ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি পণ্য বোঝাই ১২৫ জাহাজ

বহির্নোঙ্গরে পণ্য খালাসে জট

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ১৪ অক্টোবর ২০১৮

বহির্নোঙ্গরে পণ্য খালাসে জট

মোয়াজ্জেমুল হক, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে আমদানি পণ্যের খালাসে জট সৃষ্টি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় তিতলির প্রভাবে শনিবার পর্যন্ত চারদিন কোন পণ্য খালাস না হওয়ায় এ জট লেগেছে। তবে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিগুলোতে স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া কন্টেনার হ্যান্ডলিং কার্যক্রমেও কোন সমস্যা নেই। বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বহির্নোঙ্গর ও জেটি মিলিয়ে বর্তমানে জাহাজের সংখ্যা ১২৫। এরমধ্যে ১০৩টি রয়েছে বহির্নোঙ্গরে, ১৫টি রয়েছে মূল জেটিগুলোতে। ৭টি বহির্নোঙ্গরে পৌঁছানোর ঘোষণা দিয়েছে। এদিকে, বহির্নোঙ্গরে ২৯টি জাহাজ থেকে একযোগে পণ্য খালাসের প্রক্রিয়া ছিল, যা ঘূর্ণিঝড়ের কারণে চারদিন আগে থেকে বন্ধ। এছাড়া ৭৪টি জাহাজ খালাস কাজ শুরু করার প্রস্তুতির অপেক্ষায়। বন্দর সূত্রে আরও জানা গেছে, বর্ষণ অব্যাহত এবং সমুদ্র উত্তাল থাকায় এ ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে। এর পরও শনিবার সীমিত আকারে আমদানির কিছু পাথর ও স্ক্র্যাপ খালাসের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি চাল, গমসহ খাদ্যজাতীয় সব ধরনের পণ্য খালাস করা বন্ধ রয়েছে। মূলত এ কারণেই ঘটনাটি পণ্য খালাসজটে পরিণত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় তিতলি ইতোমধ্যে অতিবাহিত হলেও এর প্রভাবে চারদিন ধরে চট্টগ্রাম ও উপকূলবর্তী স্থানজুড়ে ভারি ও মাঝারি ধরনের বর্ষণ অব্যাহত। সর্বশেষ শনিবারও গুঁড়িগুঁড়ি বর্ষণ ছিল। এর আগেরদিন ছিল ভারি বর্ষণ। আবহাওয়া অধিদফতর আগেই বলেছে, তিতলির প্রভাবে বর্ষণ থাকবে। সহসা এটি কেটে যাবে। অপরদিকে, অব্যাহত বর্ষণের কারণে নগরীর ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের ৩০টি পয়েন্টে লাল পতাকা উড্ডয়ন রয়েছে। ৩ দিন ধরে চলছে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং। প্রশাসনের উদ্যোগে শুক্রবার বিভিন্ন পাহাড়ের পাদদেশ থেকে ৮ হাজার লোককে সরিয়ে নেয়া হয়। কিন্তু সরিয়ে নেয়ার পর এদের অনেকে পুনরায় নিজেদের বসতিতে ফিরে গেছে। শনিবার প্রশাসনের উদ্যোগে মাইকিং হলেও সরানোর কার্যক্রম দেখা যায়নি। বর্ষণের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলোর মাটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে নরম হয়েছে। যদি আরও ভারি বর্ষণ হয় তাহলে ধস যে নিশ্চিত তাতে কোন সন্দেহ নেই। এ অবস্থায় জেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে পাহাড় পরিস্থিতি নিয়ে জরুরী সভা করেছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো থেকে লোকজনকে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং অব্যাহত রাখতে বলা হয়েছে। কিন্তু এসব মাইকিং উপেক্ষা করে পাহাড়ের পাদদেশে বসতি গাঁড়াদের সরে যাওয়ার কোন ইচ্ছা দৃশ্যমান নয়। উচ্ছেদ কার্যক্রম চালালে এরা সরতে বাধ্য হয়। এর পরও আবার তারা স্ব স্ব স্থানে ফিরে আসে। চট্টগ্রামে প্রতিবছর পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেই চলেছে। মাটিচাপা পড়ে প্রাণ হারাচ্ছে অনেকে। কিন্তু এসব ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের পাদদেশ থেকে সম্পূর্ণভাবে সরানোর কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় উচ্ছেদকৃতরা পুনরায় ফিরে যাওয়ার সাহস পাচ্ছে। এসব নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই। কিন্তু বর্ষণ যখন থেমে যায় এবং পরিস্থিতি যখন অনুকূলে থাকে তখন অবস্থা পূর্বের রূপে ফিরে আসে। এভাবে চট্টগ্রামে পাহাড় ধস থেকে মানুষ বাঁচানোর ব্যর্থ একটি প্রশাসনিক সংগ্রাম।
×