ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সিএনবিসিকে দেয়া সাক্ষাতকারে আনোয়ার ইব্রাহিম

মালয়েশিয়া পুরোপুরি দুর্নীতিমুক্ত হতে পারে

প্রকাশিত: ০৪:১৩, ১৮ অক্টোবর ২০১৮

মালয়েশিয়া পুরোপুরি দুর্নীতিমুক্ত হতে পারে

মালয়েশিয়ার রাজনীতিবিদ ও পিপলস জাস্টিস পার্টির নেতা আনোয়ার ইব্রাহিম (৭১) সম্প্রতি একটি উপনির্বাচনে জিতে পার্লামেন্ট সদস্য হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের ঘনিষ্ঠ আনোয়ার বলেছেন তিনি এখনই মন্ত্রিসভায় যোগ দিতে চান না। তবে তাকেই দেশটির পরবর্তী কর্ণধার হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি মনে করেন তার দেশকে পুরোপুরি দুর্নীতিমুক্ত করা সম্ভব। মূলত দুর্নীতির বিশালর দায়ভার মাথায় নিয়েই সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাককে ক্ষমতা ছাড়তে হয়। সিএনবিসি। আনোয়ার ইব্রাহিম দুই বছরের মধ্যে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন সঠিক পথে রয়েছি। বর্তমান সরকার দেশ পরিচালনা ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের চেষ্টা করছে। যার মধ্যে রয়েছে স্বাধীন বিচার বিভাগ ও নিরপেক্ষ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা প্রতিষ্ঠা করা।’ সিএনবিসির আকিকো ফুজিতাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, শত কোটি ডলারের অর্থ কেলেঙ্কারি থেকে মুক্ত হয়ে দেশী বিদেশী বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার প্রক্রিয়া পুনরুদ্ধার করা অসম্ভব নয়। প্রতিষ্ঠানগুলো নজিবের আমলে দুর্নীতিপরায়ন হয়ে ওঠে। নজিব রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিনিয়োগ ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বারহাদ (ওয়ানএমডিবি) থেকে গোপনে বিদেশে অর্থ পাচার করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এজন্য তাকে এখন ফৌজদারি অভিযোগের সম্মুখীন হতে হয়েছে। অনেকে মনে করেন এটি ছিল রাষ্ট্রীয় কাঠামোর অধীনে নজিবের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার ভিত্তি। ২০১৫ সালে প্রথম আর্থিক প্রতিবেদনে আর্থিক কেলেঙ্কারির কথা প্রকাশিত হয়। আনেয়ার বলেন, ওয়ানএমডিবি নিয়ম লঙ্ঘনের স্পষ্ট উদাহরণ। তিনি মনে করেন সিভিল সার্ভিস, বিচার বিভাগ ও আইনসভা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারলে ওয়ানএমবিডির মতো অপর কোন কেলেঙ্কারি ঘটবে না। এক্ষেত্রে বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধিও নিশ্চিত করতে হবে। একবার একটি স্বচ্ছ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করা গেলে সবাই তখন নিজ নিজ দায়বদ্ধতায় কাজ করে যাবে। আনোয়ার মালয়েশিয়ার অনেকের কাছে একজন নায়ক। তিনি দু’বার জেলে গেছেন। গণতন্ত্রের সঙ্গে সঙ্গে দক্ষিন-পূর্ব এশিয়ার দেশটি এখন বিপজ্জনক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। বিপুল পরিমাণ সরকারী ঋণ একটি উদ্বেগের বিষয়। যার পরিমাণ ২৫১ বিলিয়ন ডলার। এটি জিডিপির ৮০ শতাংশ। তবে এটি ব্যর্থ রাষ্ট্র বা একটি ব্যর্থ অর্থনীতির আগাম লক্ষণ নয়। আনোয়ার বলেন, জাতীয় ঋণের বিষয়টি যারা অর্থনীতি পরিচালনা করছে তারা এই সমস্যাটিকে নিয়ন্ত্রণ করবে। আমি মনে করি তারা অপেক্ষাকৃত ভাল কাজ করছে। চীনা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মালয়েশিয়া ন্যায্য শর্ত অব্যাহত থাকবে। সাবেক সরকারের অধীনে চীনের তিনটি বিনিয়োগ প্রকল্প মাহাথির মোহাম্মদের প্রশাসনের স্থগিত করা নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিনিয়োগ প্রকল্পগুলো প্রায় ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ছিল। কুয়ালালামপুর চুক্তিগুলোকে অনেক ব্যয়বহুল মনে করছে। যার সঙ্গে আনোয়ার ইব্রাহিম একমত পোষণ করেন। তিনি একে বর্তমান রাষ্ট্রীয় অর্থনীতির অবস্থার সঙ্গে তুলনা করে বলেন, মালয়েশিয়া এত ব্যয়বহুল চীনা প্রকল্পের ব্যয়ভার বহন করতে পারবে না। আনোয়ারের স্ত্রী ওয়ান আজিজাহ ওয়ান ইসমাইল বর্তমানে দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী।
×