ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদের জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন

প্রকাশিত: ০৬:০২, ১১ অক্টোবর ২০১৮

আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদের জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রাচীন পুঁথি সংগ্রহ ও সাহিত্যের ঐতিহ্য অন্বেষণকারী এক বিরল ব্যক্তিত্ব আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ। বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান এই গবেষকের ১৪৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে একক বক্তৃতানুষ্ঠান হয় বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে বুধবার সকালে। বাংলা একাডেমি আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ‘মুসলিম বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস নির্মাণে সাহিত্যবিশারদের ভূমিকা’ শীর্ষক একক বক্তৃতা করেন ড. তারিক মনজুর। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি, জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। একক বক্তৃতায় ড. তারিক মনজুর বলেন, রক্ষণশীল সামাজিক পরিবেশের সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ তার একজীবনের শ্রম ও সাধনায় বিপুলসংখ্যক পুঁথি সংগ্রহ করেছেন, পাঠোদ্ধার সম্পন্ন করেছেন। তার আবিষ্কৃত পুঁথিসমূহকে সঙ্গত কারণেই ‘মধ্যযুগের মুসলিম বাংলা সাহিত্যে প্রবেশপথের প্রদীপ’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। বৈজ্ঞানিক উপায়ে পুঁথি সংরক্ষণেও সাহিত্যবিশারদের অবদান অবিস্মরণীয়। সংগ্রহকর্মকে সাহিত্যের বহমান ধারার সঙ্গে যুক্ত করতে তিনি পুঁথির যথাযথ ব্যাখ্যা-ভূমিকা-টীকাভাষ্য প্রদানের মধ্য দিয়ে পুঁথির পরিচিতি নির্মাণ করেছেন। আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ যেমন ইসলামাবাদ নামক গ্রন্থের মাধ্যমে আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চায় তার সাফল্যের পরিচয় রেখেছেন, তেমনি সাহিত্য সম্পর্কিত প্রবন্ধগুচ্ছ ধারণ করেছে তার স্বতন্ত্র চিন্তাপদ্ধতির ধারাক্রম। গবেষণার জন্য তিনি নিজ জীবনে স্বল্পে সন্তুষ্ট থেকেছেন কিন্তু বাংলা সাহিত্যের জন্য রেখে গেছেন তার অমূল্য দান। সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, দীর্ঘ ছয় দশকের সাধনায় আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ আড়াই হাজারের মতো পুঁথি সংগ্রহ করেন। তার সংগৃহীত পুঁথির মাধ্যমে হিন্দু-মুসলিম উভয় কবির বিরল সৃষ্টি আমাদের সামনে উপস্থাপিত হয় এবং বিশেষভাবে বাংলা সাহিত্যে মুসলিম অবদানের বিষয়টি স্পষ্ট হয়। পরবর্তীকালে যারাই বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস রচনা করেছেন তাদের গবেষণায় সাহিত্যবিশারদের সংগৃহীত ও ব্যাখ্যাকৃত পুঁথি বিশেষ সহায়তায় এসেছে। বাংলা একাডেমির ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনের স্বাগত বক্তব্যের মধ্যদিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। স্বাগত ভাষণে মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, বাংলা পুঁথির স্বকীয় আবেদন সৃষ্টিতে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসবের ষষ্ঠ সন্ধ্যায় তিন নাটক মঞ্চস্থ ॥ রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে চলছে ‘গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব ২০১৮।’ সপ্তমবারের মতো এ উৎসবের আয়োজন করেছে গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব পর্ষদ। বুধবার ছিল উৎসবের ষষ্ঠ দিন। এদিন সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হয় তিনটি নাটক। একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে ঢাকা থিয়েটারের ‘ধাবমান’, এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্রের ‘চম্পাবতী’ ও স্টুডিও থিয়েটার হলে নাট্যযোদ্ধার নাটক ‘অসমাপ্ত’। নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের লেখা ‘ধাবমান’ নাটকটি শিমুল ইউসুফ নির্দেশিত প্রথম নাটক। নাটকটি শুধু সংলাপ-নির্ভর নয়। সঙ্গীত ও নৃত্যের মাধ্যমে নাটকের কাহিনী ও মূল বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। বৃহত্তর ময়মনসিংহের বিরিশিরি দুর্গাপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল, সোমেশ্বরী নদী এ আখ্যানের পটভূমি। বাঙালী (নগদি) এবং গারো এই দুই জাতির প্রান্তিক মানুষদের জীবন নিয়েই এই নাটক। রাজনৈতিক ও সামাজিক নানা টানাপোড়েন, দুই জাতির দ্বন্দ্ব ও সহাবস্থান, পারস্পরিক সহমর্মিতা ইত্যাদি বিষয় এ নাটকে উঠে এসেছে। নাটকে অভিনয় করেছেন শিমুল ইউসুফ, শহিদুজ্জামান সেলিম, নাসরিন নাহার, চন্দন চৌধুরী, রোজী সিদ্দিকী, এশা ইউসুফ, নার্গিস আক্তার প্রমুখ। পল্লীকবি জসীমউদ্দিনের ‘বেদের মেয়ে’ অবলম্বনে ‘চম্পাবতী’ নাটকটি লিখেছেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক। নির্দেশনা দিয়েছেন খোরশেদুল আলম। নাটকের নামচরিত্রে অভিনয় করেন মেহেরুণ মাহিন। এছাড়া বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন আল আমিন, রওশন জান্নাত রুশনী, আলী নূর, হৃদী, আনোয়ার, নাসরিন, তাহা, উনাইসা, লিন্ডা, এঞ্জেলিকা, স্বাধীন, আলফা, বর্ষা, দোয়েল, রাজা ও অপরাজিতা। আলোক পরিকল্পনা করেছেন ঠান্ডু রায়হান, মঞ্চ পরিকল্পনায় পলাশ হেনড্রী সেন, পোশাক পরিকল্পনায় আইরিন পারভীন লোপা, আবহ সঙ্গীতে শিশির রহমান এবং কোরিওগ্রাফিতে সামিউন জাহান দোলা ও রূপসজ্জায় ছিলেন তন্ময়। নাট্যযোদ্ধার ১৪তম প্রযোজনা ‘অসমাপ্ত’। ফয়সাল আহমেদ রচিত এই নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন জয়নাল আবেদীন জয়।
×