ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শাহাব উদ্দিন মাহমুদ

এলএনজি টার্মিনাল শিল্প সম্ভাবনার স্বপ্ন দুয়ার

প্রকাশিত: ০৬:০১, ১২ অক্টোবর ২০১৮

এলএনজি টার্মিনাল শিল্প সম্ভাবনার স্বপ্ন দুয়ার

৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগে প্রতিষ্ঠিত আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বয়স ৪৭ বছর অতিক্রম করছে। বহু উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ যেন সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। চীন এবং প্রতিবেশী ভারত, পাকিস্তান প্রভৃতি দেশ থেকে বেশকিছু সামাজিক অর্থনৈতিক সূচকে বাংলাদেশ আজ এগিয়ে। বর্তমান বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে ‘উন্নয়ন ভিশন’ নিয়ে সামনে এগোচ্ছে। উন্নয়ন ভাবনা থেকে উচ্চারিত ২০২১ এবং ২০৪১ সালের রূপকল্প অর্জনের মধ্য দিয়ে এ দেশ তার স্বপ্নপূরণ করবে। মানুষের মাঝে আশার সঞ্চার হয়েছে, এ আশাবাদকে বাস্তব রূপ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বেশকিছু অগ্রাধিকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব পরবর্তী জ্বালানি সঙ্কট নিরসনে সারাদেশে এলএনজি টার্মিনাল, বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপন শেখ হাসিনার বিশেষ অগ্রাধিকার প্রকল্প। গ্যাস-বিদ্যুত সঙ্কটের কারণে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে শিল্প-বাণিজ্য খাতে স্থবিরতা নেমে এসেছিল এবং দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ ব্যাহত হচ্ছিল। দেশের শিল্পায়নের চরম সঙ্কটে সরকার বিদেশ থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করে গ্যাসের চাহিদা মেটানোর পরিকল্পনা নেন। মহেশখালীর মাতারবাড়িতে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে চট্টগ্রামে গ্যাসের চাহিদা পূরণের উদ্যোগ নেয়া হয়। এবং এরই মাধ্যমে এলএনজি যুগে বাংলাদেশের নতুন পথ চলার শুরু। ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল গ্যাস সঙ্কট মোকাবিলার লক্ষ্যে ২০১০ সালে সরকার এলএনজি আমদানির উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। ৩১ মার্চ ২০১৬, মহেশখালীতে দেশের প্রথম ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণে বহুজাতিক কম্পানি এস্ট্রা অয়েল এ্যান্ড এক্সিলারেট এনার্জি বাংলাদেশ লিমিটেডের সঙ্গে ‘টার্মিনাল ইউজ এগ্রিমেন্ট’ ও ২০১৪ সালের ২৬ জুন এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ চুক্তিতে অনুস্বাক্ষর করেছিল পেট্রোবাংলা। সমুদ্রে ভাসমান জাহাজ থেকে স্থলভাগে পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস আনা হবে। চুক্তি অনুযায়ী বাণিজ্যিকভাবে এ টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরুর পর ১৫ বছর তা অব্যাহত থাকবে। টার্মিনাল নির্মাণ, গ্যাসের হুইলিং ও অন্যান্য খরচ হিসেবে এক্সিলারেট এনার্জিকে প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাসের জন্য পরিশোধ করতে হবে ৫৯ সেন্ট। ২৪ এপ্রিল ২০১৮ মহেশখালীর অদূরে বঙ্গোপসাগরের সোনাদিয়া দ্বীপের জিরো পয়েন্টে নোঙ্গর করেছিল এলএনজি বোঝাই ভাসমান টার্মিনাল ‘এক্সিলারেট’ ও ৫টি পোর্ট সার্ভিস ভেসেল। সার্ভিস ভেসেলগুলোর মধ্যে একটি ব্যবহৃত হবে টার্মিনালের জ্বালানি পরিবহনে এবং অপর একটি টার্মিনালে নিয়োজিতদের আনা-নেয়া এবং তাদের রসদ সরবরাহে নিয়োজিত থাকবে। অপর ৩টি টাগবোট থাকবে ভাসমান টার্মিনালের সঙ্গে। এগুলোই ভাসিয়ে রাখবে টার্মিনালকে। ভাসমান টার্মিনালটি আসার সময় কাতার থেকে এলএনজির প্রথম চালানটি নিয়ে এসেছে। বাংলাদেশ সরকার ও কাতার সরকারের মধ্যে বছরে ২.৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন এলএনজি সরবরাহের চুক্তি রয়েছে। এর উদ্বোধনী চালানটি নিয়ে মহেশখালীর কাছে বঙ্গোপসাগরে নোঙ্গর করেছিল এক্সিলারেট। সেখান থেকে আগস্টের ২য় সপ্তাহে পরীক্ষামূলকভাবে আনোয়ারা পর্যন্ত এবং গত ১৮ আগস্ট ২০১৮ ইং ২.৪০ ঘটিকায় পাইপ লাইনের মাধ্যমে চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। পরবর্তীতে প্রতিমাসে এলএনজি নিয়ে জাহাজ এসে টার্মিনালে খালাস করে ফিরে যাবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এক্সিলারেট এনার্জির সঙ্গে এ ব্যাপারে ১৫ বছরের চুক্তি রয়েছে তাদের। দৈনিক ৫ কোটি ঘনফুট এলএনজি সরবরাহের ক্ষমতাসম্পন্ন এই টার্মিনাল তৈরিতে ব্যয় হয়েছে ১৫৬ কোটি মার্কিন ডলার। চট্টগ্রামে নতুন শিল্প কারখানা স্থাপন ও বিদ্যমান কারখানা সম্প্রসারণ বন্ধ ছিল প্রায় একযুগ ধরে শুধু গ্যাস সঙ্কটে। এ অবস্থায় এলএনজি আমদানি করে সরবরাহের সরকারী সিদ্ধান্তে শিল্প কারখানা মালিক ও উদ্যোক্তারা আশান্বিত হয়েছেন, অবশেষে তাদের অপেক্ষায় প্রহর শেষ হলো। প্রাকৃতিক গ্যাস সাধারণ চাপ ও তাপমাত্রায় গ্যাসীয় অবস্থায় থাকে। শীতলকরণ (রেফ্রিজারেশন) প্রযুক্তির মাধ্যমে তাপমাত্রা কমিয়ে আনলে তা তরলে পরিণত হয়। এই তরল প্রাকৃতিক গ্যাসই হলো (লিকুফাইড ন্যাচারাল গ্যাস) এলএনজি। যখন তরল করা হয় তখন আয়তন কমে যায় প্রায় ৬০০ গুণ। অর্থাৎ ৬০০ লিটার গ্যাস এলএনজিতে রূপান্তরিত করার পর তা এক লিটারের বোতলে ভরা যায়। এ কারণে জাহাজে এলএনজি পরিবহন বেশ সুবিধার। প্রথমবারের মতো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহের কাজ শুরু হয়েছে। আপাতত চট্টগ্রামে এই গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। পাইপ লাইনের কাজসহ সব ধরনের নিরাপত্তা প্রস্তুতি শেষ হলে জাতীয় গ্রিডেও সরবরাহ শুরু হবে এলএনজি। এই গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করতে আনোয়ারা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার ৪২ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপলাইন স্থাপনের কাজ চলছে। পাইপ লাইনের মধ্যে কর্ণফুলী নদী রয়েছে এ নদীর নিচ দিয়ে রিভার ক্রসিং করতে হবে। নদী অতিক্রম করার ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হওয়ায় জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহে দেরি হচ্ছে। চট্টগ্রামের রিং মেইন পাইপলাইনের মাধ্যমে আপাতত এই গ্যাস সরবরাহ শুরু করা হয়েছে। এই পাইপলাইনের ক্ষমতা সর্বোচ্চ ৩৫০ মিলিয়ন ঘনফুট। এর চেয়ে বেশি গ্যাস সরবরাহ করা এই পাইপলাইন দিয়ে সম্ভব হবে না। এর মাধ্যমে এলএনজি যুগে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রবেশ করল বাংলাদেশ। আপাতত প্রতিদিন ৭৫ মিলিয়ন ঘনফুট করে এলএনজি সরবরাহ করা হচ্ছে। নতুন প্রযুক্তি হওয়াতে ধীরে ধীরে সবরবাহ বাড়ানো হবে। একটি জাহাজে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই হাজার মিলিয়ন বা ২০০ থেকে ২৫০ কোটি ঘনফুট এলএনজি আনা সম্ভব। এই তরল গ্যাস আবার স্বাভাবিক গ্যাসে পরিণত করতে এলএনজি টার্মিনালের সঙ্গে রি-গ্যাসিফিকেশন ইউনিট স্থাপন করেছে এক্সিলারেট। এই রি-গ্যাসিফিকেশন ইউনিটের মাধ্যমেই তরল গ্যাসকে স্বাভাবিক গ্যাসে পরিণত করে তা পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা হচ্ছে। সঙ্কট কাটাতে আনোয়ারা থেকে শিকলবাহা বিদ্যুত কেন্দ্র এবং সিইউএফএল ও কাফকো সার কারখানার জন্য সরাসরি পাইপলাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামে গ্যাস আনতে মহেশখালী-আনোয়ারা পর্যন্ত ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের ৯১ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে দেশে দৈনিক ৩৬০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ করা হচ্ছে ২৭৫ কোটি ঘনফুট। অর্থাৎ দৈনিক ৮৫ কোটি ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি রয়েছে। এ সঙ্কট ক্রমেই বাড়ছে। আর এই ঘাটতি দূর করতে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। কাতারের রাসগ্যাস বছরে ২৫ লাখ টন এলএনজি সরবরাহ করার বিষয়ে পেট্রোবাংলার সঙ্গে চুক্তি সই করেছে। পাশাপাশি ওমান থেকে এলএনজি আমদানির জন্য ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনালের (ওটিআই) সঙ্গে ১০ বছর মেয়াদী চুক্তি প্রক্রিয়াধীন। এলএনজি আমদানির জন্য কাতার এবং সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে জিটুজি চুক্তি হয়েছে। মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গেও জিটুজি ভিত্তিতে এলএনজি আনতে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকটি দেশের ২৬টি কোম্পানির কাছ থেকে স্পট মার্কেটিং ভিত্তিতে খোলাবাজার থেকে এলএনজি কেনার পরিকল্পনা রয়েছে। এক্সিলারেট এনার্জি ছাড়াও দেশীয় সামিট এলএনজি টার্মিনাল কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের মাধ্যমে চলতি বছরের মধ্যে আরও ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হবে জাতীয় গ্রিডে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ তাদের এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ সম্পন্ন হলে ডিসেম্বর নাগাদ আমদানি শুরুর কথা রয়েছে। সেইসঙ্গে সামিট ও এক্সিলারেট এনার্জি ছাড়াও ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এই তিন বছরে আরও তিনটি বিদেশী কোম্পানির এলএনজি কমিশনিং করার কথা রয়েছে। ২০১৯ সালের জুনে রিলায়েন্স ৫০০ এমএমসিএফডি, ২০২০ সালের জুনে হংকং সাংহাই মানজালা ৫০০ এমএমসিএফডি এলএনজি কমিশনিং করবে। কাফকো এবং সিইউএফএলের জেটি ব্যবহার করে দুটি ক্ষুদ্রাকৃতি এফএসআরইউ স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ ছাড়াও স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের জন্য পেট্রোনেট, ইন্ডিয়া, এইচওসি চায়না, সেম্বগ্রুপ সিঙ্গাপুর, পায়রা ও মহেশখালীতে মোট ৫টি স্থানে টার্মিনাল করার জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। জাতীয় গ্রিডে এলএনজি যুক্ত হওয়ার পর ২ হাজার ৩৯০টি শিল্প-কারখানায় গ্যাসের সংযোগ দেয়া সম্ভব হবে। সরকার ধাপে ধাপে এসব সংযোগ প্রদান করবে। জাইকার সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে প্রথম এ এলএনজি টার্মিনাল চালু হওয়ায় চাহিদার ১৭ শতাংশ পূরণ হবে। ২০২৩ সাল নাগাদ জাতীয় গ্রিডে মোট গ্যাসের ৪০ শতাংশ, ২০২৮ সালে ৫০ শতাংশ ও ২০৪১ সালে ৭০ শতাংশ এলএনজি থেকে সরবরাহ করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এই মুহূর্তে দেশীয় প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন ও আমদানিকৃত এলএনজি দিয়ে প্রাথমিকভাবে শিল্প প্রতিষ্ঠানে গ্যাস সংযোগ প্রদান করা হবে। চলতি বছরের চাহিদা মোতাবেক গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হলে দেশে নতুন করে প্রায় ১০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে যা জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে সরাসরি ভূমিকা রাখবে। বঙ্গোপসাগর উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার পাহাড়-সমতলে নয়ন জুড়ানো দ্বীপ জনপদ মহেশখালী। তারই একটি উপদ্বীপ মাতারবাড়ী। পর্যটন শহর কক্সবাজারের অদূরে মাতারবাড়ীসহ সমগ্র মহেশখালী দ্বীপকে ঘিরে দেশী ও বিদেশী বিনিয়োগে বিভিন্ন প্রকল্প আর মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এগিয়ে চলেছে। এর ফলে আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরের মধ্যেই কক্সবাজারের চেহারা পাল্টে যাবে। পরিবেশ ও ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য, পশ্চাদভূমি হিসেবে সুযোগ-সুবিধা থাকায় মাতারবাড়ী এলাকায় ধাপে ধাপে গড়ে তোলা হচ্ছে জ্বালানি তেল টার্মিনাল, কয়লাভিত্তিক সর্বাধুনিক প্রযুক্তির তাপবিদ্যুত মেগাপ্রকল্প এবং গভীর সমুদ্রবন্দর। এছাড়া গড়ে তোলা হবে অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং পর্যটন জোনসহ দৃষ্টিনন্দন উপশহর। মাতারবাড়ীর মেগাপ্রকল্পের মূল অবকাঠামো নির্মাণে সহায়তা করছে জাপান। ‘বাংলাদেশ-জাপান কম্প্রিহেনসিভ পার্টনারশিপ’ সমঝোতার আওতায় এ উন্নয়ন অভিযাত্রা। প্রকল্প-মহাপ্রকল্পের পেছনে আগামী ১০ বছরে অন্তত আড়াই লাখ কোটি টাকা বিনিয়োগের ব্যাপারে আশাবাদী সরকার। আর তা বাস্তবায়িত হলে লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের পথ খুলে যাবে। সমগ্র কক্সবাজার ও দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসীর জীবনযাত্রা বদলে যাবে। সরকারের এতসব উন্নয়ন অগ্রযাত্রার মাঝেও রাজধানী থেকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত ‘কিছু অপরাজনীতিবিদদের’ এক ধরনের দাপট এবং দৌরাত্ম্য কখনও কখনও দেশের বিভিন্ন এলাকার পরিবেশ-পরিস্থিতিকে অশান্ত করে স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার যাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করে তুলছে। ঢাকা চট্টগ্রামসহ দেশের বড় শহরগুলোতে বসবাসকারী মানুষ তাদের দৈনন্দিন যাতায়াত ব্যবস্থা, গ্যাস, পানি, পরিবেশ প্রভৃতি ক্ষেত্রে যেসব বিশৃঙ্খলা তা নিয়ে স্বস্তিতে নেই। শহর-গ্রাম নির্বিশেষে প্রায় সব জায়গায় যথাযথ নাগরিক সুবিধার ঘাটতি, জবরদখল, উন্নয়নে আঞ্চলিক বৈষম্যের কারণে সরকারের অর্জনগুলো যেন ম্লান হয়ে যেতে দেখা যায়। ক্ষমতাবানরা বিভিন্নভাবে এসবের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের আস্থাহীনতা তৈরি হয়। আর তখনই সরকারের আশাজাগানিয়া প্রচেষ্টাগুলো জনগণের কাছে ধূসর বর্ণ ধারণ করে। সবাইকে মনে রাখতে হবে বাঙালীর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার সুযোগ সবসময় আসবে না। সম্মিলিতভাবে এ ধরনের পরিস্থিতি ও প্রবণতা থেকে বেরিয়ে এসে বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ এবং সময় এখনই। লেখক : শিক্ষাবিদ ও গবেষক [email protected]
×