ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রিয়াদে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন বর্জন করবে অনেক প্রতিষ্ঠান

বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে সৌদি আরব

প্রকাশিত: ০৬:০০, ১৪ অক্টোবর ২০১৮

বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে সৌদি আরব

সাংবাদিক হত্যার ইস্যুতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে সৌদি আরব। ভিন্নমতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাশাগজি ইস্তানবুলে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর আর বের হননি। তুরস্কের অভিযোগ কনস্যুলেটে প্রবেশের পর তাকে হত্যা করা হয়েছে। সৌদি আরব এটি করেছে বলে তুরস্কের দাবি। রিয়াদ অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কূটনৈতিক বিতর্কে তুরস্কের পাশে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স দাঁড়িয়েছে। সৌদি আরবের পাশে আপাতত কেউই নেই। -গার্ডিয়ান তুর্কী কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, রিয়াদ থেকে পাঠানো একটি দল ইস্তানবুলে সৌদি কনস্যুলেটে সৌদি সাংবাদিক ও রাজপরিবারের সমালোচক জামাল খাশাগজিকে হত্যা করে। এজন্য তারা আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। যাতে ভিন্নমতাবলম্বী সাংবাদিকের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা জানা সম্ভব হয়। তুরস্কের কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, খাশাগজিকে হত্যা করে মৃতদেহ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। নিখোঁজ হওয়ার চারদিন পর আঙ্কারার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ঘটনার একটি স্পষ্ট বিবরণ আসলো। যদিও তারা এ বিষয়ে কোন প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। ২৩ অক্টোবর রিয়াদে একটি আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। তিন দিনের সম্মেলন নিয়ে বড় বড় বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ তৈরি হয়েছিল। সাংবাদিক খাশাগজি নিখোঁজ হওয়াার পেছনে সৌদি সরকারের হাত থাকার অভিযোগ ওঠায় অনেক প্রতিষ্ঠান সম্মেলন বর্জন বা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি সম্মেলনের মিডিয়া পার্টনারও এতে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মার্কিন সাময়িকী ইকোনমিস্ট, নিউইয়র্ক টাইমস ও সিএনবিসিসহ আরও বহু প্রতিষ্ঠান। ফিউচার ইনভেস্টিভ ইনিশিয়েটিভ নামে ওই সম্মেলনের উদ্যোক্তরা জানিয়েছেন তারা খাশাগজি নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় সৌদির সংশ্লিষ্টতার কথা জানতে পেরে হতাশ হয়েছেন। রিয়াদ এখনও পর্যন্ত ঘটনার কোন নির্ভরযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। তুরস্কের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে শুক্রবার ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, খাশাগজি ও তার সন্দেহভাজন ঘাতকদের মধ্যে আলাপচারিতার অডিও পাওয়া গেছে। তাকে কিভাবে জিজ্ঞাসাবাদ, নির্যাতন ও হত্যা করা হয়েছে তার একটি ধারণা পাওয়া যায় ওই অডিও টেপ থেকে। ঘটনা তদন্তের জন্য আঙ্কারা ও রিয়াদ যৌথ তদন্ত টিম গঠন করতে চায় বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে শর্ত ঠিক করার জন্য শনিবার তুরস্কের একটি প্রতিনিধি দল শনিবার সৌদি আরব সফর করে। বিষয়টি নিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোগানের সঙ্গে আলোচনার জন্য সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ শুক্রবার রাজপরিবারের সিনিয়র সদস্য খালেদ আল ফয়সলকে আঙ্কারা পাঠিয়েছেন। একই দিনে তুরস্কের একটি আদালত মার্কিন ধর্মযাজক এ্যান্ড্রু ব্রানসনকে মুক্তি দিয়েছে। ব্রানসন দুবছর আগে তুরস্কে এক ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের পর আটক হয়েছিলেন। ধারণা পাওয়া যায় নিখোঁজ সাংবাদিক ইস্যুতে তুরস্ক যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে। এদিকে ঘটনার যে বিবরণ আঙ্কারা দাঁড় করিয়েছে তার প্রতি সংশয় প্রকাশ করেছেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন। তিনি বলেছেন, ‘সত্যি বলতে কি আসলে কি ঘটেছে সেটি আমরা জানি না। যুবরাজ প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আমার কথা হয়েছে। সেখানেও আমি তাকে এ কথাটি বলেছিল। তুরস্ক ও সৌদি আরবের মধ্যে ঐতিহাসিক বৈরিতা রয়েছে। অন্যদিকে বর্তমান সময় তুরস্কের সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে আমাদের কিছুটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে। আমি মনে করি সৌদিরা নিজেরাই নিজেদের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করছে। কারণ আসলে কি হয়েছে সেটি আমরা জানতে পারছি না।’
×