ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ত্বকের বিশেষ যত্ন

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ১৫ অক্টোবর ২০১৮

 ত্বকের বিশেষ যত্ন

পূজা একেবারে নাকের ডগায়। নতুন পোশাক তো কিনেছেন। কিন্তু ত্বকের পরিচর্যা ঠিকভাবে না করলে, পূজার সময় যতই ভাল পোশাক পরুন না কেন, আপনাকে বেমানান লাগবে। সেই জন্য এই সময় ত্বকের বিশেষ যত্ন নেয়া ভীষণভাবে জরুরী। যেহেতু দূষণ বাড়ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গ্লোবাল ওয়ার্মিংও। সে জন্য আমাদের শরীরের সাধারণ আর্দ্রতা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। এ জন্য প্রথমেই বলি বিভিন্ন ধরনের ফল, তাজা শাক-সবজি ও প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়া দরকার। সুষম স্বাস্থ্যকর খাবারের কোন বিকল্প হয় না। স্বাস্থ্যকর ও পেলব ত্বক পেতে সেই কারণে পুষ্টিকর এবং সুষম খাবার খাওয়া জরুরী। ত্বকের যত্ন নেয়ার প্রথম পদক্ষেপই হলো ত্বককে সবসময় পরিষ্কার ও দূষণমুক্ত রাখা। তারই সঙ্গে ত্বকে স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় রাখতে হবে। কতগুলো ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বকের যত্ন নেয়া যায়। সবচেয়ে আগে জানা জরুরী যে, আপনার কোন্ ধরনের ত্বক। তৈলাক্ত, আংশিক তৈলাক্তে, সাধারণ নাকি শুষ্ক। সেটা আগে জেনে নিন। তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে তাহলে সারাদিনে অন্তত দুইবার আপনাকে অয়েল কন্ট্রোল ফেসওয়াশ দিয়ে মুখটা ধুয়ে ফেলতে হবে। এরপর মুখে অল্প টোনার লাগিয়ে নিন। তারপর অয়েল ফ্রি ময়েশ্চারাইজার লাগান সামান্য। যদি তৈলাক্ত ত্বকের কারণে আপনার আঁচিলের সমস্যা থেকে থাকে, তবে অবশ্যই নিমযুক্ত প্রডাক্ট ব্যবহার করবেন। তৈলাক্ত খাবার খাওয়া সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ করতে হবে। বার বার জল দিয়ে মুখটা ধুয়ে ফেলতে হবে। যাতে মুখে তেল জমতে না পারে। আংশিক তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে আংশিক তৈলাক্ত ত্বকের মধ্যে যাদের সেন্সিটিভ স্কিন, তাদের বিশেষ ফেসওয়াশের সঙ্গে দুই ধরনের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। টি জোনের জন্য অয়েল ফ্রি ময়েশ্চারাইজার এবং বাকি অংশের জন্য নর্মাল ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। স্বাভাবিত ত্বকের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক ত্বকের জন্য সাধারণ তেল ব্যবহার করাই শ্রেয়, যাতে ত্বক শুষ্কতার দিকে না যায়। যে কোন ভাল ক্লিনজার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিন। তারপর ভাল ময়েশ্চারাইজার লাগান। শুষ্ক ত্বকের ক্ষেত্রে শুষ্ক ত্বকের জন্য অয়েল বেসড ক্লিনজিং মিল্ক ব্যবহার করা সবচেয়ে ভাল। এ ছাড়া ভীষণ মাইল্ড ফেসওয়াশ বা লিক্যুইড বেবি সোপ দিয়ে মুখ ধোয়া যাবে। টোনার খুব কম লাগাবেন। ময়েস্ট বেসড ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে। এবার ফেস প্যাকের কথায় আসা যাক শুষ্ক ত্বকের জন্য এমন কোন প্যাক ব্যবহার করা উচিত যাতে আপনার ত্বক ভীষণভাবে নরম, মসৃণ ও আর্দ্র হয়। গ্লিসারিন, মধু এই জাতীয় জিনিস শুষ্ক ত্বকের জন্য বেশ ভাল। রোদের থেকে রেহাই পেতে এবং ত্বকের ট্যান হওয়া থেকে দূরে থাকতে আমাদের বেশ কয়েকটা সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। যেমন, ছাতা ব্যবহার করা, শরীর ঢাকা জামাকাপড় পরা, রোদ থেকে ঘুরে এসে সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের কিছু পরিচর্যা করে নেয়া। ট্যান তুলতে টোমেটো ও আলুর খোসা বাটা অত্যন্ত ভাল কাজ দেয়। সানস্ক্রিন নিয়ে খুঁটিনাটি এবার আসা যাক সানস্ক্রিন ব্যবহারের পদ্ধতির আলোচনায়। সানস্ক্রিন আমাদের ত্বকের ওপর কিছুক্ষণের জন্য একটা পরত ফেলে দেয়, যা থেকে আমাদের ত্বক সূর্যকিরণ, অতিবেগুনি রশ্মি ও অন্যান্য ক্ষতিকারক বিকিরণ থেকে বাঁচে। সানস্ক্রিন বিভিন্ন ধরনের হয়। ত্বক অনুযায়ী আমাদের সানস্ক্রিন বেছে নেয়া উচিত। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য পাউডার বেসড, সাধারণ ত্বকের জন্য স্প্রে বেসড এবং শুষ্ক ত্বকের জন্য ক্রিম বেসড সানস্ক্রিন ব্যবহার করা ভাল। ত্বক সুরক্ষিত রাখার সময় অনুসারে এগুলোরও কতগুলো ভাগ রয়েছে। যেমন এসপিএফ১০ হলো এক ঘণ্টার জন্য, দু’ঘণ্টা কাজ দেয় এসপিএপফ২০ যুক্ত সানস্ক্রিন। এসপিএফ৩০ তিন ঘণ্টা, এসপিএফ৪০ চার ঘণ্টা এবং এসপিএফ ৫০ পাঁচ ঘণ্টা কাজ করে। যারা যতক্ষণ রোদে থাকবেন সেই মতো নিজের সানস্ক্রিন বেছে নেবেন। সুন্দর ত্বক আপনার সৌন্দর্যের আশি শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই শুধুমাত্র মেকআপ-এর ওপর নির্ভর না করে একটি সুস্থ ত্বক ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করুন, আপনার ত্বক সুন্দর হলে তা বজায় রাখার চেষ্টা করুন। দেখুন আপনার পূজাটা বিশেষ হয়ে উঠবে।
×