ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অবরুদ্ধ গাজায় তেল সরবরাহ আটকে দিল ইসরাইল

প্রকাশিত: ০৬:০০, ১৪ অক্টোবর ২০১৮

অবরুদ্ধ গাজায় তেল সরবরাহ আটকে দিল ইসরাইল

জ্বালানি সঙ্কটে বিপর্যস্ত অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় তেল সরবরাহ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে ইসরাইল। ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ্যাভিগডর লিবারম্যান এক নির্দেশনায় জানিয়েছেন, গাজায় আর কাতার থেকে আমদানিকৃত তেল প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। শুক্রবার তার কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরাইলী সেনা সদস্য ও বেসামরিক মানুষের ওপর হামলার জবাবে তেল সরবরাহ বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। -খবর আলজাজিরার লিবারম্যান যেদিন এই নির্দেশ দিয়েছেন সেদিনই চলমান গ্রেট মার্চ অব রিটার্ন কর্মসূচীতে ইসরাইলী সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছে ৭ ফিলিস্তিনী। চলমান মানবিক বিপর্যয়ের শোচনীয় অবস্থা ঠেকাতে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় ইসরাইলের ভেতর দিয়ে গাজার বিদ্যুত কেন্দ্রে তেল সরবরাহ শুরু করেছিল কাতার। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় মানবিক বিপর্যয় মোকাবেলায় গত ৯ অক্টোবর সেখানে জ্বালানি সরবরাহ শুরু করে কাতার। জাতিসংঘ প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে দক্ষিণ গাজার কারাম আবু সালেম বর্ডার ক্রসিং অতিক্রম করে জ্বালানিবাহী ছয়টি ট্রাক গাজার একমাত্র বিদ্যুতকেন্দ্রে জ্বালানি পৌঁছে দেয়া শুরু করে। এসব ট্রাকে চার লাখ ৫০ হাজার লিটার জ্বালানি ছিল। কাতারী জ্বালানিতে গাজার বিদ্যুত সরবরাহ আংশিকভাবে বাড়বে বলেও জানায় গাজার কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যেই শুক্রবার এসব তেল সরবরাহ বন্ধের নির্দেশ দিলো ইসরাইল। শুক্রবার লাইবারম্যানের কার্যালয়ের বিতৃতিতে বলা হয়, ‘ইসরাইল এমন পরিস্থিতি সহ্য করবে না যেখানে একদিকে তেলবাহী ট্যাঙ্কার প্রবেশ করতে দেয়া হবে আর অন্যদিকে ইসরাইলী সেনা সদস্য ও বেসামরিক মানুষদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ও সহিংসতার ব্যবহার চলবে’। মুক্তিকামী ফিলিস্তিনী জনতার প্রতিরোধকে সন্ত্রাস ও সহিংসতা বলে প্রচার চালিয়ে থাকে ইসরাইলী কর্তৃপক্ষ। ফিলিস্তিন-ইসরাইল ইস্যুতে ফিলিস্তিনের পক্ষে জোরালো অবস্থান নেয়া দেশগুলোর অন্যতম কাতার। বিশেষ করে অবরুদ্ধ গাজাবাসীর জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য ফেরাতে অঞ্চলটিতে কাজ করছে দোহা। তবে ২০১৭ সালের জুনে সৌদি জোটের কাতারবিরোধী অবরোধে গাজা উপত্যকার প্রতি কাতারী সমর্থন অব্যাহত রাখা দৃশ্যত কঠিন হয়ে পড়ে। কেননা, সৌদি আরব চায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করুক কাতার। তবে হামাসকে মুক্তিকামী গাজাবাসীর গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রতিনিধি মনে করে দোহা। কয়েক মাস ধরে গাজার সীমান্ত এলাকায় চলা বিক্ষোভ প্রশমিত করতে তেল সরবরাহ শুরু করে কাতার। ইসরাইল ও মিসরের আরোপ করা অবরোধের কারণে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছে গাজার অধিবাসীরা। গত সপ্তাহে লিবারম্যানের কার্যালয় গাজার মৎস্য আহরণ এলাকা সীমিত করারও নির্দেশ দিয়েছে। আগে গাজাবাসী সমুদ্রের নয় নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মৎস্য আহরণ করতে পারলেও নতুন নির্দেশে সেই এলাকা ৬ নটিক্যাল মাইলে নামিয়ে আনা হয়েছে। ওই সময়ে লিবারম্যান বলেন, ইসরাইল ও গাজাকে বিভক্তকারী বেড়ার পাশে বিক্ষোভে মাছ ধরা নৌকা ও বিক্ষোভকারীদের জড়ো হয়ে সহিংসতা সৃষ্টির জবাবে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
×