ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নিখোঁজ সাংবাদিকের বিষয়ে মুখ খুললেন ট্রাম্প

সৌদি আরবকে জবাব দিতে হবে

প্রকাশিত: ০৭:১১, ১২ অক্টোবর ২০১৮

সৌদি আরবকে জবাব দিতে হবে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেছেন, নিখোঁজ সাংবাদিক ও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী জামাল খাশাগজির ব্যাপারে সৌদি আরবকে জবাব দিতে হবে। পরে ফক্স নিউজ এ্যাট নাইট অনুষ্ঠানকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, যদি সৌদিরা কোনভাবে বিষয়টির সঙ্গে জড়িত বলে প্রমাণিত হয় তবে তা কারও জন্যই ভাল হবে না। এএফপি। ২ অক্টোবর ওয়াশিংটন পোস্টের কনট্রিবিউটর খাশাগজি নিখোঁজ হওয়ার পর এই প্রথম ট্রাম্প প্রশাসন তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করল; যা প্রাথমিকভাবে একটি সামান্য প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র শিল্পের প্রধান ক্রেতা ও ঘনিষ্ঠ মিত্র সৌদি আরব। ট্রাম্প বলেন, তিনি সৌদি আরবের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে একের অধিকবার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। আমরা সবকিছু দাবি করছি। আমরা সাংবাদিকদের পক্ষে আছি। কি ঘটছে তা দেখে আমরা খুবই ক্ষুব্ধ। আমরা এটি পছন্দ করি না। আমরা চাচ্ছি, এর মূলে কি রয়েছে তা জানতে। ২২ সিনেটর ট্রাম্পের কাছে লেখা এক চিঠিতে গ্লোবাল ম্যাগনিস্কি হিউম্যান রাইটস এ্যাকাউন্ট্যাবিলিটি এ্যাক্টের অধীনে দায়বদ্ধতা নিয়ে কথা বলতে আহ্বান জানান। এজন্য প্রেসিডেন্ট কোন তদন্তের নির্দেশ বা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত কিনা তা নির্ধারণে তাগিদ দেন। সিনেটররা বলেন, সন্দেহজনক বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-, নির্যাতন বা মুক্তচিন্তার চর্চায় নিয়োজিত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানবাধিকারের মতো অন্যতম গুরুতর লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে আইনটি প্রয়োগ করা যায়। ফক্স চ্যানেলের সাক্ষাতকারে কংগ্রেসের সিনেটরদের পরামর্শ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয় যে, সৌদির বিরুদ্ধে অস্ত্র কেনায় কোন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে কিনা জবাবে তিনি বলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত মার্কিন অর্থনীতির ওপর আঘাত হানবে। সত্যি বলতে কি, আমি মনে করি যে এটি আমার দেশের জন্য খুব, খুব খারাপ কাজ হবে। ট্রাম্প আরও বলেন, তিনি হোয়াইট হাউসে খাশাগজির বাগদত্তা হাতিসি সেনগিজের সঙ্গে সাক্ষাত করার জন্য মুখিয়ে আছেন। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারা স্যান্ডার্স বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ও ট্রাম্পের উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার গত দুদিন বিষয়টি নিয়ে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে কথা বলেছেন। বোল্টন, কুশনার ও পম্পেও তাদের ফোন কলে সৌদি সরকারের কাছে বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান ও তদন্ত প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা রাখার কথা বলেন। তুর্কী কর্মকর্তাদের সন্দেহ, ইস্তানবুলে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর খাশাগজিকে হত্যা করা হয়েছে। যদিও বিষয়টি সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিত নয়। যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছায় নির্বাসিত হওয়া ব্যক্তি ও বাদশাহ সালমান ও তার ছেলে যুবরাজ মোহাম্মদের কঠোর সমালোচক খাশাগজির ইস্তানবুল কনস্যুলেটে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে হত্যা করতে সৌদি সরকার ১৫ জনের একটি দলকে রিয়াদ থেকে ইস্তানবুলে পাঠিয়েছে। তবে ওয়াশিংটন পোস্ট বুধবার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যে, যুবরাজ বিন সালমানের নির্দেশে খাশাগজিকে লক্ষ্য করে অভিযানটি পরিচালিত হয়েছে। সৌদি কর্মকর্তারা জানতে পেরেছে যে, খাশাগজি যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় থাকেন। পরে তাকে আটকে রাখা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে সৌদি আরবের গোয়েন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা জানাজানির পর মানবাধিকার ও সাংবাদিকদের গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে।
×