ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চাঁদপুরে পরকীয়ার বলি গৃহবধূ ॥ গ্রেফতার ২

প্রকাশিত: ০৪:১৫, ১৯ অক্টোবর ২০১৮

চাঁদপুরে পরকীয়ার বলি গৃহবধূ ॥ গ্রেফতার ২

নিজস্ব সংবাদদাতা, চাঁদপুর, ১৮ অক্টোবর ॥ হাজীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব হাটিল ইউনিয়নের পূর্ব হাটিলা গ্রামে প্রবাসী ভগ্নিপতির সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের কারণে আপন ছোট বোন আইরিন আক্তার ও স্বামী হযরত আলীর হাতে হত্যার শিকার হয়েছেন নাসরিন আক্তার রিভা (২০) নামের গৃহবধূ। এ ঘটনায় আইরিন আক্তার ও হযরত আলীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁদপুর জেলা পুলিশ কার্যালয়ে পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির এ চাঞ্চল্যকর হত্যার বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে এসব তথ্য জানান। হত্যার শিকার আইরিন সুলতানা রিভা হাটিলা গ্রামের বেপারি বাড়ির প্রবাসী আব্দুর রহিমের কন্যা। সে হাজীগঞ্জ সরকারী মডেল পাইলট হাই স্কুল এ্যান্ড কলেজ থেকে এ বছর এইচএসসি পাস করেন। হত্যাকা-ে অভিযুক্ত স্বামী হযরত আলী চাঁদপুর সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের মনিহার গ্রামের তোরাব আলী মুন্সি বাড়ির রুহুল আমিন মাস্টারের ছেলে। সে দুবাই প্রবাসী ছিলেন। হত্যাকা- ঘটানোর লক্ষ্যে চলতি মাসের ৮ তারিখে দেশে আসেন। গত ৬ মাস পূর্বে মার্চ মাসে নাসরিনের সঙ্গে হযরত আলীর বিয়ে হয়। বিয়ের পরে সে দুবাই চলে যায়। অপর অভিযুক্ত নাসরিনের ছোট বোন আইরিন আক্তার রেখা (১৬) স্থানীয় টঙ্গিরপাড় হাটিলা ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যায়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী। প্রেস ব্রিফিং উল্লেখ করা হয়, গত ৯ অক্টোবর ওই গ্রামের বেপারি বাড়িতে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে নাসরিনের ছোট বোন আইরিন ও স্বামী হযরত আলী রাতের বেলায় নাসরিনের পায়ে ওড়না পেঁচিয়ে পা চেপে ধরে এবং হযরত আলী মুখে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। ওই সময় নাসরিন সজাগ হয়ে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে হযরত আলী বালিশ ফেলে দিয়ে নাসরিনকে গলা চেপে ধরে এবং বুকে আঘাত করলে তার বুকের পাঁজর ভেঙ্গে যায়। ওই অবস্থায় নাসরিন চিৎকার দিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। এ সময় অভিযুক্তরা মনে করে নাসরিনের মৃত্যু হয়েছে। নাসরিনের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হযরত আলীকে অপর দরজা দিয়ে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করে ছোট বোন আইরিন এবং বাড়ির লোকজনকে ভেতরের আরেকটি দরজা খুলে দিয়ে সেও অজ্ঞান হওয়ার ভান ধরে পড়ে থাকে। এরপর ওই বাড়ির বাসিন্দা ফেরদৌসি আক্তার মিনুসহ লোকজন নাসরিন ও আইরিনকে প্রথমে হাজীগঞ্জ বিসমিল্লাহ হসপিটালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরবর্তীতে তাদেরকে কুমিল্লা সিটি প্যাথ হসপিটালে নিয়ে যান। ওই হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১ অক্টোবর রাতে নাসরিনের মৃত্যু হয়। জামালপুরে ছেলের হাতে বৃদ্ধ পিতা নিজস্ব সংবাদদাতা জামালপুর থেকে জানান, বকশীগঞ্জ উপজেলার বগারচর ইউনিয়নের উঠানোপাড়া গ্রামে বৃহস্পতিবার ভোরে ছেলের হাতুড়ির আঘাতে বৃদ্ধ পিতা আবু সাঈদ (৬০) নিহত এবং পাঁচ বছরের এক শিশু লিমা আক্তারকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করার ঘটনা ঘটেছে। আহত শিশু লিমাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ওই বৃদ্ধের ছেলে স্বপনকে (২৮) আটক করেছে। জানা গেছে, উপজেলার বগারচর ইউনিয়নের উঠানোপাড়া গ্রামের কৃষক আবু সাঈদের ছেলে স্বপন দিনাজপুরের মোমেনা আক্তার নামের এক নারীকে বিয়ে করার পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। স্বামীর অত্যাচার সইতে না পেরে মোমেনা আক্তার বুধবার বিকেলে তার বাপের বাড়ি দিনাজপুরে চলে যান। স্বামী স্বপন রাতে বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রী চলে যাওয়ার কথা শুনে মোমেনাকে দিনাজপুরে পাঠিয়ে দিয়েছে বলে তার বাবা-মাকে সন্দেহ করে। এ নিয়ে স্বপন বাবা-মার সঙ্গে ঝগড়া করে। এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার রাত তিনটার দিকে স্বপন তার ঘুমন্ত বাবাকে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করলে বৃদ্ধ আবু সাঈদ গুরুতর আহত হন। এরপর স্বপন তার বড় ভাইয়ের মেয়ে লিমা আক্তারের মাথায় দা দিয়ে কোপ দিলে সে গুরুতর আহত হয়। চিৎকার শুনে পাশের ঘর থেকে স্বপনের বড় ভাই রিপন ছুটে গিয়ে প্রতিবেশীদের ডেকে স্বপনকে আটক করে বেঁধে রাখে। পরে ভোরে গুরুতর আহত আবু সাঈদ ও শিশু লিমা আক্তারকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আবু সাঈদকে মৃত ঘোষণা করেন।
×