ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ফাইনালে মুখোমুখি আজ ফিলিস্তিন-তাজিকিস্তান

প্রকাশিত: ০৭:৩১, ১২ অক্টোবর ২০১৮

ফাইনালে মুখোমুখি আজ ফিলিস্তিন-তাজিকিস্তান

রুমেল খান ॥ সিলেট ও কক্সবাজার ঘুরে দেখতে দেখতে শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল প্রতিযোগিতা’র খেলা। আজ চূড়ান্ত মহারণ। যাতে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় মুখোমুখি হবে ফিলিস্তিন বনাম তাজিকিস্তান। ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় এই ফাইনালে যে দলই শিরোপা জিতুক না কেন তারাই হবে এই আসরের নতুন চ্যাম্পিয়ন। তাজিকিস্তানের সামনে রয়েছে প্রতিশোধ নেয়ার সুযোগ। কেননা গ্রুপপর্বের মোকাবেলায় এই ফিলিস্তিনের কাছেই তারা হেরেছিল ২-০ গোলের ব্যবধানে। বৃহস্পতিবার দু’দলই শেষবারের মতো ঘাম ঝরায় অনুশীলনে। একইদিন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত হয় দু’দলের প্রি-ফাইনাল ম্যাচ কনফারেন্স। এতে উপস্থিত ছিলেন দু’দলের কোচ এবং অধিনায়ক। তাজিকিস্তানের কোচ আলী শের বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি দলটাকে বেস্ট কন্ডিশনে প্রস্তুত করতে। তাদের সঙ্গে পূর্বে ম্যাচে যে ভুলত্রুটিগুলো করেছিলাম এ ম্যাচে যাতে সেগুলো না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকব। কারণ এটা ফাইনাল।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘যারা ফাইনাল খেলে দুই দলেরই দৃষ্টি থাকে শিরোপার দিকে। আমরাও এর ব্যতিক্রম নই। দলে ছোটখাটো ইনজুরি আছে। তবে আশা করছি তাতে ম্যাচে বড় কোন প্রভাব পড়বে না।’ অতীতে তাজিকিস্তানের ঢাকায় এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপের ট্রফি জয়ের স্মৃতি আছে। বাংলাদেশের ভেন্যু তাদের জন্য কতটা পয়মন্ত? ‘২০০৬ সালের সেই শিরোপা জয় ইতিহাস। আশা করব বাংলাদেশের এই ভেন্যু আমাদের জন্য আবারও সৌভাগ্য বয়ে আনবে।’ আলী শেরের জবাব। প্রতিপক্ষ সম্পর্কে আলীর মূল্যায়ন, ‘প্রতিপক্ষকে অবশ্যই সম্মান দেখাতে হবে। কোন দুর্বল দলই ফাইনাল পর্যন্ত আসতে পারে না।’ ফিলিস্তিনের কোচ নূরউদ্দিন কী বলেন? ‘ফাইনালে আমরা কাপ জিতব ইনশাল্লাহ। ২৬ ঘণ্টা সময় পেয়েছি ফাইনালের জন্য। তাজিকিস্তান অবশ্য একদিন বেশি সময় পেয়েছে। সেটা অবশ্যই বাড়তি এ্যাডভান্টেজ তাদের জন্য। শুক্রবারের ম্যাচ কঠিন হবে। তাজিকিস্তান বাংলাদেশ থেকে শ্রেয়তর দল। শারীরিকভাবে এগিয়ে। কক্সবাজারে মাঠের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। এখানে ঢাকার ভেন্যুটা অনেক ভাল মনে হচ্ছে। আশাকরি এখন দল ভাল খেলবে।’ কক্সবাজারের সেমিতে ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ভাল খেলেও হারে বাংলাদেশ। ওই ম্যাচের পর ফিলিস্তিন কোচ প্রশংসায় ভাসিয়েছিলেন বাংলাদেশকে। অথচ ফাইনালের আগে বদলে গেল তার সেই সুর! ফাইনালের আগে তার দাবি, ফিলিস্তিনের চেয়ে বাংলাদেশ সবদিক থেকেই নাকি পিছিয়ে ছিল, ‘আমি বলব আমরা বাংলাদেশের চেয়ে সবদিক থেকে এগিয়ে ছিলাম, টেকনিক্যালি কিংবা ট্যাকটিক্যালি। আমরা বাংলাদেশের খেলার ধরন সম্পর্কে অবগত ছিলাম। জানতাম স্বাগতিকদের দু’জন স্ট্রাইকার (জীবন ও সুফিল) আছে, কিন্তু তাদের বেশ ভালভাবে আমরা রুখে দিয়েছি। আসলে দু’জন স্ট্রাইকার আমাদের চার ডিফেন্ডারের বিপক্ষে কিছুই করতে পারেনি।’ হেড টু হেড লড়াইয়ে দু’দল এ পর্যন্ত তিনবার মুখোমুখি হয়েছে। তাতে জয়ের পাল্লা ভারি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ফিলিস্তিনের। তারা জিতেছে ১টি ম্যাচে। মধ্য এশিয়ার দেশ তাজিকিস্তানের কোন জয় নেই। বাকি দুটি ম্যাচ ড্র হয়। গোলের ব্যবধানেও এগিয়ে রয়েছে ফিলিস্তিন। তাদের ৬ গোলের বিপরীতে তাজিকিস্তান করেছে ৪ গোল। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়েও এগিয়ে ফিলিস্তিন। তাদের র‌্যাঙ্কিং ১০০। আর তাজিকিস্তানের ১২০। শিরোপা সংখ্যায়ও এগিয়ে ফিলিস্তিন। তারা এ পর্যন্ত জিতেছে এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপ আর নাগমা কাপ ট্রফি। আর তাজিকরা জিতেছে ১টি, এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপ। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের পঞ্চম আসরে দু’দলই খেলেছে প্রথমবারের মতো। তাজিকরা তাদের প্রথম ম্যাচে নেপালকে ২-০ গোলে হারিয়ে শুভসূচনা করলেও পরের একই ব্যবধানে হেরে হোঁচট খায় ফিলিস্তিনের কাছে হেরে। গ্রুপ রানার্সআপ (‘এ’ গ্রুপ) হয়ে তারা পা রাখে শেষ চারে। সেখানে ফিলিপিন্সকে ২-০ গোলে হারিয়ে নিশ্চিত করে ফাইনালে খেলা। পক্ষান্তরে তাজিকিস্তানকে ২-০ গোলে হারিয়ে যাত্রা শুরু করা ফিলিস্তিন দল পরের ম্যাচেও জয়ের ধারা অব্যাহত রাখে গত আসরের চ্যাম্পিয়ন নেপালকে ১-০ গোলে হারিয়ে। গ্রুপসেরা হয়ে নাম লেখায় সেমিফাইনালে। সেখানে তারা ২-০ গোলে স্বাগতিক বাংলাদেশকে হারিয়ে পা রাখে স্বপ্নের ফাইনালে। এখন দেখার বিষয় আজ ফাইনালে জিতে এই আসরের নতুন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে কোন্ দল।
×