ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

হ্যাজার্ডের প্রত্যাশা...

প্রকাশিত: ০৬:৫৪, ১৭ অক্টোবর ২০১৮

হ্যাজার্ডের প্রত্যাশা...

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শেষবার যখন জোশে মরিনহোর অধীনে ছিলেন সে সময় সম্পর্কটা তিক্ততায় রূপ নিয়েছিল। সর্বশেষ ২০১৫-১৬ মৌসুমে চেলসির কোচ হিসেবে ছিলেন মরিনহো। কিন্তু ১৬টি প্রিমিয়ার লীগ ম্যাচের মধ্যে ৯টি পরাজয়ের পর ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে তাকে বরখাস্ত করে চেলসি। ওই সময় ক্লাবের সিনিয়র ও অপরিহার্য খেলোয়াড়দের সঙ্গে মরিনহোর সম্পর্কে টানাপোড়েনের বিষয়টি গণমাধ্যমে উঠে এসেছিল। তার মধ্যে ছিলেন বেলজিয়ামের তারকা ইডেন হ্যাজার্ডও। অথচ এর আগের মৌসুমেই চেলসিকে শিরোপা জিতিয়েছিলেন মরিনহো-হ্যাজার্ড জুটি। এ মৌসুমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডেও অস্বস্তি আর সমস্যায় জর্জরিত হয়ে কোণঠাসা মরিনহো। আগামী শনিবার স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে এসে ম্যানইউ’র মুখোমুখি হবে চেলসি। অতীত তিক্ত স্মৃতি নিয়ে মাঠে নামার আগে আক্রমণাত্মক হওয়ার মোক্ষম সুযোগ ছিল হ্যাজার্ডের। কিন্তু তিনি উল্টো দাবি করেছেন, আবার যদি কোন কোচের অধীনে তিনি খেলতে চান তাহলে তিনি হচ্ছেন মরিনহো। গত মৌসুমে রানার্সআপ হয়েছিল ম্যানইউ। কিন্তু চরম প্রতিপক্ষ ম্যানচেস্টার সিটির চেয়ে ১৯ পয়েন্ট পিছিয়ে থেকে দারুণ সমালোচনার মুখে ছিলেন কোচ মরিনহো। কারণ অন্য ক্লাবগুলোর ব্যর্থতার কারণেই স্বস্তিদায়ক অবস্থানটা নিশ্চিত হয়েছিল, আসলে ম্যানইউ ভাল নৈপুণ্য দেখাতে পারেনি। এবার লীগের শুরুতেই সেটার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। অন্য ক্লাবগুলো নৈপুণ্যে উন্নতি ঘটিয়েছে পূর্বের বছরের তুলনায়। কিন্তু ম্যানইউ যেন আরও পিছিয়েছে। গত ২৯ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বাজে শুরু করেছে ম্যানইউ। ৮ ম্যাচে ৪ জয়, ৩ পরাজয় ও ১ ড্রয়ে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে এই মুহূর্তে ৮ নম্বরে তারা। গত ম্যাচে নিউক্যাসল ইউনাইটেডের বিপক্ষে ঘরের মাটিতে টানা ৪ ম্যাচ পর প্রথম জয়ের দেখা পেয়েছিল ম্যানইউ। তাতেই কিছুটা মুখ রক্ষা হয়েছে পর্তুগীজ এ ৫৫ বছর বয়সী কোচের। তবে আগামী শনিবার আরও বড় পরীক্ষা তার জন্য। ঘরের মাটিতে এবার তারই পুরনো ক্লাব চেলসি আসছে প্রতিপক্ষ হয়ে। সেই চেলসিতে আবার অনেক খেলোয়াড় আছেন যাদের দু’চোখের বিষ মরিনহো। কারণ সর্বশেষ মৌসুমে চেলসিতে থাকাকালীন সিনিয়র ও ভাল মানের খেলোয়াড়দের সঙ্গে সম্পর্কে বরফ জমেছিল তার। এর মধ্যে অন্যতম হ্যাজার্ড। আগের মৌসুমে (২০১৪-১৫) তার দুরন্ত নৈপুণ্যে মরিনহো চেলসিকে উপহার দিয়েছিলেন লীগ শিরোপা। তবে হ্যাজার্ড আসন্ন এই ম্যাচটি উপলক্ষে বলেন, ‘সর্বশেষ মৌসুমটি মরিনহোর অধীনে কোনভাবেই স্বস্তিদায়ক ছিল না। আমরা জিততে পারছিলাম না। আমরা রুটিন মাফিক অনুশীলনের পর অনুশীলন করে যাচ্ছিলাম কোন মজা ছাড়াই। সবপক্ষের জন্যই ভাল একটা পরিবেশ তৈরি হওয়ার একমাত্র উপায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল সম্পর্কটার সমাপ্তি ঘটা।’ মরিনহো যখন জিততে থাকেন তার ক্লাব নিয়ে তখন তার চেয়ে ভাল কোচ পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই। কিন্তু যখন তার দল হারতে থাকে মরিনহো আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন নিজের শিষ্যদের ওপর। মরিনহোর এ চরিত্রের বিবর্তন নিয়ে হ্যাজার্ড বলেন, ‘ফলাফল যখন বাজে হতে শুরু করে তখন তিনি খেলোয়াড়দের সমালোচনা করতে শুরু করে দেন। সবাই এটা জানে, আমিও। কিন্তু পরবর্তী সময়ে আমি এটা মেনে নেয়ার পর্যায়ে চলে গিয়েছিলাম এই কারণে যে, আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে এটা তার আচরণগত ব্যাপার। যদি দল জিততে থাকে অবশ্য মরিনহোকে ভাবতে হবে সেরা কোচ হিসেবে। তখন সে আপনার খুবই ভাল বন্ধু থাকবে এবং যা খুশি আপনি করতে পারবেন। একটি দিন বিরতি চাইলে সে দিয়ে দেবে দুইদিন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে মরিনহো আপনাকে সবচেয়ে সহজ ফুটবল উপহার দেবে। যেমনটা আমিও চাই।’ আর সে কারণেই আবার কোন কোচের অধীনে খেলার ইচ্ছা হলে হ্যাজার্ড চাইবেন মরিনহোর অধীনেই খেলতে। তিনি বলেন, ‘আমাকে যদি এখন জিজ্ঞেস করা হয় কার অধীনে পুনরায় খেলতে চাই, সেক্ষেত্রে আমি অবশ্যই বলবÑ মরিনহো। তার বৈশিষ্ট্য অনুসারে মাত্রাতিরিক্ত রক্ষণাত্মক মনোভাবের কোচ হওয়াটা তেমন খারাপ কিছু নয়। গার্ডিওলার মতো রোমাঞ্চপ্রিয় কোচ না তিনি। তবে যেবার আমরা চ্যাম্পিয়ন হলাম সেবার মরিনহোর অধীনেই কিন্তু অনেক গোল করেছিলাম।’
×