ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

হুমকিতে সেন্টমার্টিনের জীববৈচিত্র্য

প্রকাশিত: ০৩:৫৮, ১৫ অক্টোবর ২০১৮

হুমকিতে সেন্টমার্টিনের জীববৈচিত্র্য

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ দেশের অন্যতম প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে রাতে পর্যটকদের অবস্থান নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তটি দ্বীপের জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মতে, ২০১৯ সালের ১ মার্চ থেকে ওই দ্বীপে যেতে হলে অনলাইনে নিবন্ধন করে দিনেরবেলায় সেখানে যেতে হবে পর্যটকদের। দীর্ঘমেয়াদে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করার উদ্দেশে এই প্রবাল দ্বীপে রাত যাপন, বাতি জ্বালানো এবং মোটরসাইকেল, গাড়ি ও স্পীডবোট চলাচল করতে পারবে না মর্মে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ কারণে পর্যটন শিল্পের ওপর কিছুটা প্রভাব পড়লেও দীর্ঘমেয়াদী লাভবান হবে পর্যটন ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘমেয়াদে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শেষে সরকার ওই দ্বীপ থেকে প্রচুর রাজস্ব আয় করতে পারবে। পাশাপাশি পর্যটন শিল্প অবশ্যই ঘুরে দাঁড়াবে বলে জানিয়েছে সচেতন মহল। অভিজ্ঞ মহল জানায়, ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি মানুষের পদচারণায় দিন দিন সৌন্দর্য হারাচ্ছে এই প্রবালদ্বীপ। এই দ্বীপে আগের মতো সৌন্দর্য নেই বললে চলে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মোটেও নেই। কক্সবাজার জেলা প্রসাশন সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন হাজার হাজার পর্যটকের অবাধ যাতায়াতের কারণে সেন্টমার্টিনের জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের পথে চলে গেছে। সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের ওপর রাত্রিকালীন নিষেধাজ্ঞায় পর্যটন শিল্পে কোন ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। বরং দীর্ঘমেয়াদে পরিকল্পনা শেষে ওই দ্বীপে পর্যটকদের আকর্ষণ আরও বাড়বে। এ কারণে ২০১৯ সালের ১ মার্চ থেকে সেন্টমার্টিনে রাত্রিকালীন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হচ্ছে। সূত্র আরও জানায়, সেন্টমার্টিন দ্বীপে ৬৮ প্রজাতির প্রবাল রয়েছে। আরও আছে ১৫১ প্রজাতির শৈবাল, ১৯১ প্রজাতির মোলাস্ক বা কড়িজাতীয় প্রাণী, ৪০ প্রজাতির কাঁকড়া, ২৩৪ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ, ৪ প্রজাতির উভচর, ২৮ প্রজাতির সরীসৃপ, ১২০ প্রজাতির পাখি, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী। এছাড়া এই প্রবাল দ্বীপে ১৭৫ প্রজাতির উদ্ভিদ, দুই প্রজাতির বাদুড় ও পাঁচ প্রজাতির ডলফিন রয়েছে। উল্লেখ্য, গত ৯ সেপ্টেম্বর আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় সেন্টমার্টিন দ্বীপের জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের চিত্র তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন দিয়েছে পরিবেশ অধিদফতর। এর ভিত্তিতে ২৩ সেপ্টেম্বর দ্বীপ রক্ষায় গঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেয়। এতে বলা হয়েছে, দিনেরবেলায় ৫শ’ পর্যটক সেন্টমার্টিনে বেড়ানোর সুযোগ পাবে। জমি বেচাকেনা করা যাবে না এবং সব হোটেল-মোটেল ও স্থাপনা উচ্ছেদ এবং জমি অধিগ্রহণ করে বসবাসকারীদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হবে।
×