ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

খাশোগি ইস্যুতে ওয়াশিংটনের স্পষ্ট বক্তব্য

নিরপরাধ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত সৌদি দায়ী

প্রকাশিত: ০৪:১২, ১৮ অক্টোবর ২০১৮

 নিরপরাধ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত সৌদি দায়ী

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার এপিকে দেয়া এক স্বাক্ষাতকারে সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যার ঘটনায় বিশ্বব্যাপী সৌদি আরবের বিরুদ্ধে যে নিন্দার ঝড় বয়ে যাচ্ছে তার সমালোচনা করেন। তিনি সতর্কতার সঙ্গে ঘটনার পর্যালোচনা ও সৌদিদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন। টাইম। ট্রাম্প বলেন, ‘আমার মনে হয় প্রথমেই আমাদের কি ঘটেছে তা খুঁজে বের করতে হবে। আবার আমরা এভাবেও দেখতে পারি, যতক্ষণ পর্যন্ত কেউ নির্দোষ প্রমাণিত না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত কেউই অপরাধী নয়। তিনি বলেন, সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে কী হয়েছে সে বিষয়ে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান কিছু জানেন না বলে তাকে জানিয়েছেন। টুইটারে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘সবেমাত্র সৌদি যুবরাজের সঙ্গে কথা হল। তিনি তাদের ইস্তানবুল কনসুলেটে কী হয়েছে সে সম্পর্কে কিছু জানার কথা পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন।’ সৌদি রাজতন্ত্রের সমালোচক খাশোগি ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ২ অক্টোবর ইস্তানবুলের সৌদি কনসুলেটে প্রবেশ করার পর থেকেই তার আর কোন খোঁজ নেই। তাকে কনসুলেটের ভেতরই হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা হয়েছে বলে আঙ্কারা অভিযোগ করলেও রিয়াদ তা উড়িয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় সৌদি নেতৃত্বের দিকে আঙ্গুল তুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের অনেক সদস্য। পশ্চিমা দেশগুলোও এ বিষয়ে জবাব চেয়ে রিয়াদের ওপর চাপ বাড়িয়েছে। এ পরিস্থিতির মধ্যেই ট্রাম্প সৌদি আরবের পক্ষ নিয়ে বক্তব্য দিলেন। সাংবাদিক খাশোগি তার তুর্কী বাগদত্তা হেতিস চেঙ্গিসকে বিয়ে করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করতে ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে গিয়েছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে ওয়াশিংটনে বসবাস করা এ সাংবাদিক ওয়াশিংটন পোস্টে যেসব কলাম লিখতেন; সেখানে সৌদি সরকারের সমালোচনার পাশাপাশি দেশটিতে সংস্কারেরও আহ্বান ছিল। সৌদি যুবরাজ কীভাবে খাসোগি হত্যার ঘটনাটি মোকাবেলা করছেন তার ওপরই ভবিষ্যতে পশ্চিমা শক্তি ও রিয়াদের সম্পর্ক নির্ভর করবে। সৌদি আরব যতই অস্বীকার করুক না কেন, খাসোগির নিখোঁজের ঘটনায় পশ্চিমারা যুবরাজ বিন সালমানকেই দায়ী ভাবছে। ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখা যুবরাজ বিন সালমান নিজেকে নতুন ও আধুনিক সৌদি আরবের মুখপাত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছেন; চাইছেন তেলের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে সৌদি অর্থনীতিতে বৈচিত্র আনতে। দেশটিতে বেশ কিছু সামাজিক পরিবর্তনও এনেছেন তিনি। যদিও ইয়েমেনের যুদ্ধ, নারী আন্দোলন কর্মীদের গ্রেফতার, কানাডার সঙ্গে কূটনৈতিক বিরোধ, লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ আল-হারিরিকে রিয়াদে ‘আটকে রাখার ঘটনায় তার এ ভাবমূর্তি পশ্চিমাদের কাছে অনেকটাই ক্ষুণœ হয়েছে। মানবাধিকার বিষয়ে সৌদি আরবের রেকর্ড ভাল না হলেও ট্রাম্প বলেছেন, রিয়াদের কাছে অস্ত্র বিক্রির পথ থেকে সরে আসার বিষয়ে তার আগ্রহ নেই। মার্কিন সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম সৌদি যুবরাজকে ‘বিষাক্ত চরিত্র’ হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, তিনি কখনোই বিশ্ব মঞ্চে বিশ্বনেতা হিসেবে আবির্ভূত হতে পারবেন না। মার্কিন সিনেটে আমি প্রায় সবসময়েই তাদের সমর্থন করেছি। কিন্তু এ লোক (সৌদি যুবরাজ) বিধ্বংসী। তিনি তুরস্কে কনসুলেটের ভেতরে একজনকে মেরে ফেলেছেন এবং প্রত্যাশা করছেন আমি সেটা এড়িয়ে যাব।
×