষ্টা করছেন সৌম্য

প্রকাশিত: ০৬:৪৮, ২০ অক্টোবর ২০১৮

 নিজেকে খুশি রাখার চেষ্টা করছেন সৌম্য

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে বিসিবি একাদশ শুক্রবার ৮ উইকেটের সহজ জয় পেয়েছে। সেই জয়টি এসেছে ৫ উইকেট পাওয়া পেসার এবাদত হোসেন ও ৩ উইকেট পাওয়া মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের বোলিং ঝড়ের পর সৌম্য সরকারের অপরাজিত ১০২ রানের অসাধারণ ইনিংসে। এশিয়া কাপে সুযোগ পাওয়ার পর জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে দলে সুযোগ পেলেন না। স্বাভাবিকভাবেই মন খারাপ হওয়ার কথা। কিন্তু সৌম্য এসব নিয়ে এখন ভাবেন না। চেষ্টা করেন যেভাবে হোক নিজেকে খুশি রাখার। শুক্রবার বিকেএসপিতে প্রস্তুতি ম্যাচটি শেষে সৌম্য জানান, ‘চেষ্টা করছি নিজেকে খুশি রাখার।’ সৌম্যের কষ্ট লাগছে তা বোঝাই যাচ্ছে। এশিয়া কাপে হঠাৎ করে খেলার সুযোগ পেয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে রান করতে না পারলেও ৫ ওভারে ১৯ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন। দুর্দান্ত বোলিং করেন। এরপর ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে ৩৩ রান করেন। এরপরও সৌম্য জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে দলে সুযোগ পাননি। এর মধ্যে জাতীয় ক্রিকেট লীগ খেললেন। খুলনার হয়ে তৃতীয় রাউন্ডের এক ইনিংসে ৫ উইকেট নিলেন। দুই ইনিংসেই অর্ধশতক (৭৬ ও ৭১ রান) করলেন। সৌম্যের ডাক পড়ল বিসিবি একাদশের হয়ে খেলার জন্য। বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় ক্রিকেট লীগের খেলা শেষ হলো। রাতে ঢাকায় এসে সকালেই বিকেএসপিতে খেলতে নামলেন। কি দারুণ ছন্দে আছেন তা বোঝালেন। এমন দ্রুত আরেক জায়গা (খুলনা) থেকে এসে আরেক জায়গায় খেলতে নামা। সঙ্গে আছে ভ্রমণক্লান্তি। শারীরিক দিক দিয়ে এর প্রভাব পড়ার কথা। কিন্তু সৌম্য মানসিক শক্তিটাকেই সামনে তুলে ধরছেন। বলেছেন, ‘শারীরিক দিক থেকে একটু কঠিন ছিল। মানসিক দিক থেকে অন্যভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। খেলতেই যেহেতু হবে ওইভাবে না ভেবে রাতের মধ্যে যতটুকু সম্ভব রিকভারি করে খেলা যায়। সকাল বেলায়ও একটা জার্নি ছিল। সেসব মাথায় না নিয়ে চেষ্টা করেছি যতটা স্বাভাবিক খেলা যায়। যতক্ষণ সুস্থ থাকব বা শরীর পারমিট করবে প্রপার ক্রিকেট খেলব।’ ছন্দ নিয়ে সৌম্য জানালেন, ‘ছন্দে আছি এমন না। রান করলে তো অবশ্যই সবার ভাল লাগে। তেমন কোন চিন্তা করিনি। চেষ্টা করছি নিজেকে খুশি রাখার। অবশ্যই ভাল খেললে ভাল লাগে। চেষ্টা করেছি বেশ সময় ক্রিজে থেকে ব্যাটিং করার।’ সৌম্য ১১৪ বল খেলে ১০২ রান করেছেন। ১৩ চার ও ১ ছক্কা হাঁকিয়েছেন। ম্যাচও অনায়াসেই জিতেছে বিসিবি একাদশ। সৌম্য অধিনায়কও ছিলেন। এমন ইনিংসে সৌম্য কি একটু নির্ভার হলেন? সৌম্য জানান, ‘ওই রকম কোন চিন্তা করি নাই যে, এখানে ভাল করে আমি রিলিফ হব। আমি খেলছিলাম জাতীয় লীগে। সেখান থেকে এসে এখানে খেলা, এটা অন্য ফরমেটে ছিল। চেষ্টা ছিল উইকেটে থাকার। দেখতে চেয়েছিলাম কতক্ষণ উইকেটে থাকতে পারি। আজকে (শুক্রবার) সুযোগই তেমন ছিল। লক্ষ্য খুব একটা বড় ছিল না। সেই চেষ্টাই করেছি উইকেটে কতক্ষণ থাকতে পারি।’ এখন সৌম্য শুধুই ভাল খেলার চিন্তা করেন, ‘একটা সময় চিন্তা ছিল যে, বাইরে ছিলাম দলে ফিরতে আমাকে ভাল করতে হবে। এখন চেষ্টা করি যে, তেমন কোন চিন্তা না করে নিজের খেলাটা খেলতে। এক শ’ তো এক শ’ই। এক শ’ করলে তো আনন্দ হবেই। সেঞ্চুরি তো অবশ্যই স্পেশাল। কিছু একটা ত্যাগ করে কিছু একটা পাওয়া তো অবশ্যই স্পেশাল।’ সৌম্য যেভাবে তাড়াহুড়ো করে খেলতে নামলেন তাতে যে খুশি নন; তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, ‘প্রথমে তো এই খেলা আছে জানতাম না। খুলনাতেই ছিলাম, পরিকল্পনা ছিল বাড়িতে যাব। হঠাৎ করে যখন বলা হলো খেলতে হবে। প্রথমে একটু খারাপ লেগেছিল। অনেকদিন পর একটা ছুটি পেয়েছিলাম সেটাও মিস। আবার চিন্তা করলাম যেহেতু খেলতেই হবে এসব চিন্তা না করাই ভাল। মনোযোগ দিয়ে খেলাই ভাল। সেই চেষ্টাই করেছি।’ যেভাবে সৌম্য ব্যাটিং করলেন, তাতে কী জাতীয় দলে সামনে সুযোগ মিলবে? প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু সেই সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখলেন। সৌম্যর জন্য ওপেনিংয়ে স্পট খালি আছে কী? এমন প্রশ্নের জবাবে নান্নু জানান, ‘সৌম্য আমাদের চোখের আড়াল হয়নি। ও তো আমাদের ৩০ জনের পুলের মধ্যেই আছে। আমরা একটা প্রসেসের মধ্যে আছি। এই জিম্বাবুইয়ে সিরিজের স্কোয়াডে আমাদের কিছু খেলোয়াড়কে দেখতে হচ্ছে। সৌম্য সরকারকে যদি দরকার হয় সবসময় বলি দেশের জন্য কাউকে দরকার হলে তাকে সবসময় নেয়া হবে। এটা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। এমন না যে, আমরা একটা প্লেয়ারকে বাদ দিয়ে দিয়েছি বলে ওকে আর ডাকা হবে না। ৩০ জন প্লেয়ার পুলের মধ্যে আছে, যাকে যখন দরকার হবে তখন দেখবেন তাকেই আমরা সুযোগ দিচ্ছি।’
×