ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ট্রাম্পের হুমকি

মেক্সিকো সীমান্তে সেনা মোতায়েন করা হবে

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ২০ অক্টোবর ২০১৮

 মেক্সিকো সীমান্তে সেনা মোতায়েন করা হবে

মধ্য আমেরিকার দেশগুলো থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে আসা তিন হাজারেরও বেশি অভিবাসন প্রত্যাশীর ক্যারাভান ঠেকাতে মেক্সিকো সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এজন্য দরকার পড়লে সেনা মোতায়েন করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এল সালভাদর, গুয়াতেমালা ও হন্ডুরাস থেকে যুক্তরাষ্ট্র সীমান্ত অভিমুখে ক্যারাভানের উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবার সিরিজ টুইটে ট্রাম্প এ হুঁশিয়ারি দেন। খবর বিবিসি’র। অবৈধ অভিবাসনের চাপ সামলাতে না পেরে এ রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট এর আগে মধ্য আমেরিকার এ তিন দেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বরাদ্দ বাতিলেরও হুমকি দিয়েছিলেন। কেবল হন্ডুরাসেই গত দুই বছরে সাড়ে ১৭ কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ সাহায্য দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিভাগ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার দেশের সীমান্ত অভিমুখে আসা অভিবাসন প্রত্যাশীদের ঢল ঠেকাতে মেক্সিকোর সরকারের প্রতিও অনুরোধ জানিয়েছেন। ‘জনগণের ওপর কোন ধরনের নিয়ন্ত্রণ না থাকা এ দেশগুলোকে সব রকমের অর্থ দেয়া বন্ধের পাশাপাশি এদের যুক্তরাষ্ট্র অভিমুখে হানা ঠেকাতে আমি শক্তভাবে মেক্সিকোকে অনুরোধ করেছি, তারা যদি না পারে তাহলে আমি মার্কিন সেনাবাহিনীকে ডেকে দক্ষিণের সীমান্ত বন্ধ করে দেব,’ টুইটারে লেখেন ট্রাম্প। মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে ট্রাম্প মধ্য আমেরিকার এ অভিবাসন প্রত্যাশীদের বিষয়ে তার প্রশাসনের ‘জিরো টলারেন্স’ ভূমিকা দেখিয়ে ভোটারদের মন জয় করতে চাইছেন বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের। নবেম্বরে হতে যাওয়া এ নির্বাচনে রিপাবলিকানদের নিজেদের ঘাঁটিতেই ডেমোক্রেটদের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে হবে। ভোটের ফল মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠতার হিসাব-নিকাশেও ওলট-পালট করে দিতে পারে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, আশ্রয়প্রার্থী কাউকে তাৎক্ষণিকভাবে ফেরত পাঠানো সম্ভব নয়, এর আগে ওই আশ্রয়প্রার্থীর আবেদন যথাযথ ও আইনী উপায়ে বিবেচনা করে দেখতে হবে। সেক্ষেত্রে অভিবাসন প্রত্যাশীদের ক্যারাভান সীমান্তে চলে এলে তাদের ফেরত পাঠাতে বেশ বেগ পেতে হবে ট্রাম্প প্রশাসনকে। চলতি বছর মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে ঢোকা অভিবাসন প্রত্যাশীদের আবেদন বিবেচনার সময় তাদের কাছ থেকে সন্তানদের আলাদা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েও মার্কিন প্রেসিডেন্টকে দেশে-বিদেশে বেশ চাপের মুখেই পড়তে হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের চাপে পড়ে মেক্সিকোও তাদের সীমান্তে পুলিশ পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। যদিও অভিবাসন প্রত্যাশীদের ক্যারাভানকে বাধা দেয়া হবে এমন আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি তারা। বুধবার দেশটির সরকারী কর্মকর্তারা বলেছিলেন, মেক্সিকোতে কাগজপত্র ছাড়া প্রবেশকারীদের হয় আশ্রয়ের আবেদন করতে হবে, নতুবা ফিরে যেতে হবে। ট্রাম্প মেক্সিকো সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দিলেও কীভাবে করবেন তা বলেননি। ওই সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন বৈধ উপায়ে হাজারও মানুষ ও শত শত টন পণ্য যাতায়াত করে। সত্যিকার অর্থেই সীমান্ত একেবারে বন্ধ করে দিলে এ যাতায়াত বাধাগ্রস্ত হবে, যা যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটন ও বাণিজ্যখাতে প্রভাব ফেলবে। ক্যারাভানে থাকা হন্ডুরাস, এল সালভাদর ও গুয়াতেমালার নাগরিকরা বলেছেন, দারিদ্র্য, সংঘাত ও বিপদের হাত থেকে বাঁচতেই দেশ ছেড়েছেন তারা। যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে অবস্থান বদল ঘটানোই লক্ষ্য তাদের। মেক্সিকোর নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট লোপেজ অব্রাডর বলেছেন, তিনি মধ্য আমেরিকার দেশগুলো থেকে পালিয়ে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের কাজ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে চাপ কমানোর পরিকল্পনা করছেন। নির্বাচিত হলেও এখনও শপথ হয়নি অব্রাডরের, ডিসেম্বরে তার মেয়াদ শুরু হওয়ার কথা। ‘আমাদের পরিকল্পনা হচ্ছে, কেউ যদি মেক্সিকোতে কাজ করতে চায় তাহলে আমরা তাকে ওয়ার্ক ভিসা দেবো,’ বলেছেন তিনি।
×