ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

প্রযুক্তির বিস্ময়কর আবিষ্কার

মহাকাশে অপটিক্যাল ফাইবার

প্রকাশিত: ০৬:২১, ২০ অক্টোবর ২০১৮

 মহাকাশে অপটিক্যাল ফাইবার

নিত্যনতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে সভ্যতার উৎকর্ষ সাধনে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মানুষ। উন্নত প্রযুক্তি প্রয়োগে সে উদ্ভাবন করছে এমন কিছু জিনিস যা মানব সভ্যতাকে নিয়ে যাচ্ছে অন্য এক উচ্চতায়। কিন্তু মানুষ তাতেও তৃপ্ত নয়। সে চায় অতি দ্রুত সভ্যতার চরম শিখরে পৌঁছাতে। কিন্তু আকাক্সক্ষা ও প্রাপ্তির মধ্যে কিছুটা ফারাক থেকেই যায়। সভ্যতার গতিকে বেগবান করতে যে যে জিনিসপত্র অত্যাবশ্যক, সেগুলো সর্বদা এই পৃথিবীর পরিবেশে তৈরি করা সম্ভবপর হয়ে ওঠে না। এজন্য ১৯৭০-এর দশক থেকেই পৃথিবীর বাইরে অর্থাৎ মহাকাশে বিভিন্ন সূক্ষ্ম জিনিসপত্র তৈরি করা যায় কিনা সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছে। এমনই এক সূক্ষ্ম জিনিস হলো অপটিকাল ফাইবার কেবল যার মধ্য দিয়ে অতি দ্রুত ডাটা ট্রান্সফার করা যায়। এই অপটিকাল ফাইবার এখন পর্যন্ত পৃথিবীতেই তৈরি হচ্ছে। কিন্তু সাধারণ সিলিকা গ্লাসের তৈরি এই অপটিকাল ফাইবারের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আলো চলাচল করার সময় কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে (প্রতি কিলোমিটার ৩% দুর্বল হয়)। ফলে ডাটা ট্রান্সফারের গতিও হ্রাস পায়। এছাড়া অপটিকাল ফাইবার তৈরির পর শীতল হওয়ার সময় এতে কিছু কিছু ক্রিস্টাল সৃষ্টি হতে পারে। এতেও আলোর চলাচল ব্যাহত হয়। তাছাড়া পৃথিবীতে অপটিকাল ফাইবার তৈরির খরচও অনেক বেশি (প্রতি কেজি তৈরিতে খরচ পড়ে প্রায় ১০ লাখ ডলার)। তাই বিজ্ঞানীরা তৈরি করতে চান আরও অতিসূক্ষ্ম অপটিকাল ফাইবার (ZBLAN) যার মধ্য দিয়ে সাধারণ অপটিকাল ফাইবারের চেয়ে ১০০ গুণ বেশি দ্রুত গতিতে ডাটা চলাচল করতে পারবে। কিন্তু এটি তৈরিতে কিছু সমস্যার মুখে পড়ছেন উৎপাদকেরা। প্রথমত পৃথিবীর পরিবেশে এই অতিসূক্ষ্ম অপটিকাল ফাইবার তৈরি করা প্রায় অসম্ভব। তৈরির সময়ই এটি ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। একমাত্র মহাকাশে প্রায় শূন্য মাধ্যাকর্ষণ পরিবেশেই এই ধরণের অতিসূক্ষ্ম অপটিকাল ফাইবার তৈরি করা সম্ভব। এজন্য দীর্ঘদিন ধরে নাসার সঙ্গে কাজ করে আসছে ‘মেড ইন স্পেস’ ও এফওএমএস (ফাইবার অপটিক ম্যানুফ্যাকচার ইন স্পেস) নামক আমেরিকার দুটি কোম্পানি। আশার কথা হলো আর মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই মহাকাশ স্টেশনে তইখঅঘ উৎপাদন করতে যাচ্ছে ‘মেড ইন স্পেস’। সেই অতিসূক্ষ্ম অপটিকাল ফাইবার কেবলে ভরে পৃথিবীতে স্থাপন করা হবে। তথ্য-প্রযুক্তির জগতে আসবে নতুন বিপ্লব।
×