ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বারির ৫৩৫ উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ১৪ অক্টোবর ২০১৮

বারির ৫৩৫ উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধামুক্ত দেশ গড়তে এবং খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিত করতে দেশের খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে কাজ করছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। এ লক্ষ্য সামনে নিয়ে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) বিজ্ঞানীরা এ পর্যন্ত দুই শ’ আটটি ফসলের ৫শ’ ৩৫টি উচ্চ ফলনশীল (হাইব্রিডসহ), রোগ প্রতিরোধক্ষম ও বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশ প্রতিরোধী জাত এবং এগুলোর উন্নত চাষাবাদ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক ৫০৫ টি অন্যান্য প্রযুক্তিসহ এযাবৎ ১০৪০ টি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। এ সকল প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ফলে দেশে গম, তেলবীজ, ডালশস্য, আলু, সবজি, মসলা এবং ফলের উৎপাদন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। শনিবার বারি’র ‘কেন্দ্রীয় গবেষণা পর্যালোচনা ও কর্মসূচী প্রণয়ন কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়েছে। গাজীপুর মহানগরীস্থিত বারি’র কাজী বদরুদ্দোজা মিলনায়তনে ৫ দিনব্যপী এ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সকালে অনুষ্ঠিত হয়। বারি’তে গত অর্থবছর যে সকল গবেষণা কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়েছিল সেগুলোর মূল্যায়ন এবং এসব অভিজ্ঞতার আলোকে আগামী অর্থবছরের গবেষণা কর্মসূচী প্রণয়নের উদ্দেশে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। এ কর্মশালার কারিগরি অধিবেশন ২১ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত পাঁচ দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে। উদ্ভাবিত প্রযুক্তির উপযোগিতা যাচাই, বাছাই ও দেশের বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী প্রযুক্তি উদ্ভাবনের কর্মসূচী গ্রহণ করাই এ কর্মশালার প্রধান উদ্দেশ্য। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আযাদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ নাসিরুজ্জামান। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. মোঃ কবির ইকরামুল হক, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মোঃ ফজলে ওয়াহেদ খোন্দকার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরিচালক (পরিকল্পনা, প্রকল্প বাস্তবায়ন ও আইসিটি উইং) কৃষিবিদ মীর নূরুল আলম। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বারি’র গবেষণা কার্যক্রম ও সাফল্যের উপর সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনা করেন প্রতিষ্ঠাণের পরিচালক (গবেষণা) ড. মোঃ লুৎফর রহমান। অনুষ্ঠানে স¦াগত বক্তব্য রাখেন বারি’র পরিচালক (সেবা ও সরবরাহ) মোঃ শোয়েব হাসান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি সচিব বলেন, কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল ভিত্তি। এ দেশের কৃষিকে প্রতিনিয়তই বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে। দেশের ক্রমহ্রাসমান কৃষিজমি এবং ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা সমস্যার সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে সৃষ্ট অপ্রত্যাশিত বন্যা, খরা, লবণাক্ততা, বিভিন্ন ধরনের বালাইয়ের আকস্মিক আক্রমণ বৃদ্ধিসহ জৈবিক (ইরড়ঃরপ) ও অজৈবিক (অনরড়ঃরপ) কারণে আমাদের টেকসই খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তার বিষয়টি প্রায়ই হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। সুতরাং, শস্য উৎপাদনে অন্যতম অন্তরায় বৈশ্বিক উষ্ণায়ণ বৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট জৈবিক ও অজৈবিক সমস্যাসমূহ যেমন লবণাক্ততা, খরা, বন্যা, রোগবালাই ইত্যাদি প্রতিরোধী উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন করে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। আমাদের গবেষকদের আরও নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে সেই নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) অর্জনে অভূতপূর্ব সফলতা দেখিয়েছে। এসডিজির ১৭টি অভীষ্টের মধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের জন্য উল্লেখযোগ্য দু’টি গোল হচ্ছে- ক্ষুধার অবসান এবং খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি। এ লক্ষ্যে আমাদের সকলের জন্য সারা বছর নিরাপদ, পুষ্টিসম্পন্ন ও পর্যাপ্ত খাদ্য নিশ্চিত এবং কৃষি উৎপাদন দ্বিগুণ ও টেকসই করতে হবে। সেই লক্ষ্যে গবেষকদের কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। এ কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপ¯িহত ছিলেন বারি’র অবসরপ্রাপ্ত মহাপরিচালকবৃন্দ, পরিচালকবৃন্দ, মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ এবং সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠনের প্রতিনিধিসহ প্রায় ৫শ’ বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানী উপস্থিত ছিলেন।
×