ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সফল উদ্যোক্তা শামীম নূর মুন্নী

প্রকাশিত: ০৭:৪৯, ১৯ অক্টোবর ২০১৮

সফল উদ্যোক্তা শামীম নূর মুন্নী

তিনি একজন স্ত্রী, একজন মা, একজন গৃহিণী, রাঁধেন এবং চুলও বাঁধেন। এ সব কিছুই একজন নারীর গতানুগতিক উপাধি। কিন্তু সব কিছু ছাড়িয়ে সংগ্রাম করে অভিভাবক হয়ে ওঠা অনেক নারীর পক্ষেই সম্ভব হয়ে ওঠে না। তিনি পেরেছেন। তিনি শামীম নূর মুন্নী। একজন সফল নারী উদ্যোক্তা। নিজের মেধা, মননশীলতা, কর্মনিষ্ঠা এবং একাগ্র প্রচেষ্টার কারণে ইন্টারন্যাশনাল স্কুল বাংলাদেশ একটি আলোকিত মুখ। তিনি স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রিন্সপালের দায়িত্ব পালন করছেন। স্কুল ও সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন তিনি। স্কুলের শুরুটা হয়েছিল ২০১১ সালে। প্রতিষ্ঠা করেন ইন্টারন্যাশনাল স্কুল বাংলাদেশ। তখন থেকে শুরু করে এখন চলছে সমানতালে। তখন মাত্র ১৭ জন শিশু শিক্ষার্থী নিয়ে স্কুলের কার্যক্রম শুরু করে ছিলেন। বর্তমানে স্কুলের শিক্ষার্থী সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩৩ এর ও অধিক। তিনি বলেন, স্কুলের কার্যক্রম আল্লাহর রহমতে ভালভাবেই চলছে। যেভাবে করে স্কুলটি গড়ে তুলতে চেয়েছি সে ভাবেই পেরেছি, সে ভাবেই চলছে। আমি অনেক খুশি- বললেন শামীম নূর মুন্নী। তবে আজকের অবস্থানে আসতে পথচলা মোটেও সহজ ছিল না। অনেক প্রতিকূল বাঁধা বিপত্তি পেরিয়ে সংগ্রাম করে আজকের অবস্থানে আসতে হয়েছে। তিনি বলেন, অনেক বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হয়েছে। একজন নারী হিসেবে সবচেয়ে বেশি বাধাগ্রস্তের স্বীকার হয়েছি। নারীদের নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখেন সমাজের কিছু খারাপ লোক। তাদের তারা অনেক জীবননাশের হুমকি এসেছে। শুরুতেই কষ্ট, বাধা বেশি ছিল। তবে আমাকে দামিয়ে রাখতে পারেনি। স্কুল প্রতিষ্ঠা করার কারণে আমার সন্তানকে শুধু শুধু স্কুল থেকে টিসি দিয়ে বের করে দেওয়া হয়। সে দিন থেকেই শপথ নিয়েছি আমি এই স্কুলকে দেশের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করব। এরপর একের পর এক বাধা এসেছে। ভাল কাজ করতে গেলে যে বাধাগুলোর সম্মুখীন হতে হয় সে রকম বাধা আসতে শুরু করল। মেয়ে মানুষ হওয়ায় সমস্যা বেশি হয়েছে। অনেক ধরনের হুমকি এসেছে জায়গা ছেড়ে দেন। স্কুল করা লাগবে না এখানে। অনেক সময় প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। বিভিন্ন বাধাকে পরোয়া না করে আস্তে আস্তে সামনের দিকে অগ্রসর হলাম। অনেক কষ্ট করে স্কুলটি দাঁড় করিয়েছি। এখন অনেক ভালভাবেই স্কুলটি চলছে। সব সময় প্রস্তুত ছিলাম ভাল কাজের জন্য জীবন দিতে হয় দেব। তখন আমার ছেলেমেয়েরা অনেক ছোট ছিল। সে সময় বাচ্চাকে সঙ্গে নিয়ে স্কুল করতে হয়েছে। আমার কষ্টগুলো ছেলেমেয়েরা মেনে নিয়েছে। স্কুলটি নিয়ে তার অনেক পরিকল্পনা। ২০ বছরের পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছেন। ৪টি ভাগে স্কুলটি আস্তে আস্তে করে এগিয়ে নিতে চান। যতক্ষণ পর্যন্ত আমার স্বপ্নগুলো পূরণ না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত সংগ্রাম চালিয়ে যাব সে যেই আসুক না কেন স্কুলে। বলেন শামীম নূর মুন্নী। যারা নারী উদ্যোক্তা হতে চায় তাদের জন্য কি পরামর্শ দিবেন? জবাবে তিনি বলেন, আমি চাই প্রত্যেকটি নারী প্রত্যেকটি ঘরে নিজেরই একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলুক। ঘরের মা-ই একটি প্রতিষ্ঠান। আমি চাই বাংলাদেশের সকল নারী যার যা প্রতিভা আছে তারা সবাই বেরিয়ে আসুক। ভাল কাজের পাশে সব সময়ই আছি। আমার ভবিষ্যত পরিকল্পনা রয়েছে নারীদের জন্য বৃহৎ পরিসরে কিছু করা।
×